প্রতিবছর এমপিওর ৪০ কোটি টাকা বন্টন হয় না
সরকারি কলেজের শিক্ষকদের ব্যাপারে আরেকটি বিষয়ে বলি। সরকারি কলেজের অনেকেই মনে করেন তার সঠিক পোস্টিং হয়নি। আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বে থাকার সময় এটি খুব ভালো লক্ষ্য করেছি। হয়ত কোনো একদিন আমি ঢাকার বাইরে গিয়েছি। এডিশনাল সেক্রেটারি যিনি আমার দায়িত্বে ছিলেন, আমাকে না জানিয়েই হয়ত ২০০ শিক্ষককে একদিনে বদলি করে দিয়েছেন।
শিক্ষা প্রশাসনে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার অভাবেই সর্বনাশ হচ্ছে। কুমিল্লা বোর্ডের ফলাফল খারাপ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কুমিল্লা বোর্ডে একজন কলেজ পরিদর্শক ছিলেন। তিনি সেসিপে (সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম) ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আমাকে এডিবি থেকে নানা অভিযোগ করা হয়েছিল। ভাউচার নিয়ে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। এরপর তাকে অনেক কষ্টে সেসিপ থেকে সরিয়ে আনলাম। এরপর দেখলাম, তাকে দেয়া হলো কুমিল্লা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক পদ। তার মতো লোক কলেজ পরিদর্শক হলে ফলাফল খারাপ ছাড়া ভালো হবে- এমনটি মনে করার কোনো কারণ নেই। কুমিল্লায় নানা অভিযোগ ওঠার পর তাকে বদলি করে রাজশাহীতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে পাঠানো হয়।
এই যদি শিক্ষা প্রশাসনের অবস্থা হয়, তাহলে ভালো ফল আশা করবেন কী করে? প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রশাসনের কারণেই শিক্ষায় সুশাসন আসছে না।আইটি সুবিধার জন্য অনেক বড় ফান্ড রয়েছে। এই টাকা দিয়েই প্রশাসন স্কুল-কলেজে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে পারে।কলেজ পরিদর্শন নিয়ে আমি একটি নীতিমালা করেছিলাম। এক কলেজের শিক্ষক দ্বারা আরেক কলেজ পরিদর্শন করা। সেটিও আর গুরুত্ব দেয়া হলো না।
এরপরের বিষয় হচ্ছে দুষ্টের দমন, সৃষ্টের পালন। আমি যখন যুগ্ম সচিব ছিলাম, তখন নীতিমালা করেছিলাম। যে প্রতিষ্ঠান থেকে একজন শিক্ষার্থীও পাস করবে না, তার এমপিও বন্ধ করে দেয়া হবে। জনগণের টাকায় শিক্ষার ব্যয়, এত অবহেলা তো চলতে পারে না। কিন্তু আসলে প্রভাবশালী মহলের কারণে চাইলেও অনেক কিছু করা যায় না। অনেকেই সাপের মুখেও চুমো দেয় আবার ব্যাংকের মুখেও চুমো দেয়।