নজিরবিহীন সংকটে পাকিস্তান: পুলিশ প্রধানকে সামরিক বাহিনীর অপহরণ
বার্তা ডেস্ক:পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে দেশটির বিরোধী দলগুলো গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। রাজনৈতিক এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পাকিস্তান পুলিশের শীর্ষ এক কর্মকর্তাকে আধা-সামরিক বাহিনীর অপহরণের অভিযোগ ওঠার পর দেশটিতে অস্থিতিশীলতা আরও গভীর হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। রেঞ্জার্স হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানের আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যরা দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের সিন্ধ প্রদেশের পুলিশের মহাপরিদর্শক মুশতাক আহমেদ মহরের বাসায় অভিযান চালায় সোমবার। এই অভিযানে সেখান থেকে পাক রেঞ্জার্সের সদস্যরা তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সম্প্রচার মাধ্যম দুনিয়া টিভি বলছে, সিন্ধ প্রদেশের পুলিশের মহাপরিদর্শক মুশতাক আহমেদকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর বিরোধী দলীয় নেতা সাফদার আওয়ান ও বিলাওয়াল ভূট্টো জারদারির মুখপাত্র মুসতফা নওয়াজ খোখারকে গ্রেফতারের একটি আদেশে জোরপূর্বক তার স্বাক্ষর নিয়েছে রেঞ্জার্স।
সেনাপন্থী ইমরান খান নেতৃত্বাধীন সরকার এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া পুলিশ মহাপরিদর্শককে অপহরণের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ বলছে, পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে এ ব্যাপারে তার কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। নজিরবিহীন এই ঘটনার পর সিন্ধ প্রদেশ পুলিশের প্রায় সব শীর্ষ কর্মকর্তা ছুটি চেয়েছিলেন। পুলিশের প্রাদেশিক প্রধানকে আধা-সামরিক বাহিনীর অপহরণের এই ঘটনা দেশটিতে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ক্ষমতায় আসার গত দুই বছরে এমন খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ বন্ধ, মুদ্রাস্ফীতি ও ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার দায়ে দেশটির অন্তত ১১টি বিরোধী রাজনৈতিক দল জোট গঠন করে ইমরান খান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ইতোমধ্যে আন্দোলন শুরু করেছে।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও পাকিস্তানের বেশিরভাগ সময় কেটেছে সেনাশাসনের কবলে। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা এবং পররাষ্ট্র সংক্রান্ত বিষয়ে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে দেশটির বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেনাবাহিনীর ভূমিকার সম্প্রসারণ ঘটেছে। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির কোনও নাগরিক জনসম্মুখে সেনাবাহিনী এবং সংবিধানের সমালোচনা করতে পারেন না।