দিরাই-শাল্লাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানালেন জয়া সেন
দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় অকাল বন্যায় একে একে সবকটি হাওরের ফসলী জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দুই উপজেলায় ৫৫ হাজার ৮০০ হেক্টর ফসলী জমি তলিয়ে গিয়ে এ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পারিমান ৬শ’ কোটি টাকা বলে জানায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষিঅধিদপ্তর। তবে কৃষকদের উদ্ধৃতি দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানগন জানিয়েছেন- ক্ষয়ক্ষতির পরিমান হাজার কোটি টাকার ছাড়িয়ে যাবে। চৈত্রমাসে অকাল বন্যায় ফসলহানি অতীতের সকল দুর্যোগকে ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ দুর্যোগ মোকাবেলায় শনিবার উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে এক জরুরী সভার আহবান করা হয়। দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং ইউএনও তৌহিদুজ্জামান পাবেলের পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নবনির্বাচিত দিরাই-শাল্লার সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্তা।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পৌর মেয়র মোশাররফ মিয়া, শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমবিল্লাহ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অবনি মোহন দাস, দিরাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাপ মিয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছবি চৌধুরী, এডিশনাল এসপি (দিরাই সার্কেল) বেলায়েত হোসেন সিকদার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুল হাই, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাভোকেট সোহেল আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক অভিরাম তালুকদার, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়সহ দিরাই ও শাল্লা উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন্ দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী বৃন্দসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যবৃন্দ।
উপস্থিত বক্তারা দিরাই-শাল্লাসহ সুনামগঞ্জ জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়ে বলেন- পাউবো’র মাঠ প্রকৌশলী, টিকাদার ও পিআইসিদের অবহেলা ও দুর্নীতির কারণেই সবকটি হাওর অকালে তলিয়ে কৃষকরা আজ নি:স্ব। এর পরিত্রান চেয়ে সঠিক মনিটরিং সেল গঠন এবং যে সব বাধে সময়মত সঠিকভাবে কাজ করা হয়নি, তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের পদ্ধতি চালু করতে হবে।
বক্তারা বলেন, ভাটির একমাত্র ফসলী জমি হারিয়ে হাওরপাড়ে চলছে কৃষকদের হাহাকার। এ দুর্যোগ মুহুর্তে কৃষকদের পাশে দাড়াতে হবে। কৃষকদের সহায়তায় সরকারের বিভিন্ন সাহায্য বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষিঋন মওকুফ, স্বল্প সুদে কৃষকদের ঋনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান। প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিলার নিয়োগ করে খোলা বাজারে চাল বিক্রি, কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করার জোর দাবি জানানে হয়। উপস্থিত বক্তাদের অভিমত, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাগরের তলদেশ ভরাট হয়ে নদ নদীও ভরাট হচ্ছে, তাই নদী খনন করতে হবে। হাওর রক্ষায় নতুন কৌশল গ্রহণ করতে হবে। স্থায়ী বাধের ব্যবস্থা করে সুইসগেট নির্মাণ করতে হবে। পাউবোর হাওর রক্ষা বাধের প্রতিটি প্রকল্প কাজে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে মনিটরিং জোরদার করতে হবে। এবার দিরাই-শাল্লায় সরকারের বিশেষ বরাদ্দ বাড়াতে নবনির্বাচিত সাংসদ ড. জয়াসেনর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বক্তারা।
ড. জয়াসেন প্রধান অতিথির বক্তব্য কালে বলেন- আমি দেখেছি হাওরের বাধ রক্ষায় কৃষকরা আন্তরিক চেষ্টা করেছেন। দিরাই-শাল্লার কৃষকদের বাঁচাতে হবে। এ অঞ্চলের কৃষি ও কৃষক বাঁচাতে আমি আপনাদের সকল দাবি দাওয়া নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবো।