সানোয়ার হাসান সুনু :: জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-সিলেট সড়ক জরুরিভাবে অস্থায়ী  মেরামতের জন্য বরাদ্দকৃত ১৩ লাখ টাকা লুটপাটের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। গত জুন মাসের মধ্যে মেরামত কাজ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় টাকা লুটপাট হতে পারে জানিয়েছেন অনেকে। দীর্ঘদিন ধরে বেহাল এই সড়কটি বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় রির্পোট প্রকাশ করা হলে জরুরি মেরামতের জন্য জুন মাসে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। গত জুন মাসের মধ্যে জরুরি মেরামত কাজ শেষ না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।  শনিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ সড়কের জগন্নাথপুর অংশের মিরপুরের মেঘাকালি সেতুর মুখ, মীরপুর বাজার এলাকা, রতিয়ারপাড়া, ইসহাকপুর, ভবেরবাজার, হাসপাতাল পয়েন্টস্থ হামজা কমিউনিটি সেন্টারের সামন, বটেরতলা এলাকাসহ সড়কের অধিকাংশের স্থানে পিচ উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ছোট বড় অসংখ্য  গর্ত আর খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে একাকার হয়ে গেছে। এরমধ্যে মেঘাকালি সেতুর মোড়ের একটি গর্তে পড়ে একটি ট্রাক আটকে থাকতে দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন প্রায় প্রতিদিনই ওই স্থানসহ সড়কের বিভিন্নস্থানে ট্রাকসহ ভারি যানবাহন আটকে যানচলাচলে বিঘিœত হয়। এলাকাবাসী ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ সড়কের জগন্নাথপুরের ১৩ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের জন্য পৌনে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলে সুনামগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নূরা এন্টারপ্রাইজ সড়কে নামমাত্র কাজ করে মোটা অংকের টাকা লুটপাট করে। ঐ সময়ে সড়কটি নির্মাণের চার মাসের মাথায় ভেঙে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। এক বছর যেতে না যেতেই ওই সড়কে ভাঙ্গন দেখা দিলে ২০১৮ সালে আবারো ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। নামমাত্র কাজ করে বরাদ্দকৃত টাকার অধিকাংশ টাকাই হাওয়া হয়ে যায়। চলতি বছর সড়কের বেহালদশা দেখা দিলে মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সড়কে অস্থায়ী মেরামতের জন্য ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। কাজ পায় সুনামগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রেনু এন্টারপ্রাইজ। ঈদুল ফিতরের আগে সড়কের হামজা কমিউনিটি সেন্টারে সামনের সামান্য অংশ মেরামত করা হয়। ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও গতকাল ৬ জুলাই পর্যন্ত সড়কের কোথাও অস্থায়ী মেরামতের কাজ হয়নি। এবারের বরাদ্দকৃত টাকাও কাজ না করে লুটপাটের আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ছিক্কা গ্রামের বাসিন্দা সমাজকর্মী এনামুল হক এনাম বলেন, ঈদের আগের দিন আমাদের হামজা কমিউনিটি এলাকায় সামান্য বালি আর ইটের সুরকি দিয়ে কাজ করা হলেও সড়কের অন্য কোথাও কাজ হয়নি। আমরা আশা করেছিলাম বরাদ্দকৃত ১৩ লাখ টাকার জরুরি মেরামত কাজ হবে কিন্তু ৩০ জুন চলে গেলেও কাজের কোন খবর নেই। আশিঘর এলাকার বাসিন্দা জাহেদ আহমদ বলেন, অস্থায়ী মেরামতের কাজেও অর্থ আত্মসাতের প্রচেষ্টা চলছে। এ সড়কে জনগনের দুর্ভোগ লাঘবে সংস্কার কাজের জন্য সরকার অর্থ দিলেও বার বার  ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টরা  লুট করে নিচ্ছে। শনিবার এবিষয়ে জানতে স্থানীয় সরকার জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ারের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি জানান, কাজ শুরু করলেও শেষ হয়নি। এ মাসেই আমরা কাজ শেষ করতে ঠিকাদারকে নোটিশ দেব। ঠিকাদার রেনু মিয়ার সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, গত ঈদের আগে আমি কিছু কাজ করেছিলাম। কোন বিল না পাওয়ায় পরে আর কাজ করতে পারিনি। তবে কয়েক দিনের মধ্যে আবার কাজ শুরু করবো।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn