‘দেশ ভাগ হয়েছে কিন্তু নজরুল-রবীন্দ্রনাথ ভাগ হননি’
এসময় কবি কাজী নজরুল আসলাম ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কবি যদিও চুরুলিয়াতে জন্মগ্রহণ করেছেন, কিন্তু আমাদের বাংলাদেশেও অনেক জায়গায় গিয়েছেন তিনি। ময়মনসিংহে গিয়েছেন, সেখানে আমরা তার নামে বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। কুমিল্লায় গিয়েছেন, সেখানেও আমরা তার নামে গবেষণা প্রতিষ্ঠান করেছি। বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লে জানা যায়, কবির সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর দেখা হয়েছিল ফরিদপুরের জেলে। এটাও তাদের একধরনের আত্মিক টান। কবির প্রতি মুগ্ধতার কারণেই তাকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে নিয়ে গিয়েছেন, জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে তাকে। কবি নজরুলের ‘চল চল চল’ গানটি আমরা রণ সংগীত হিসেবে নিয়েছি।’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার জনপ্রিয় ‘‘জয় বাংলা’’ শ্লোগানটি নজরুল ইসলামের কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ‘‘জয় বাংলা’’ শ্লোগান কবি নজরুল ইসলামের কবিতার লাইন থেকে গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ‘‘বাংলা বাঙালির হোক, বাংলার জয় হোক, জয় বাংলা’’ এই লাইন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বঙ্গবন্ধু ‘‘জয় বাংলা’’ শ্লোগানটি সবার কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন। একদিকে যেমন বাংলা সাহিত্যের কবি নজরুল ইসলাম, তেমনি রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখায় ভারতীয়দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ভারত সেসময় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি আমাদের সুদৃঢ় সম্পর্ক আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে। ’ সমাবর্তনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জীবনের কর্মক্ষেত্রে নয় শুধু, সর্বক্ষেত্রে আপনারা মানবতাকে সবার ঊর্ধ্বে স্থান দেবেন। নজরুল সাম্যের গান গেয়েছেন। দেশকে ভালোবাসার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। মানুষের মুক্তির জন্য তিনি জেল খেটেছেন।’ এসময় শিক্ষার্থীদের মানুষের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কবি কাজী নজরুল ইসলামের চেতনার প্রসারে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীসহ শিক্ষামন্ত্রী ও আয়োজকদের প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি। উপমহাদেশকে দারিদ্রমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’ এসময় বাংলাদেশ ভারত বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।