দূষণের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ বাংলাদেশ
দূষণের কারণে বিশ্বে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাংলাদেশ ও সোমালিয়া। আর এই কারণে গোটা বিশ্বে প্রতি ৬ জনে ১জন মানুষের মৃত্যু হয় । সবচেয়ে বেশি দূষণ-মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৫ম অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী ভারত। এ ধরনের মৃত্যু সবচেয়ে কম ব্রুনেই ও সুইডেনে। বিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যান্সেটের’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়, দূষণ সংক্রান্ত কারণে মৃত্যুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ও সোমালিয়া। ২০১৫ সালে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ দূষণজনিত কারণে মারা গেছেন।
এদের বেশির ভাগই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর নাগরিক। এই দেশগুলোতে এক চতুর্থাংশ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী দূষণ। সবচেয়ে মারাত্মক হলো বায়ু দূষণ। দূষণের কারণে সংঘটিত মোট মৃত্যুর দুই তৃতীয়াংশই ঘটে বায়ু দূষণের কারণে। এদের বেশির ভাগ মানুষ মারা যায় হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ফুসফুসে ক্যান্সারের মতো অসংক্রামক রোগে। নিউইয়র্কের আইক্যান স্কুল অব মেডিসিনের প্রফেসর ফিলিপ ল্যান্ড্রিগান বলেন, দূষণ পরিবেশগত হুমকির থেকে অনেক বেশি। এটি একটি গভীর ও বিস্তৃত হুমকি যা মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার অনেক দিককে প্রভাবিত করে। সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো বায়ু দূষণ। প্রতি বছর বায়ু দূষণ সংক্রান্ত রোগে ৬৫ লাখ মানুষ স্বাভাবিক সময়ের আগেই মারা যায়। পরবর্তী বিপজ্জনক বিষয় হলো পানি দূষণ। এর কারণে বছরে ১৮ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে পানি দূষণের প্রধান করাণ হলো আর্সেনিক। দেশের প্রায় ৫ কোটি ৭০ লাখ মানুষ যে পানি ব্যবহার করে তাতে আর্সেনিকের মাত্রা ৫০ মাইক্রোগ্রাম। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী সহনীয় মাত্রা হলো ১০ মাইক্রোগ্রাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে দূষণের কারণে বিশ্বে ৮ লাখ মানুষ মারা যায়। দূষণের কারণে মোট মৃত্যুর ৯২ শতাংশই সংঘটিত হয় তুলনামূলক দরিদ্র দেশগুলোতে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে দূষণের কারণে পঞ্চম সর্বোচ্চ মানুষ মারা যায়। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই চীনও। দূষণ সংক্রান্ত মৃত্যুর হারে চীন ১৬তম অবস্থানে রয়েছে। আর যুক্তরাজ্যে ৫০ হাজার মৃত্যুর মধ্যে মাত্র ৮ শতাংশ হয় দূষণ সংক্রান্ত কারণে। ১৮৮টি দেশের ওপর চালানো জরিপে দূষণ সংক্রান্ত মৃত্যু হারের দিক দিয়ে যুক্তরাজ্য ৫৫তম অবস্থানে রয়েছে।