পাকিস্তানের হাইকমিশনার সাহস পায় কোথায়?
বাংলাদেশ-পাকিস্তানের তিক্ত সম্পর্কের শুরু অনেক আগে থেকেই। এত বছর পরে এসেও এই তিক্ততা কমেনি, বরং কিছু ঘটনা পাকিস্তানের উপর বিতৃষ্ণা আরো বাড়িয়েছে। সেরকম সাম্প্রতিক এক বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিলেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও সুরকার আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ।
ফেসবুক পোস্টে শাওন মাহমুদ লিখেছেন,
স্বাধীনতার ৪৭ বছর।
বাংলাদেশে ঢাকায় অবস্থিত পাকিস্তান দূতাবাসে ভারতবর্ষ বিভক্তির দ্বি-জাতি তত্ত্বের প্রবর্তক জিন্নাহর জন্মদিন পালন করা হয় ২৫ ডিসেম্বর। বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার রফিউজ্জামান সিদ্দিকী সেই অনুষ্ঠানে অত্যন্ত বিতর্কিত সাম্প্রদায়িক বক্তব্য পেশ করেন। তিনি বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনগোষ্ঠীর দাসত্ব থেকে মুক্তি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কায়েদ-ই-আজমের বিজ্ঞ ও নিঃস্বার্থ রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি উপমহাদেশের কোটি মুসলিম ঋণী। এরপর শাওন মাহমুদ লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিনের বিবেচনায় পাকিস্তান সবচেয়ে ব্যর্থ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেলেও রফিউজ্জামান সিদ্দিকী প্রতিবেশী ও সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতকে আক্রমণ করে বলেন, ভারতীয় মুসলিমদের বর্তমান দুঃখজনক অবস্থা এটাই প্রমাণ করে যে, ভারতবর্ষের মুসলিমদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত ছিল আশীর্বাদস্বরূপ। যদিও এই বিতর্কিত সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের নিন্দা করে মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা বাংলাদেশকে কখনও পাকিস্তানের মতো হতে দেবো না। পাকিস্তানের মতবাদে যারা বিশ্বাস করে, আমরা তাদের পরাজিত করবোই। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুরু হওয়া যুদ্ধাপরাধী বিচার কাজে কোন আপোষ করবো না।
সবশেষে শাওন মাহমুদ লিখেছেন, এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যে জিন্নাহ বাঙালির মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। যা কিনা জিন্নাহর কারণে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধেও প্রভাব ফেলেছিল। তার জন্মদিন বাংলাদেশে পালন হয় কি করে? আবার সেখানে নিজেরাই সাম্প্রদায়িক বিভিন্ন হামলায় জর্জরিত হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানের হাইকমিশনার এমন বিতর্কিত সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেয়ার সাহস পায় কোথা থেকে? এই ধরণের ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বিনষ্টের জন্য ইচ্ছাকৃত উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য হাইকমিশনারকে কেন জবাবদিহিতা করা হবে না?