দুই ধর্মের তরুণ-তরুণীর প্রেম: অসহায় বাবা-মা
বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ঊর্মিলা রানী সরকার। এ বছর ভালো রেজাল্ট নিয়ে এইচএসসি পাস করেন। প্রিয় এই সন্তানকে নিয়ে বড় আশা ছিল পিতা-মাতার। কিন্তু সেই আশায় গুঁড়েবালি। নিজ ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ছেলের হাত ধরে পালিয়ে যায় ঊর্মিলা। ঊর্মিলার বাবা-মায়ের অভিযোগ- ঘাটাইলের আশকর আলীর ছেলে মো. ছামাদ আলী তার মেয়েকে অপহরণ করে গুম করে রেখেছেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘাটাইলের দিলদারপুর গ্রামের অমল চন্দ্র সরকারের মেয়ে ঊর্মিলা রানী সরকার পাশের গ্রামের আশকর আলীর ছেলে মো. ছামাদ আলীর সঙ্গে পালিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। ১২ দিন পূর্বে ঊর্মিলা অনার্সে ভর্তি হওয়ার জন্য ফরম উঠাতে ধনবাড়ি কলেজের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান।নিকটাত্মীয়সহ ঊর্মিলার বন্ধু-বান্ধবদের কাছে তার সন্ধান মেলেনি। পরদিন বিকালে এম.ডি সামাদ মিয়া সাগর নামে ফেসবুক আইডি থেকে ধর্মান্তরিত হওয়ার হলফ নামাসহ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার প্রমাণপত্র পোস্ট করেন। এ ঘটনায় উপজেলাজুড়ে আলোচনা শুরু হয়। বিষয়টি এলাকার চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যরা গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু গত ৪ই অক্টোবর পর্যন্ত ছেলে-মেয়েকে হাজির ও মীমাংসা করতে পারেনি ইউপি সদস্যদ্বয়। এ বিষয়ে ঊর্মিলার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঊর্মিলাকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি। ওরা আমার মেয়েকে গুম করে রেখেছে নাকি মেরে ফেলেছে কিছুই জানি না। অপরদিকে ছামাদ আলীর মা-বাবা জানান, অভাবের সংসারে অনেক দুঃখ কষ্ট করে সন্তানকে বড় করেছি। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয়ে সংসারের হাল ধরবে এমনটাই চাওয়া ছিল সন্তানের প্রতি। কিন্তু এ বয়সে এসে এমন বদনাম-অপবাদ সইতে হবে চিন্তাও করিনি। দেশের এত মুসলমান মেয়ে থাকতে একটি হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে আমাদের নাক-কান কেটে দিয়েছে এই সন্তান। এটা মেনে নিতে পারছি না। জানা গেছে, ছামাদ-ঊর্মিলা দু’জনেই গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ছোটবেলা থেকেই তারা দু’জনে একই প্রাইমারি স্কুল ও হাইস্কুলে পড়ালেখা করে। একই স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তো ও কোচিং করতো। প্রাইমারিতে পড়ার সময় তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।