দোয়ারাবাজার :: দোয়ারাবাজার উপজেলা সফর করেছেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান এনডিসি। ওই সফর উপলক্ষে কোনো কর্মসূচিতেই রাখা হয়নি উপজেলাধীন ৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের। যোগাযোগ করা হলে ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, তাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কর্মসূচির সিডিউলে বিভাগীয় কমিশনারের সাথে বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মতবিনিয় হলেও শুধু বাদ পড়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। এতে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, আবার অনেকে মনে করছেন আমলা ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে দূরত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। শুধু জনপ্রতিনিধিরাই নয়, বাদ পড়েছেন দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরাও। ক্ষোভ প্রকাশ করে সংবাদকর্মীরা সেদিন উপজেলা প্রশাসনের সংবাদ প্রকাশ বয়কট করেছেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও লক্ষীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল হক জানান, আমি কোনো খবর পাইনি। পরে জানতে পেরেছি বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় এসেছিলেন। উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও বাংলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান জসীম মাস্টার জানান, আমি কোনো আমন্ত্রণ পাইনি। জনপ্রতিনিধিদেরকে কেনো রাখা হয়নি সেটা উনারাই ভালো জানবেন।
দোয়ারাবাজার সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারী জানান, বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়সহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এসে আমার ইউনিয়ন পরিষদ ভবন লাগোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প পরিদর্শন করে গেছেন। কিন্তু আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। পান্ডারগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ জানান, আমরা দূর্ভাগ্যবান জনপ্রতিনিধি। মাননীয় বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় দোয়ারাবাজার সফরে এসে বিভিন্ন প্রোগ্রাম করেছেন। ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত এ উপজেলার কোনো ইউপি চেয়ারম্যানই জানতে পারলাম না! অথচ মাননীয় বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের যাবতীয় কর্মসূচির খরচের ব্যয়-ভাউচার উপজেলা পরিষদ সমন্বয় সভায় ইউপি চেয়ারম্যানদের অনুমোদন করতে হয়।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রেসক্লাবের আহবায়ক তাজুল ইসলাম জানান, দোয়ারাবাজারে বিভাগীয় কমিশনার আসার বিষয়টি আমাদেরকে জানানো হয়নি। আমাদের প্রেসক্লাবের সংবাদকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে সেদিন উপজেলা প্রশাসনের সকল নিউজ বয়কট করেছেন। এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা জানান, এটাতো সমন্বয় সভা নয় যে পরিষদের চেয়ারম্যানদের রাখা হতো। সমন্বয় সভা হলে পরিষদের চেয়ারম্যানদের রাখা হতো। সমন্বয় সভায় তাদেরকে না রাখলে ক্ষোভ প্রকাশ করা যেতো। একজন চেয়ারম্যান অযৌক্তিক তথ্য দিয়েছেন যে, বিভাগীয় কমিশনারের যাবতীয় খরচপাতি পরিষদের অনুমোদন করতে হয়। এটা সম্পূর্ন ভূল তথ্য। আর একজন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যখন আসেন তারা নিজেরাই কয়েকদিন আগে প্রোগ্রাম সিলেক্ট করে পাঠিয়ে দেন। এর বাইরে আমাদের কিছু করার এখতিয়ার নাই। বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় যেসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেছেন এগুলোর সিডিউল আমরা করিনি। এটা উনাদের অফিস থেকে করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিদর্শনে এসে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান এনডিসি। এর আগে সকাল দশটায় উপজেলা কনফারেন্স হলরুমে দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন তিনি। এসময় সুনামগঞ্জের নবাগত জেলা প্রশাসক মো জাহাঙ্গীর হোসেনসহ দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৮১ বার