তাহিরপুর সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাটে হবে ‘স্বাধীনতা উপত্যকা’
তাহিরপুর সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প এলাকার পরিত্যক্ত সরকারি ভূমিকে ‘স্বাধীনতা উপত্যকা’য় রুপ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ’এর যুদ্ধকালীন স্মৃতিসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ সংক্রান্ত একটি পত্র পাঠিয়েছেন।একই ভাবে টেকেরঘাট খনিপ্রকল্প এলাকার প্রায় ৬ একর কৃষি জমি ২৪ জন বন্দোবস্তধারী কৃষি জমি হিসাবে বন্দোবস্ত নিয়ে ব্যবসায়িক কাজে (কয়লার ডিপো) ব্যবহার করায় তাঁদের বন্দোবস্ত বাতিল করে পরিত্যাক্ত খণি প্রকল্প এলাকার দরিদ্র – মধ্যবিত্তদের জন্য আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলারও সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
তাহিরপুর সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট এলাকায় বারেকটিলা, শহীদ সিরাজী লেক, টাঙ্গুয়া হাওর পাশাপাশি হওয়ায় এখানে ‘স্বাধীনতা উপত্যকা’ বাস্তাবায়ন হলে পর্যটকদের বেশী সমাগম ঘটবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।বর্তমানে পরিত্যাক্ত দেশের একমাত্র চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পটি ১৯৬৬ সালে ট্যাকেরঘাটে স্থাপিত হয়। এ প্রকল্পের চুনাপাথর আসাম-বাংলা ছাতক সিমেন্ট কোম্পানিতে সিমেন্ট উৎপাদিত হতো। যা এখন বন্ধ রয়েছে। ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্পের মোট আয়তন ১৬২.৯৪ একর। খনিপ্রকল্প এলাকায় মোট ৫-টি চুনাপাথর কোয়ারী রয়েছে। ১৯৮০ সালের পর এ প্রতিষ্ঠানটি ক্রমেই লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ১৯৯৬ সালে খনিজ প্রকল্পটির উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ করে ভারত হতে চুনাপাথর আমদানী করে এটিকে আমদানি কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হয়। ২০০৭ সাল পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠাটি লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে ২০০৭ সালের শেষ দিকে এ খনিপ্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে খনিজ প্রকল্পের প্রয়োজনীয় যন্ত্র সামগ্রী এখনও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যা দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়ত শত শত পর্যটক এখানে ভিড় করেন।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত ট্যাকেরঘাট পরিত্যক্ত খনি প্রকল্প এলাকায় শহীদ সিরাজ লেক ও ডিসি পার্কের সমন্বয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমৃদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ লাইব্রেরী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কবরস্থানকে সংরক্ষণ করে পর্যটন এলাকা হিসাবে গড়ে তোলা হবে এবং নামকরণ করা হবে ‘স্বাধীনতা উপত্যকা’। তিনি জানান, টাঙ্গুয়ার হাওরের নিকটবর্তী হওয়ায় জীব-বৈচিত্রের সমন্বয় করে প্রকৃতির উপর কোন আঘাত যাতে ঘটে সে বিষয়ে লক্ষ্য রেখেই এই স্পটটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হবে।