জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ত্রাণ পাঠানোর পাশাপাশি জবির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ তহবিল তোলার কাজও করা হবে। এক কথায় জবির যুগপূর্তির উৎসব হবে মানবতার সেবার মধ্য দিয়ে।বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারের কক্ষে জবি থেকে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ পাঠানো নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জবি উপাচার্য এসব কথা বলেন।অাগামী ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদালয়ের (জবি) প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও এক যুগ পূর্তি হবে। দিবসটিকে তাৎপর্যময় করে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মায়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ১০০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ দেবার ঘোষণা দিয়েছে। অাগামী সপ্তাহে প্রায় দশ লক্ষ টাকার ত্রাণ জবি প্রশাসন কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে পৌছে দেবে।সংবাদ সম্মেলনে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্কট বাংলাদেশের নয়, রোহিঙ্গা সঙ্কট মায়ানমারের। বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়েছা। মায়ানমারকেই এর সমাধান করতে হবে। বাংলাদেশ মানবতার দিকে তাকিেয় মায়ানমারের সরকারের অকথ্য নির্যাতনেরর শিকার রোহিঙ্গাদের অাশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশের একাত্তরের মত ২৫ অাগস্ট থেকে অারকানে গণহত্যা চালাচ্ছে মায়ানমার সরকার। নির্যাতন সইতে না পেরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে অাশ্রয় নিয়েছে।

জবি উপাচার্য বলেন, রোহিঙ্গারা পালিয়ে কক্সবাজার এসে মানবেতর জীবর যাপন করছে। এ অসহায় রোহিঙ্গাদের পােশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাঁড়িয়েছেন। অামরাও মানবতার ডাকে তাদের পাশে দাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছি। বিভিন্ন বিভাগ থেকে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ পাঠানোর জন্য ৪লক্ষ ৩৪হাজার ৯৮ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এ টাকা দিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী কেনা হয়েছে।তিনি বলেন, অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর বেড়িয়েছে জবির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও যুগপূর্তির উৎসব পালন না করে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দেবে জবি প্রশাসন। খবরটি সত্য,নয়। বিগত বছরগুলোতে, বণার্ঢ র্যালি, বেলুন পায়রা উড়ানো, সাংস্কৃতিক অঅনুষ্ঠান যেভাবে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করা হয়ে অাসছে এবারও তাই হবে। শুধু মাত্র দিবসটি উপলক্ষে যে অালোক সজ্জা ও বাইরের শিল্পীদের ভাড়া করে যে কনসার্ট করা হত এবার তা বাতিল করা হয়েছে। শিল্পী ও অালোক সজ্জার জন্য যে ব্যয় হয় তা না করে তার অর্থ রোহিঙ্গাদের ত্রাণে বরাদ্দ করা হয়েছে। তাই বলে কনসার্ট, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে না এমনও নয়। এবার জবির সংগীত বিভাগের শিল্পীদের দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হবে। কারণ বিভাগটিতে অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ভাল অার্টিস্ট। তারা দেশের সব জায়গায় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। সব জায়গায় জবির সংগীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সুনাম রয়েছে।

কক্সবাজারে অাশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের বার্ডেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক ড.মীজানুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ষোল কোটি খাওয়াতে পারলে দশজন লোকও খাওয়াতে পারব। যা বিশ্ব মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ইতিমধ্যে বলেছেন, বাঙালী হৃদয়ের বিশলতা দেখতে হলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে হবে।  অামাদের উদ্যোগের চেয়ে ভাল অাইডিয়া থাকলে জানাতে পারেন সে অনুযায়ী অামরা রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করব।তিনি বলেন, অনেকে বলেন রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী। কিন্তু সন্ত্রাসী সব না। গতকাল পর্যন্ত রিপোর্ট অাছে মা বাবা নেই ৩০০০জনের শিশুদের তালিকা প্রনয়ণ করা হয়েছে। যাদের পিতা কেউ নেই। অভাবে পড়ে এদের মধ্য কিছু সন্ত্রাসী হয়ে যাবে। তবে তাই বলে তো তাদের অাশ্রয় দিতে সমস্যা নেই।সংবাদ সম্মেলনে জবি ট্র্রেজারার অধ্যাপক সেলিম ভুইয়া বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করত গিয়ে সবার সহযোগীতা পেয়েছি। রোহিঙ্গাদের মাঝে ষোলটি ত্রাণের উপকরণ একটি ব্যাগে করে পাঠানো হবে। অালোক সজ্জা ও বাইরের শিল্পীদের খরচ বিগত বছরগুলোতে গড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এ অর্থ ত্রাণ পৌছানো ও বিতরণের কাজে ব্যয় করা হবে। এসময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যপাক ড. অাব্দুল অাল বাকী, সহ-সভাপতি সহযোগী অধাপক অাব্দুল অাল মাসুদ, জবি রেজিস্ট্রার ইঞ্জিনিয়ার ওহিদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn