তিন ছেলে পুলিশ কর্মকর্তা: মায়ের হাতে ভিক্ষার থালা!
জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলায় দু-মুঠো খাবারের সন্ধানে পাড়ায় পাড়ায় ভিক্ষা করছেন ৩ পুলিশ কর্মকর্তার মা মোছা. মনোয়ারা বেগম(৭০)। তিনি বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের মৃত আয়ুব আলী সরদারের স্ত্রী। আয়ুব আলী মারা গেলেও রেখে গেছেন স্ত্রীসহ ৬ সন্তান। ৫ ছেলের মধ্যে ৩ জন পুলিশে চাকরি করেন। অন্য দুই সন্তানের একজন ব্যবসা করেন ও অপরজন ইজি বাইক ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এক মেয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। অথচ তাদের গর্ভধারিনী মা দু-মুঠো খাবারের সন্ধানে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করেন।বর্তমানে ভিক্ষা করাও বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ ৪-৫ মাস পূর্বে ভিক্ষা করতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে কোমরের হাড় ভেঙে গেছে তার। তাই বর্তমানে দু’বেলা ভাতও জুটছে না তার ভাগ্যে।
জানা গেছে, মৃত আয়ুব আলী সরদার সাধারণ কৃষক পরিবারের সন্তান ছিলেন। অভাব অনটনের সংসার হলেও ৬ সন্তান নিয়ে সুখেই দিন কাটছিলো আয়ুব আলী ও মনোয়ারা দম্পতির। অভাবের সংসারেও ৬ সন্তানকে কমবেশি শিক্ষিত করে গড়ে তুলেছেন তারা। ২০০৪ সালের ১ অক্টোবর আয়ুব আলী সরদার মৃত্যুবরণ করেন। স্বামীর চির বিদায়ের সাথে সাথে মনোয়ারা বেগমের সুখের দিনও বিদায় হয়ে যায়। শুরু হয় কষ্টের জীবন। আজ ৩ পুলিশ কর্মকর্তার মা’কে দু-মুঠো খাবারের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় ভিক্ষার জন্য।
বর্তমানে সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম বয়সের ভারে স্বাভাবিক অবস্থায় হারিয়ে এখন হাঁটতে পর্যন্ত পারছেন না। একটি ঝুপড়ি ঘরে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি।ছেলে ইজি বাইক চালক গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমি সামান্য আয়ের মানুষ। কোনো রকমে বেঁচে আছি। তারপরও আমার সাধ্যমতো মাকে চিকিৎসা দেবার চেষ্টা করছি। কিন্তু মায়ের দরকার ভালো মানের চিকিৎসা। আমার তিন ভাই পুলিশ অফিসার। তারা তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যত্র থাকেন। কিন্তু মায়ের কোনো খোঁজ খবর নিচ্ছেন না।তবে বড় ছেলে পুলিশের এস আই ফারুখ হোসেন বলেন, আমার মাকে আমরা অনেক বার চিকিৎসা করিয়েছি। তার কাগজ পত্র আমার কাছে আছে। বর্তমানে মা বেশি অসুস্থ। তাকে উন্নতমানের চিকিৎসা দেয়া দরকার। কিন্তু আমরা দুই ভাই মিলে মা’কে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন বাধা দেয় এবং আমাদের ফিরে আসতে বাধ্য করে।সূত্র:আরটিএনএন