ঝড়ে লন্ডবন্ড জেলার বিভিন্ন অঞ্চল
তাহিরপুরে কাল বৈশাখী ঝড়ে লন্ডবন্ড
তাহিরপুর উপজেলায় কাল বৈশাখী ঝড়ে লন্ডব- হয়ে গেছে। উপজেলার জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক কাচাঁ বাড়ি,সমজিদ ও বিভিন্ন স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের কবলে পড়ে আহত হয়েছে প্রায় ২০জন। ঝড়ে প্রায় ২০লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়,গত রবিবার রাত সাড়ে ১১টায় উপজেলায় উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আধাঘন্টা ব্যাপী কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলা সদর,পৈন্ডুব,সাহেব নগড়,কান্ডবপুর,মন্দিয়াতা.রামজীবনপুর,দপেরকান্দা গ্রাম সহ ১২টি গ্রামের অসহায় মানুষের কাচাঁ বসত বাড়ি,গাছ-পালা,বিভিন্ন স্থাপনা,বিদ্যুাতের লাইনের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও রাতে বিভিন্ন হাওরে স্থানীয় জেলেরা হাওরে ১৫টি ছোট নৌকা,১৫হ্যাজ্যাক লাইট,জেনারেটর দিয়ে চিংড়ি মাছ ধরছিল। হঠ্যাৎ ঝড় শুরু হয়ে মাছ ধরার সরঞ্জাম হাওরে ফেলে কোন রকমে প্রান নিয়ে তীরে এসে জীবন বাচাঁয়। ঝড়ের পর ১৫টি ছোট নৌকা,১৫হ্যাজ্যাক লাইট,জেনারেটর আর খোঁেজ পাওয়া যায় নি। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার পরিদর্শন করেছে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগন। এছাড়াও সুনামগঞ্জ জেলার সদর উপজেলা,জামালগঞ্জ,ধর্মপাশা,দোয়ারা বাজার,ছাতক সহ ১১টি উপজেলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান,আমার উপজেলার ১২টি গ্রামে গত রবিবার রাতে বয়ে যাওয়া প্রচন্ড ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন আমাকে জানিয়েছে। সবার খোঁজ কবর নিয়েছি ক্ষতিগ্রস্থদের প্রয়োজনীয় সহযোগীতার ব্যবস্থা করা হবে। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান,গত রবিবার রাতে ঝড়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের উপযুক্ত সহযোগীতা করা হবে।
আহত ২০ঃ প্রচন্ড ঘুর্ণিঝড়ে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত
ছাতকে পাহাড়ি ঢল ও আগাম বন্যায় ধান, মাছ, হাঁস, গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষতি সাধনের রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি ঘুর্ণিঝড়ের মতো মহাবিপর্যয়ের সম্মূখিন হতে হয়েছে লোকজনকে। এখানে স্মরকালের ভয়াবহও দীর্ঘস্থায়ী ঘুর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে ১০সহ¯্রাধিক বসত-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্টান, গাছ-পালা ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। ফলে মরার উপর খাড়ার ঘাঁর ন্যায় এক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার আগেই আরেক বিপর্যয়ের মূখে পড়েছেন উপজেলাবাসি। এতে মহিলাসহ আহত হয়েছেন প্রায় ২০ব্যক্তি। জানা যায়, রোববার (৩০এপ্রিল) রাত ১১টা থেকে উপজেলার ১৩ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার উপর দিয়ে শুরু হয় প্রচন্ড বেগে ঘুর্ণিঝড়। একটানা ঘুর্ণিঝড় চলে রাত ১২টার রও। রাত ১০টা থেকে আকাশে ছিল প্রচন্ড গর্জন। এসময় ঘুর্ণিঝড়ের শাঁ শাঁ শব্দে উপজেলার ৮৪হাজার ৪শ’ ৩০পরিবারের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসব পরিবারের কাঁচা, সেমি পাকা ঘরবাড়ি ও বিল্ডিং মালিকদের গাছ-পালাসহ তাদের কাঁচা ঘরের ব্যাপক ক্ষতি করে। ইউপি চেয়ারম্যানদের হিসেব মতে ঘুর্ণিঝড়ে প্রায় সহ¯্রাধিক বাড়ি-ঘর একেবারে বিধ্বস্ত ও আংশিক ক্ষতি করেছে আরো প্রায় ৯হাজার পবিারের। পৌরসভার প্যানেল মেয়র তাপস চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান অদুদ আলম, দেওয়ান পীর আবদুল খালিক রাজা, আখলাকুর রহমান, মাষ্টার আওলাদ হোসেন, মাষ্টার আবুল হাসনাত, আবদুল মছব্বির, সাহাব উদ্দিন মো. সাহেল, সাইফুল ইসলামসহ অনেকে জানান, দোকানপাটসহ প্রতি ইউনিয়নে শতাধিক ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও আরো ৪থেকে ৫শ’ করে ঘরবাড়ির আংশিক ক্ষতি করে। এছাড়া ঘুর্ণিঝড়ে উপজেলায় অর্ধলক্ষাধিক গাছ-পালা বিধ্বস্ত করেছে। চেয়ারম্যানরা বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ২০জন লোক আহত হয়েছে বলে দাবি করেন। ইউপি চেয়ারম্যান শায়স্তা মিয়া ধ্বিস্ত ঘরের নীচে পড়ে মঈনপুরের আলী নূরের মায়ের একটি হাত ও আলী আসকন নামের অপর ব্যক্তি আহত হয়েছে বলে জানিয়ে বলেন, মঈনপুর বাজারের ব্যবসায়ি রিয়াজুলের দোকানের টিনের চাল উড়িয়ে নেয়ায় ৪/৫লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছ। তিনি ইউনিয়নের ৪হাজার গাছ-পালা উপড়ে ফেলেছে বলেও দাবি করেন। এব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউ রহমান চৌধুর বকুলসহ ইউপি চেয়ারম্যানরা ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাছির উল্লাহ খান বলেন, প্রতি ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকার করা হচ্ছে। অসহায়দের সাহায্যে সরকার এগিয়ে আসবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড জগন্নাথপুর, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
জগন্নাথপুরে আবারো কাল বৈশাখি ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় দুই শতাধিক দোকানপাট ও ঘরবাড়ি ল-ভন্ড হয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। রোববার রাত ১১ টার দিকে জগন্নাথপুরের উপর দিয়ে প্রচন্ড গতিতে কালবৈশাখি ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। প্রায় দুই ঘন্টা ব্যাপী থেমে থেমে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে দোকানপাটসহ প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ল-ভন্ড হয়ে যায় বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ক্ষতিগ্রস্তরা জানান। এর মধ্যে শুধু জগন্নাথপুর সদর বাজারে প্রায় অর্ধশতাধিক আধাপাকা ও কাচা টিনসেড দোকানঘর বিধ্বস্ত হয়ে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গোদাম ঘরের টিনের ছাদ উড়ে গিয়ে প্রায় ৪ হাজার ব্যাগ সিমেন্ট ভিজে পাথর হয়ে যাওয়াসহ কমপক্ষে ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে বাজারের ব্যবসায়ী জামাল মিয়া তালুকদার জানান।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আরো প্রায় দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্তসহ গাছপালা ভেঙে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে জগন্নাথপুর-রাণীগঞ্জ লাইনের ৩৩ হাজার কেভি বিদ্যুতের খুঁটি নিয়ে লাইনের তার ছিড়ে মাটিতে পড়ে যায়। যে কারণে রাণীগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া উপজেলার আরো বিভিন্ন লাইনের ১০ টি খুঁটি উপড়ে ও ভেঙে পড়েছে বলে জগন্নাথপুর বিদ্যুৎ অফিসের হাবিবুর রহমান জানান।