দোয়ারাবাজার :: অব্যাহত ভারী বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে দোয়ারাবাজার উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনাসহ অন্তত শতাধিক বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে।  সুরমার ভাঙনে উপজেলা পরিষদ ভবনের সম্মুখস্থ রাস্তাসহ সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মছব্বিরের দু’টি দোকান নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভারী বর্ষণে সুুরমার পানিবৃদ্ধি অব্যাহত আরো রয়েছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠঘাট ও গো-চারণ ভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে চরম সংকটসহ সদ্য বপনকৃত আমনের বীজতলায় পানি ঢোকায় হতাশায় ভূগছেন কৃষকরা। গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার অপেক্ষাকৃত কম। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।  গত দু’দিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা, চেলা, চলতি, মরা চেলা, খাসিয়ামারা, কালিউরি, ধুমখালি, ছাগলচোরাসহ উপজেলার সকল নদনদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা ইউনিয়নের ভূজনা, শরিফপুর, কালিকাপুর, মহববতপুরের তালতলা, হিন্দুপাড়া, পশ্চিম টিলাগাঁওয়ের মাঝেরটুকসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অন্তত শতাধিক বাড়িঘরে পানি উঠায় রান্নাবান্নাসহ সর্বক্ষেত্রে অস্বস্তি বিরাজ করছে। বালিছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শামারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শামারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহিব কয়েস বলেন, লাগাতার ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে রাস্তাঘাট ও বিদ্যালয় এলাকা প্লাবিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যোগ দিতে পারছেনা। পানিবৃদ্ধি হ্্রাস না পেলে পাঠদান ব্যাহত হওয়ার আশংকা।  অপরদিকে উপজেলা নদীভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙন থেকে দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়ে থাকে। তাই প্রথম দফা কাজের মান মোটামুটি ভালো ছিল। কিন্তু সুষ্ট তদারকির না থাকায় একমাত্র ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঢাকার ‘আজমেরি বিল্ডার্স’ এর গাফিলতি, অনিয়ম ও স্বেচ্চাচারিতায় সঠিকভাবে সঠিক সময়ে জিওবি ব্যাগ স্থাপন না করায় এবং সঠিকভাবে ডাম্পিং সম্পন্ন না হওয়াতে সরকারের প্রায় ৩ কোটি টাকা জলে ভেস্তে গেছে।
তিনি আরো বলেন, অনতিবিলম্বে সুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে দূর্নীতিবাজ ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে এবং জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প পদক্ষেপ গ্রহনপূর্বক সুরমার অব্যাহত ভয়াবহ ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য মহোদয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে জোর দাবি জানাচ্ছি। জানতে চাইলে নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা বলেন, ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজে কোনোরূপ অনিয়ম হলে উর্ধতন কর্তপক্ষসহ বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn