পাতাল রেল হচ্ছে ঢাকায়: সংসদে রাষ্ট্রপতি
আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার অংশ হিসেবে রাজধানীতে পাতাল রেল হবে বলে সংসদকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। আর এই রেল হবে ৩১ কিলোমিটারের কিছু বেশি। চলতি বছরের প্রথম অধিবেশনে সংসদে দেয়া ভাষণে এই পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি। দীর্ঘ ভাষণে বর্তমান সরকারের আমলে নয় বছরে দেশের অগ্রগতি এবং দেশকে আরও এগিয়ে নিতে নানা উদ্যোগের কথা জানান আবদুল হামিদ। আর এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি সম্মানজনক আসন করে নেবে বলেও আশাবাদী তিনি। স্বচ্ছতা, জবাবহিদিতা, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং উন্নয়নের জন্য সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালনের আহ্বানও রাখেন রাষ্ট্রপতি। বলেনি, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলগুলো সম্মিলিতভাবে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্য-আয়ের এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত দেশ হবে বলেও আশা করছেন রাষ্ট্রপতি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, নতুন কমিশনের অধীনে কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন, সংসদের দুইটি উপ-নির্বাচন, পাঁচটি পৌরসভা ও চারটি উপজেলা এবং ১৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনসহ বেশকিছু স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরকে বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে শান্তির মুখোমুখি করা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বর্তমান অবস্থা, যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। সাম্প্রদয়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে স্ব-স্ব ধর্মচর্চা করতে দেয়ার বিষয়ে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান রাষ্ট্রপতি। নারী ফুটবল দলের সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল দলের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।
দারিদ্র্য বিমোচন ও চাকরির সুযোগ
রাষ্ট্রপতি জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশে এক কোটি মানুষের চাকরি হবে। এই উদ্যোগে চীন, জাপান ও ভারতের বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হবে বলেও জানান তিনি। ২০১৭ সালে বিদেশে রেকর্ড পরিমাণ ১০ লাখ আট হাজার ১৫০ জনের চাকরির হওয়ার তথ্যও সংসদকে জানান রাষ্ট্রপতি। জাহাজ শিল্প, আসবাবপত্র, ওষুধ ও আইসিটি পণ্য উন্নয়নে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলেন জানান রাষ্ট্রপতি। ২০২১ সালে রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশার কথা জানান রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি জানান, এক বছরে মাথাপিছু আয় ১৪৫ ডলার বেড়ে এক হাজার ৬১০ ডলার, রপ্তানি আয় ৩৪.৯ বিলিয়ন ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩.১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর আদায় ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কর প্রদানে উৎসাহ দিতে ‘কর বাহাদুর’ খেতাব প্রবর্তন, আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯১৬ এ উন্নীত হওয়ার কথাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। দারিদ্র্য বিমোচনে সাত বছরের সাফল্যও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। জানান, ২০১০ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্য ও অতি দারিদ্র্যের হার যথাক্রমে ৩১.৫ এবং ১৭.৬ শতাংশ। সেটি কমে এখন যথাক্রমে ২৪.৩ শতাংশ ও ১২.৯ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। গুচ্ছগ্রামে ১০ হাজার ৭০৩টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা, আরও ৫০ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে আড়াই লাখ পরিবারকে গৃহ নির্মাণ ও পুনর্বাসনের কাজ চালু থাকার কথাও জানান রাষ্ট্রপতি। বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার পরিবার পুনর্বাসন করা হয়েছে। ২০ হাজার ৭৭৫টি গৃহহীন পরিবারকে গৃহনির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্যদূরীকরণে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের অধীনে ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৮৬টি বাড়িতে ক্ষুদ্র পারিবারিক খামার স্থাপনের কথাও জানান রাষ্ট্রপতি।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন
২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় ৪৮ হাজার ৭৪৭ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন, দুই লাখ ৯১ হাজার ৭৩৫ মিটার ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ, এক হাজার ৪২৪টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, ১১২টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কথাও জানান রাষ্ট্রপতি। প্রাথমিক শিক্ষার সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়নে বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় এক হাজার ৪৫৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের কথাও জানান রাষ্ট্রপতি। সরকারের বর্তমান মেয়াদে ৩১টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১২টি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ২১টি বেসরকারি কলেজকে সরকারি করা, ২০১৪ থেকে তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে এবং ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দেয়া এবং আটটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। কারিগরি শিক্ষায় ভর্তি ১ শতাংশ থেকে প্রায় ১৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে জানান রাষ্ট্রপতি। ২০০৯ থেকে নয় হাজার ৪৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া, বিদ্যুতের সুবিধাভোগী ৪৭ থেকে ৮৩ শতাংশে উন্নীত হওয়ার কথাও জানান রাষ্ট্রপতি। ২০২১ সালের মধ্যে আরও ২০২১ সাল নাগাদ বিদ্যুতের উৎপাদন ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারের পরিকল্পনা ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ, দৈনিক এক বিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতার দুটি ল্যান্ডবেজইড টার্মিনাল স্থাপনের লক্ষ্যে পরামর্শক নিয়োগ, ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল আমদানি, রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কথাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ২০০৯ সালের ৯৮তম স্থানে থাকলেও সেটি ২০১৭ সালে ২৭ ধাপ এগিয়ে ৭১তম স্থানে উন্নীত হয়েছে বলেও জানান রাষ্ট্রপতি। ২০২৩ সালের মধ্যে পায়রা বন্দরকে একটি পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসাবে গড়ে তোলার কথাও জানান রাষ্ট্রপতি।
তথ্য প্রযুক্তি খাত
মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানান রাষ্ট্রপতি। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশকে যুক্ত কর, সারাদেশে আট হাজার ৫০০টি ডাকঘরে পোস্ট ই-সেন্টার চালুর কথাও জানান রাষ্ট্রপতি। ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে থাকা তিন কোটি জনগোষ্ঠীকে এই সুবিধার আওতায় আনতে ডাক টাকা চালু, ২৮টি হাইকেট পার্ক নির্মাণের উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন।
গণপরিবহনের উন্নয়ন
গত নয় বছরে ৩৭৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত হয়েছে বলেও জানান রাষ্ট্রপতি। বিআরটিসির জন্য আরও ৬০০টি বাস ও ৫০০টি ট্রাক সংগ্রহের নিমিত্ত দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে বলেও জানান তিনি। পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন কাজ এগিয়ে চলছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ এ সেতু যানবাহন পারাপারের জন্য খুলে দেওয়া সম্ভব হবে। আর কর্ণফুলী নদীর তলদেশে তিন দশমিক চার-শূন্য কিলোমিটার টানেল ২০২০ সালে শেষ হবে বলেও জানান তিনি। রাজধানীর যানজট সমস্যার সমাধানে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার চালু, ২০.১ কিলোমিটার ম্যাস রেপিড ট্রানজিট, ২৬.৬ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-১ এবং ২০.৮ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-৫ নির্মাণের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে বলেও জানান তিনি। এই দুই লাইনের আওতায় বাংলাদেশে প্রথম ৩১ দশমিক দুই কিলোমিটার অংশ পাতালরেল নির্মিত হবে। গাজীপুর হতে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত যাতায়াত দ্রুত ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে বাস র্যাপিড ট্রানজিট করিডোর নির্মাণের মূল কাজ শুরু হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ চলছে। শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ইপিজেড পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা-সমীক্ষাও শেষ হয়েছে। ২০২২ সাল নাগাদ এই কাজ শেষ হবে। এ ছাড়া ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের হেমায়েতপুর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষাও শেষ হবে। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৪২.৮৭ কিলোমিটার নতুন রেলপথ, ১৭৯টি রেল সেতু, ৬৭টি নতুন রেল স্টেশন ভবন নির্মাণ ও ২৪৮.৫ কিলোমিটার রেলপথ ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হয়েছে বলেও জানান রাষ্ট্রপতি। পর্যায়ক্রমে সব জেজলাকে রেলেও আওতায় আনার কথাও বলেন তিনি।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে পুলিশে নতুন ৪৫ হাজার ৫৫৭টি পদ তৈরি, সারাদেশে ১০১টি নতুন থানা ভবন, ৫০টি হাইওয়ে আউটপোস্ট, ১৯টি নৌ পুলিশ ফাঁড়ি এবং ব্যারাক, নয়টি পুলিশ সুপার অফিস ভবন নির্মাণের কথাও জানান রাষ্ট্রপতি। সীমান্ত নজরদারির জন্য ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে চারটি ব্যাটালিয়ন এবং ৬০টি বিওপি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বৃদ্ধি করতে সিলেট ও কক্সবাজারে নতুন পদাতিক ডিভিশন গঠন, পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুরে সেনানিবাস স্থাপন হয়েছে বলেও জানান রাষ্ট্রপতি। বরিশাল ও পটুয়াখালীর মধ্যবর্তী এবং কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে সেনানিবাস স্থাপনের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে বলেও জানান তিনি। নৌবাহিনীর ক্রমাগত উন্নয়নের অংশ হিসাবে দুইটি সাবমেরিন সংযোজন, বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নে আধুনিক যুদ্ধ বিমান ও হেলিকপ্টার কেনার কথাও জানান রাষ্ট্রপতি।
বিদেশ প্রসঙ্গ
সম্প্রতি জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির পর তুরস্কের ইস্তান্বুলে ওআেইসি সম্মেলনে অংশগ্রহণ, সৌদি বাদশাহর আমন্ত্রণে আরব-ইসলামিক-আমেরিকান শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ, প্রধানমন্ত্রীর ভারত, ভুটান ও কম্বোডিয়া, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, সুইডেন এবং ফ্রান্সে সফরের কথাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বের প্রশংসা যুক্তরাজ্যের টেলিভিশনে তাকে মাদার অব হিউমেনিটি ভূষণ দেয়ার কথাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। এই অর্জনের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী ও দেশের জনগণকে অভিনন্দন জানান।
প্রয়াত মন্ত্রী, মেয়র ও এমপিদের নামে সংসদে শোক
দশম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনে প্রয়াত বেশ কয়েকজন নেতার নামে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে মন্ত্রী, মেয়র, সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ সদস্যসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রয়েছেন। রোববার বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়। কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী কোনো সংসদ সদস্য মারা গেলে তার নামে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়। যেহেতু বছরের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে তাই শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনার পর সংসদ অধিবেশন কিছু সময়ের জন্য মুলতবি ঘোষণা করা হবে। এরপর সন্ধ্যায় ৬টায় রাষ্ট্রপতি তার স্বাগত ভাষণ দেবেন। ১৮তম অধিবেশনের পর থেকে ১৯তম অধিবেশন শুরুর আগে একজন মন্ত্রী, দুই মেয়রসহ ৯ জন সংসদ সদস্য মারা গেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক, সাবেক ডেপুটি স্পিকার আখতার হামিদ সিদ্দিকী, সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় প্রয়াত এসব গুণী ব্যক্তিত্বের ব্যক্তিজীবনের বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন খসরু, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সংসদ সদস্য এ বি এম তাজুল ইসলাম, ফজিলাতুন নেছা বাপ্পী প্রমুখ। আলোচনা শেষে বিদায়ী প্রয়াত নেতাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।