গোটা ম্যাচেই চলল স্পেনের দাপট। বল দখল কিংবা অ্যাটাক, সব দিক থেকেই এগিয়ে ছিল স্প্যানিয়ার্ডরা। এরই মাঝে দারুণ কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ইতালিকে এগিয়ে নেন ফেদেরিকো কিয়েসা। ম্যাচের যখন বাকি মাত্র দশ মিনিট, স্পেনের ত্রাতা হয়ে ওঠলেন আলভারো মোরাতা। স্পেনের নাম্বার সেভেনের গোলেই ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। তবে যে ম্যাচে নায়ক হওয়ার কথা ছিল মোরাতার, টাইব্রেকারে ব্যর্থ শটে খলনায়ক বনে গেলেন তিনি। পেনাল্টি শুট আউটে ৪-২ গোলের জয়ে দীর্ঘ ৯ বছর পর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছালো ইতালি। স্পেনের সঙ্গে ইতালির হিসেবটা বেশ পুরনো। ২০০৬ সালে বিশ্বকাপ জয় করে দলটি।
সেবারই শেষ হাসি হাসে বিশ্বজয়ী আজ্জুরিরা। এরপর ইউরোর টানা দুই আসরের নকআউট পর্ব থেকে স্পেনের কাছেই হেরে বিদায় নিতে হয় তাদের। ২০০৮ ইউরোতে কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে হেওে বাদ পড়ে ইতালি। এর চার বছর পর আবারও ইউরোয় দেখা হয় দুই দলের। এবার ফাইনালের মঞ্চে। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে রীতিমত বিধ্বস্ত হয় ইতালি। স্পেনের কাছে ৪-০ গোলে হারের যন্ত্রণায় পুড়ে জিয়ানলুইগি বুফনের দল। ২০১৬ ইউরোয় অবশ্য স্পেনের বিপক্ষে জয় পায় ইতালি। শেষ ষোলোর লড়াইয়ে ২-০ গোলের জয় পায় দলটি। আবারও স্প্যানিশদের কাঁদালো আজ্জুরিরা।
মঙ্গলবার রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালের ম্যাচজুড়েই ছিল স্প্যানিশদের আধিপত্য। শুরু কিছুটা গতিময় ফুটবল খেললেও চিরাচরিত টিকিটাকা ফুটবলই খেলতে দেখা যায় স্পেনকে। গোটা ম্যাচে ৭১ শতাংশ বল দখলে রেখেছে লুইস এনরিকের দল। গোলবারের উদ্দেশ্যে ১৬টি শট নেয় স্পেন, যার ৫টি লক্ষ্যে ছিল। ৯০৮টি পাসে ম্যাচটি খেলে স্পেন। অপরদিকে মাত্র ২৯ শতাংশ বল দখলে রেখে ৭টি শটের ৪টি লক্ষ্যে রাখে ইতালি।
প্রথমার্ধে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে ম্যাচ চললেও ডিফেন্সে গিয়ে নষ্ট হচ্ছিলো দু’দলেরই আক্রমণ। দ্বিতীয়ার্ধে দ্বিগুণ ধার দেখা যায় দল দু’টোর খেলায়। বল পজেশনে স্পেন এগিয়ে থাকলেও গতিময় কাউন্টার অ্যাটাকে ৬০তম মিনিটে এগিয়ে যায় ইতালি। এসময় সতীর্থের পাস থেকে ডিফেন্সচেড়া শটে লক্ষ্যভেদ করেন জুভেন্টাস তারকা ফেদেরিকো কিয়েসা। তবে দমে যায়নি স্পেনও। ৮০ মিনিটে দুই ডিফেন্ডারের পাশ কাটিয়ে দারুণ শটে ম্যাচে সমতা ফেরান আলভারো মোরাতা।
নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়েও নিষ্পত্তি না হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে প্রথম শটেই লোকাতেল্লিকে ঝাপিয়ে ঠেকান স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমন। তবে পেনাল্টি ফেরানোর আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি স্প্যানিশদের। গোলবারের উপর দিয়ে শট করে হতাশ করেন দানি ওলমো। পরের দুটি শট থেকেই গোল আসে দু’দলের। ম্যাচ ২-২ সমতায় থাকাবস্থায় শট করেন ফেদেরিকো বার্নারদেস্কি। জুভেন্টাস তারকা গোল পেলেও ফিরতি শটে ব্যর্থ হন মোরাতা। স্প্যানিশ স্ট্রাইকারের দুর্বল শট সহজেই ফিরিয়ে দেন জিয়ানলুইগি দনারুমা। পরের শটে জর্জিনহো লক্ষ্যভেদ করলে আনন্দে মেতে ওঠে ইতালি। ফাইনালে পৌঁছার আনন্দে কেঁদেও ফেলেন ম্যানেজার রবার্তো মানচিনি।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১১৪ বার