দায়িত্ব পালনে চেষ্টায় ত্রুটি ছিল না-জাকির
এস এম জাকির হোসাইন-
২০১৫ সালের এই দিন। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব এসেছিল কাঁধে। ছাত্রলীগের ‘সাধারণ সম্পাদক’ কেবলই একটি পদ নয়, এটি জাতির জনকের রেখে যাওয়া আমানত। প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে আপনারা সেই আমানত রক্ষার দায়িত্ব আমায় দিয়েছিলেন। একজন ক্ষুদ্র জাকির হোসাইনের জন্য এই পবিত্র দায়িত্বভার বহন করা মোটেই সহজ ছিল না। বঙ্গবন্ধু তনয়া সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনার সময়োপযোগী দিকনির্দেশনা ও আপনাদের সহযোগিতার কারণেই সেটি সম্ভব হয়েছে।
সময় বয়ে যায়। রয়ে যায় কেবল কর্ম। দায়িত্ব গ্রহণের পর আমাদেরও দুটি বছর পার হয়ে গেছে। দীর্ঘ এ যাত্রায় বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া আমার প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে শক্তিশালী করতে প্রানান্তকর প্রচেষ্টায় কমতি ছিল না কখনই। সবসময় হয়ত পেরে উঠিনি।
দায়িত্ব নিয়ে ‘ছাত্রলীগের প্রাণ’ তৃণমূলে সবচেয়ে বেশি নজর দিয়েছি। তৃণমূল সংগঠনকে শক্তিশালী করতে উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটি গঠনে সর্বদা তৎপর থাকতে চেষ্টা করেছি। আপনাদের সহযোগিতার ফলে রাজশাহী বিভাগের ৫০টি উপজেলা, রংপুর বিভাগের ৩৫টি উপজেলা, খুলনা বিভাগের ৪৫টি উপজেলা, চট্টগ্রাম বিভাগের ৩৫টি উপজেলা, ঢাকা বিভাগের ৬৩টি উপজেলা, সিলেট বিভাগের ৪৪টি উপজেলা এবং বরিশাল বিভাগের ১৫টি উপজেলায় ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা এবং জেলা শাখার মর্যাদাসম্পন্ন প্রায় অর্ধশত ইউনিটে দেয়া হয়েছে নতুন কমিটি।
নিয়মিত সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের বাইরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি এবং খেলাধুলার মতো জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিতে মনযোগ দেয়ার চেষ্টা করেছি। বিগত দুই বছরে আয়োজন করা হয়েছে তিন শতাধিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। গড়ে তোলা হয়েছে ‘মাতৃভূমি সাংস্কৃতিক সংসদ’।
দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশে উত্তরাঞ্চল ও সিলেট অঞ্চলে বন্যাদূর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি আমরা। রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে আহতদের চিকিৎসায় ছিল আমাদের ২৫ সদস্যের মেডিকেল টিম। তিনটি মেডিকেল টিম কাজ করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত কক্সবাজারে। এভাবে প্রাণপ্রিয় নেত্রীর ভিশন ও মিশন বাস্তবায়নে ছিলাম বদ্ধপরিকর। তবুও বলব না- আমি পেরেছি। আজ মূল্যায়নের দায়িত্ব আপনাদের হাতে। ভালো কিছু করলে উৎসাহ দিবেন, আর ভুল-ত্রুটি পেলে ধরিয়ে দেবেন- এটাই প্রত্যাশা।
তবে পবিত্র এ দায়িত্ব পালনে চেষ্টায় কোনো ত্রুটি ছিল না- একথা বলতে আজ দ্বিধা নেই। আর এই যাত্রায় প্রেরণা ছিলেন আপনারা। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মী যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছেন- তা কখনোই ভুলবার নয়। অনেক ভালোবাসি আপনাদের। শত কষ্টের মাঝেও আপনাদের পাশে পেলে সব দুঃখ ভুলে যাই। নতুন করে পথ চলার অনুপ্রেরণা পাই। পাশে থাকবেন, পাশে রাখবেন। জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করবেন। তাহলেই ভালো থাকবে প্রিয় বাংলাদেশ।
জয় বাংলা।
জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ