শিশুখাতে বাজেটের থোক বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা খরচ হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি। তিনি বলেন, উপযুক্ত পরিকল্পনা দেখিয়ে কোনো মন্ত্রণালয় এই অর্থ খরচ করতে পারেনি। এটা যে শুধু তাদের দক্ষতার অভাব তা নয়। অনেক কাজের ভিড়ে সময়ের অভাবও হতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সিমিনারে এ কথা জানান তিনি। সেমিনারের আয়োজন করে সেভ দ্য চিলড্রেন। অনুষ্ঠানে ‘শিশু বাজেট ২০১৭-১৮: প্রতিশ্রুতি ও উদ্বেগ’ শীর্ষক ধারণাপত্রে জানান হয় প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত উপবৃত্তি প্রদানের হার আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। মোট তিনটি শিক্ষা কর্মসূচিতে এই হার ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। উপবৃত্তি প্রদানের কারণে গ্রামে ও চরাঞ্চলে শিক্ষার হার বেড়েছে। তবে উপবৃত্তি বন্ধ করা হলে শিশুদের ঝরে পড়ার হারও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ গ্রামের বেশিরভাগ শিশুই উপবৃত্তির সহায়তায় বিদ্যালয়ে আসছে।

সেভ দ্য চিলড্রেন এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে ধারণাপত্র তুলে ধরেন সেভ দ্য চিলড্রেনের ডেপুটি ডিরেক্টর (গভর্নস এন্ড পাবলিক ফাইন্যান্স) মো. আশিক ইকবাল। তিনি বলেন, ‘শিশু-কেন্দ্রিক প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়গুলোর প্রচেষ্টায় বিগত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই মন্ত্রণালয়গুলোর সার্বিক বরাদ্দের প্রবৃদ্ধির চেয়ে শিশু-কেন্দ্রিক কার্যক্রমের বরাদ্দের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে।’ ধারণাপত্রে বলা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য ৫৬ হাজার কোটি টাকার পৃথক শিশু বাজেট দেওয়া হয়। বাজেটে স্বাস্থ্যখাতসহ কয়েকটি খাতে বরাদ্দ বাড়লেও শিক্ষাখাতে কমেছে। এতে ভবিষ্যতে শিশুদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। শিশু-কেন্দ্রিক বাজেট গত অর্থবছরের তুলনায় ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৬ হাজার কোটি টাকায়, প্রবৃদ্ধির হার হিসেবে যা ২১.৪ শতাংশ। ধারণাপত্রের সুপারিশে বলা হয়, বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর ফলে সমাজের অনগ্রসর শিশুরা সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে। শিশু বাজেটের এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা। এই বাজেটের ফলে সমাজের বিশেষ শ্রেণির শিশুরাও সমভাবে উপকৃত হচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্র অর্জনে আগামী বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে ২০ শতাংশ এবং শিক্ষাখাতে ২৫ শতাংশ বাড়ানো প্রয়োজন। পাশাপাশি শিশুদের জন্য বিনিয়োগে স্থানীয় সরকারকে আরো শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সেভ দ্য চিলড্রেনের ডিরেক্টর (চাইল্ড রাইটস, গভর্নেন্স এন্ড চাইল্ড প্রোটেকশন) লাইলা খন্দকার সেমিনারের সঞ্চালনা ও সভাপতিত্ব করেন। চাইল্ড পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ফেরদৌস নাঈম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn