জামালগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২৮
জামালগঞ্জ উপজেলায় দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (০২ জুন) বিকালে জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের স্কুল মাঠের জি.সি.সি. রাস্তায় অপু মিয়া, লাইম মিয়া ও সদর ইউপির সাবেক মেম্বার কামরুল ইসলামের লোকজনের সাথে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। জানা যায়- হালির হাওরের ছাতিধরা গ্রুপ জলমহালে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে এই সংঘর্ষ বাধে। বিগত দিনে ছাতিধরা জলমহাল উপজেলা চেয়ারম্যানের নিয়ন্ত্রনাধীন গ্রুপে দীর্ঘ দিন যাবৎ ইজারাপ্রাপ্ত হয়ে মৎস্য চাষ ও আহরণ করে আসছেন। বিগত কিছু দিন পূর্বে ইনছানপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ বিজ্ঞ মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ৬ বছরের জন্য বন্ধোবস্তপ্রাপ্ত হয়ে মাছের পোনা ছেড়ে অবমুক্ত করে পাহারাদার নিযুক্ত করে মাছ ফলানোর জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। অপর পক্ষে অপু মিয়া ও লাইম মিয়া গ্রুপের নেতৃতে গত ৩১ মে শনিবার ছাতিধরা বিলে মাছ মারতে গেলে বন্ধোবস্তপ্রাপ্ত সদর ইউপির সাবেক মেম্বার কামরুল ইসলাম সমর্থিত সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবরের লোকেরা বাধা দিলে গত রবিবার ভাসান পানিতে মাছ ধরার দাবীতে বন্ধোবস্তপ্রাপ্ত লোকদের বিরুদ্ধে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দাখিল করে। এই ঘটনার জের ধরে গতকাল উভয় পক্ষে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে লক্ষীপুর স্কুল মাঠে সংঘর্ষ বাধে।
সংঘর্ষে কামরুল ইসলামের পক্ষে আহতরা হচ্ছে, মাজির হোসেন (৩৫), দবীর হোসেন (৩৪), মুজিব হোসেন, (২২), রেনু মিয়া (৬০), আমিরুল ইসলাম (৪০), কয়েল মিয়া (৩০), ছাব্বির আলম (২৫), আয়না মিয়া (৩২), জুলহাস উদ্দিন (৩৮), এমারুল হক (৪২), কালা মিয়া (২২), শফিক মিয়া (৪৫), লিয়াকত আলী (২৮), আনারুল হক (৪৮), জাহিদুল ইসলাম (১৮), সোহাগ মিয়া (১৭), কামিল হোসেন (২৮), শাকিল হোসেন (২৮), সেজাব হোসেন (২৩), সাকিরা বেগম (৪০), আলেমা খাতুন (৭৫), ফরিদা বেগম (৩৫) এর মধ্যে প্রথম ১০ জন গুরুতর আহতদের কে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ ও অন্যরা জামালগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে করা হয়েছে। অপু মিয়া ও লাইম মিয়া গ্রুপের পক্ষে, গোলাম মৌলা (৩০), লাফু মিয়া (৩০), রুহাত হোসেন (১৮), রতন মিয়া (৩০), মো. রুমেল মিয়া (২৪), শুভ মিয়া (১৬) আহত হয়। আহতরা জামালগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
ইনছানপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর বলেন- ২৫ বছর যাবৎ ঝুনু মিয়া ছাতিধরা বিল আইন্যা একটা ইছা মাছ মারবার লাগিও কেউরে দেয় নাই। আর আমরা এহন বিল পাওনে তাইন ভাসান পানির নেতা সাইজ্জা তার লোকজন দিয়া আমাদের বিলে অন্যায়ভাবে মাছ মারার চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে সদর ইউপির সাবেক মেম্বার কামরুল ইসলাম বলেন- ছাতিধরা বিল না পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুল আলম ঝুনু সাহেব অপু মিয়া ও লাইম মিয়াকে দিয়ে গ্রামের লোকজনকে লেলিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় সংঘর্ষে সূত্রপাত ঘটে। আমাদেরকে আপোষের কথা বলে হঠাৎ এলোপাতারি মারামারি করে মহিলা সহ ২২ জন লোককে আহত করে।
জামালগঞ্জ সদর ইউপির চেয়ারম্যান সাজ্জাদ মাহমুদ তালুকদার বলেন, আমি সুনামগঞ্জে ছিলাম, ঘটনা শুনেছি, এই ঘটনার আপোষে মিমাংসা হয়েছে বলে জানি, আমি অপু মিয়া ও লাইম মিয়া কে কোন প্রকার মারামারি না করা জন্য বলেছি।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসেম বলেন, সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে আমি ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহতদের চিকিৎসার সময়ে জামালগঞ্জ হাসপাতালে উত্তেজনা দেখা দিলে রুবেল মিয়া, শহিদুল, সোফায়েল আহমদ, শুভ হাসান, রুহাত হোসেন, রুমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এখনো কোন পক্ষের অভিযোগ পাইনি পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।