জামায়াতকে এনজিও বলছে যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২০১৭ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার এক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনে জামায়াতে ইসলামীকে ‘এনজিও’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশটির ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন সুলিভান প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। ৪২ বছরের প্রথা অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এ প্রতিবেদন করা হয়। প্রতিবেদনে জামায়াতে ইসলামীকে ‘এনজিও’হিসেবে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘একসময়ের রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী এনজিও হিসেবে ঘরোয়া বৈঠকের অনুমতি চেয়েও পায়নি।’ এছাড়া প্রতিবেদনে বাংলাদেশে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু এবং ক্ষেত্রবিশেষে সংবাদমাধ্যমের প্রতি সরকারের ‘নেতিবাচক আচরণের’ বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকার বাংলাদেশের আইনে থাকলেও তা সীমিত করেছে সরকার। অনুমতি নিয়ে সভা-সমাবেশ করতে হচ্ছে।’ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রিন্ট ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম খুবই সরব এবং তাদের মতামত নিঃসংকোচে প্রকাশ করতে পারলেও যেসব সংবাদমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করে তাদের নেতিবাচক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়।’ বিচার বিভাগ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আইনে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকলেও দুর্নীতি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে তা কার্যকর হচ্ছে না।’ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের প্রসঙ্গও তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, ‘২০১৭ সালের শেষ দিকে সরকার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলতে থাকে- যা রাজনৈতিক অভিসন্ধিপূর্ণ বলে অভিযোগ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।’ মানবাধিকারকর্মীদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, ‘বিচারক, সরকারি কৌঁসুলি ও আদালতের কর্মকর্তারা অনেক আসামির কাছে ঘুষ দাবি করেন। এবং যারা ঘুষ চাইছেন তাদের প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘মানবাধিকার সংস্থা আসকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর অধিকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে শুরু থেকে ছয় মাসের মধ্যে আটক ৬ জনকে হত্যা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’