আল হেলাল: সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর সুরমায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর স্থান নির্ধারণের দাবী জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা নিউইয়র্ক আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান শাহী। তিনি বলেন, একজন মন্ত্রী তিনি যেই হউননা কেন তাকে মনে রাখতে হবে তিনি বিশেষ কোনো একটি গ্রামের মন্ত্রী নন। প্রথমে তাঁকে মনে রাখতে হবে তিনি একটি বিশাল নির্বাচনী এলাকার এবং একটি জেলার মন্ত্রী। দ্বিতীয় দফায় মন্ত্রীকে নিজের বিভাগ এবং তৃতীয় দফায় তাকে দেশের মন্ত্রী ভেবে সুষম উন্নয়নে অবদান রাখতে হবে। সকল উন্নয়ন এক জায়গায় না করে সুসম্পন্ন করতে হবে উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ। তিনি বলেন, একজন মন্ত্রীকে এটাও ভাবতে হবে তিনি যেমন দেশের মন্ত্রী তেমনি তিনি দলেরও মন্ত্রী। কারণ দল ক্ষমতায় আছে বলেই তিনি মন্ত্রী হয়েছেন। তাই নিজের গ্রামের ও এলাকার পাশাপাশি অন্যান্য নির্বাচনী এলাকায়ও যাতে দলের অবস্থান সুসংহত থাকে এবং মানুষ যাতে উন্নয়নে বৈষম্যের শিকার না হয়ে উন্নয়নের সঠিক ইনসাফ পায় সেই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল উন্নয়ন শুধু গোপালগঞ্জেই করেননি। বরং তারা উন্নয়ন করেছেন সারা দেশ ও জাতির। আর সুনামগঞ্জকে সবসময়ই গোপালগঞ্জের সাথে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে সকল উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়ে পিছিয়ে পড়া সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবী দীর্ঘ ৫০ বছরের পূর্বের।

১৯৭০ সালে এমএনএ ও এমপিএ নির্বাচন ও ১৯৭৩ সালে স্বাধীন দেশে সর্বপ্রথম সংসদ নির্বাচনে আমি দলীয় প্রচারাভিযান চালিয়েছি। প্রচারণায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছি। এই সময় পর্যবেক্ষণ করেছি আমাদের নৌকার প্রার্থীরা শহর ও শহরতলীতে বিপুল ভোটে হেরে গেছেন কুড়েঘর ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে। কিন্তু বৃহত্তর রঙ্গারচর ইউনিয়নসহ বিশ্বম্ভরপুরের উত্তর সুরমার মানুষ ব্যালটবাক্স ভর্তি করে নৌকার প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে বিপুলভোটে আওয়ামীলীগের বিজয়ে ভূমিকা পালন করেছে। এসব কারণেই আমি কৃতজ্ঞতা হিসেবে উত্তর সুরমায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবী জানাচ্ছি।

এছাড়া উত্তর সুরমায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হলে সীমান্ত এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য শিক্ষার্থীরা সহজেই অবলোকন করতে পারবে এবং ছাতক দোয়ারা ও সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার মানুষও অনেক উপকৃত হবে। তিনি বলেন, উত্তর সুরমা এলাকায়ও সরকারী খাস খতিয়ানের অনেক মূল্যবান জায়গা রয়েছে। বৃটিশ-আসাম আমলে সীমান্ত সংলগ্ন বনগাঁওয়ে সুনামগঞ্জ থানা পুলিশের স্টেশন ছিল। পরবর্তীতে বর্তমান জেলা সদরে থানা স্থানান্তরিত হওয়ায় সেখানকার উন্নয়ন পিছিয়ে পড়েছে। সকলের সদিচ্ছা হলে পিছিয়ে পড়া জনপদ উত্তর সুরমাকে এগিয়ে নেয়া কোন ব্যাপারই না। তাই আমি আবারও দাবী জানাচ্ছি, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জেলা সদরের উত্তরপাড়ে সরকারী খাস খতিয়ানের মৌজায় নামমাত্র মূল্যে অধিগ্রহণ করে উত্তর সুরমাতেই স্থাপন করা হউক। শনিবার রাতে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ অভিমত ব্যক্ত করেন সুনামগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান শাহী। তিনি বলেন, পাকিস্থান আমলে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের উন্নয়নের প্রতি পাক শাসকদের অনিহা ছিলো। আমরা এখন স্বাধীন। পাকিস্থানের মানুসিকতা আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে। পিছিয়ে পড়া সীমান্ত অঞ্চলকে দেশের অন্যান অঞ্চলের সাথে সমতা রেখে উন্নয়ন করতে হবে। বৈষম্য মূলক মনোভাব পরিত্যাগ করে সারা দেয়ের উন্নয়নে  সুষমবন্টন করতে হবে।

তিনি শনিবার সুনামগঞ্জ শহরে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্বান্তকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আনন্দ শোভাযাত্রা করায় জেলা নেতৃবৃন্দকেও স্বাগত জানিয়েছেন। বলেছেন জেলার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এমপি মন্ত্রী যিনিই হউন না কেন জেলা আওয়ামীলীগ যদি সবসময় সোচ্চার থাকে তাহলে কোন উন্নয়নের সিদ্বান্তই কেউ একা গ্রহণের সুযোগ পাবেনা। প্রবাসী প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা নুরুজ্জামান শাহী মুজিববর্ষকে সামনে রেখে ১৯৯৬ থেকে এ পর্যন্ত দলের সকল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের একটি বিশেষ প্রকাশনা প্রকাশের জন্যও জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের প্রতি উদাত্ত আহবাণ জানান।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn