কোনো দিন বিদেশে চিকিৎসা করাননি জানিয়ে ভবিষ্যতেও দেশের বাইরে চিকিৎসা না করানোর ইচ্ছার কথা সংসদকে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। বলেছেন, যদি মরেন, তাহলে এই দেশের ওষুধ খেয়েই মরবেন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সম্পুরক বাজেটের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে এ কথা বলেন মতিয়া চৌধুরী। দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি অর্থমন্ত্রীর কাছে আরও  বেশি বরাদ্দ চাইতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানান। মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘এলাকার মানুষ ঢাকায় আসে দুটি বিষয়ের জন্য। এক চাকরি, দুই চিকিৎসার জন্য। আমার এলাকার লোক খুব একটা হাইফাই লাইফে অভ্যস্ত না, বাংলাদেশের সাধারণ আর ১০টা কৃষক বা সাধারণ মানুষ, যাকে বলে মধ্যবিত্ত। এদের পক্ষে কথায় কথায় সিঙ্গাপুর যাওয়া সম্ভব না। এদের পক্ষে কথায় কথায় ব্যাংকক যাওয়া সম্ভব না। তাদেরকে এই দেশেই চিকিৎসা নিতে হবে।’ এই প্রসঙ্গে নিজের চিকিৎসার কথাও উল্লেখ করেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি বিদেশে চিকিৎসা করিওনি কোনো দিন, করানোর ইচ্ছাও নাই। মরলেও এই দেশের ওষুধ খেয়ে মরব, আর আয়ু যদি বৃদ্ধি হয়, এই দেশের ওষুধ খেয়েই হবে। এটাই আমার কথা।’ মতিয়া বলেন, ‘আমি জেলে থেকে হসপিটালে এসেছি, বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তি হয়েছি। রোগী হিসেবে ঢাকা মেডিকেলে জেনারেল ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছি।…একই সঙ্গে আমার প্রয়াত স্বামী যখন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন, আমি কিন্তু হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে গেছি। সঙ্গে সঙ্গে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যাই নাই।’

‘কথাগুলা নিজের ঢোল পেটানোর জন্য বলছি না’- উল্লেখ করে মতিয়া বলেন, ‘সেখানকার অবস্থাগুলো আমি জানি।… এখানকার চিকিৎসা মোটামুটি সামসম্মত, কিন্তু দেখা যায় ডিটেইল আউট  যখন করা যায়, সেইখানে আমাদের অনেক ঘাটতি আছে। এই ঘাটতিগুলো পূরণ করার জন্য যখন সেবা বিভাগ যদি টাকা বরাদ্দ চায়, আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও অন্যরা কেন আমাদের অর্থমন্ত্রীকে কেন নির্দেশ দেবেন না বা একমত  হবেন না?’। বর্তমান সরকারের আমলে চিকিৎসা খাতে বেশ উন্নতি হয়েছে দাবি করে মতিয়া বলেন, ‘আমরা অনেকেই হয়ত সেই খবরই রাখি না। আজকে নিউরো ডিপার্টমেন্ট, আজকে অনেকগুলো নতুন বিশেষায়িত কয়েকটি চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে। এগুলো আগে বাংলাদেশে ছিল না।’ কৃষিমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বেগম জিয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন, সেগুলো প্রধানমন্ত্রী বহু কষ্টে চালু করেছেন। তিনি বলেন, কেবল কমিউনিটি ক্লিনিক করলে হবে না, মানুষের বিজ্ঞান মনস্কতাও থাকতে হবে। মানুষ যদি বিজ্ঞান মনস্ক না হয়, কে যাবে চিকিৎসা নিতে? সুতরাং আমাদের জীবনের প্রতিটি পড়তে পড়তে বিজ্ঞানের ব্যবহারকে উৎসাহিত করার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে টেনে তুলে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn