নির্বাচনের পর সরকারপ্রধান হবেন ড. কামাল
জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আহ্বান জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশ বাঁচান, অবিলম্বে জাতীয় সংলাপ আয়োজন করুন। তাতে দেশবাসীর অনেক উৎকণ্ঠার অবসান হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে আমরা নির্বাচনে যাব। বঙ্গবীর বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সব দলের সঙ্গে জাতীয় সংলাপ প্রয়োজন। সব পেশার লোককে ডেকে সুষ্ঠু ও সামাজিক পরিবেশ তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রীকে এ সময় আহ্বান জানান তিনি। শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি বিএনপিতেও যাইনি, আওয়ামী লীগেও যাইনি। আমি চাই বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক দিন বেঁচে থাক। তিনি বলেন, আমি শেখ হাসিনাকে অনেক পরামর্শ দিয়েছি। তার চারপাশে অমানুষে ভরে গেছে। আমার বিএনপির সঙ্গে থাকতেও আপত্তি নেই। তবে যতদিন যুদ্ধাপরাধ জামায়াত এই জোটের সঙ্গে আছে ততদিন আমরা বিএনপির সঙ্গে থাকার প্রশ্নই আসে না। অনেকেই প্রশ্ন করেন, আমি নাকি বিএনপিতে গেছি।
তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা নয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গেও নয়। তবে জাতীয় ঐক্যের চেষ্টা অনেক দিন ধরেই করছি। আমাদের লক্ষ্য সরকার এবং বিএনপির সমদূরত্বে থেকে কাঙ্ক্ষিত জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বি চৌধুরী আর ড. কামাল হোসেনের কার্যকর নেতৃত্ব চাই। এটা ফ্রন্ট হোক বা জোট হোক, তার প্রধান হবে বি চৌধুরী। নির্বাচনের পর সরকার গঠন করলে সরকার প্রধান হবেন ড. কামাল হোসেন।’খালেদা জিয়ার ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইলের ভারতে আসার বিষয়টি সমালোচনা করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়ার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন কেন ভারতে এসে করতে হবে। ‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে যদি রক্তের গঙ্গা বয়ে যায়, তার প্রতিকার কী-আমাদের ভেবে দেখতে হবে’ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমার তো মনে হয় না যে এটার প্রতিকার আওয়ামী লীগ বা বিএনপির হাতে আছে। চার দলীয় যুক্তফ্রন্টে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আছে কিনা এমন প্রশ্নে কাদের সিদ্দিকী বলেন, যুক্তফ্রন্ট এখনও প্রেস কনফারেন্স করে নাই, কিংবা প্রকাশ্যে কোনও আলোচনাও করে নাই। আমি এখনও বলতে পারি না, আমি আছি কিনা, না নাই।
লিখিত বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, প্রাণের বাংলাদেশ আজও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। এতো আত্মত্যাগের পরেও একটি স্বাধীন দেশের বতর্মান দুর্দশার জন্য দায়ী শুধু নেতৃত্বের ব্যর্থতা। দেশে আজ প্রকৃত গণতন্ত্র নেই, রাজনীতি নেই, সুশাসন নেই, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই। সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার স্বাধীনতা নেই, নেই সাংবাদিকদের নিরাপত্তা। সর্বোপরি নেই কথা বলার অধিকার ও স্বাধীনতা। এমনকি স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর সরকারি প্রভাবমুক্ত অবাধ নির্বাচনের আশা এখনও সুদূর পরাহত। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দীকী। পরিচালনা করেন হাবিবুর রহমান খোকা বীরপ্রতীক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম দেলোয়ার দলের নেতা অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, আজাদ সিদ্দিকী প্রমুখ।