প্রতিযোগী বিশ্বে অগ্রগতি করতে চাইলে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, কাারিগরি শিক্ষায় আমরা এখনও কাক্ষিত অগ্রগতি করতে পারিনি। মাত্র ১ শতাংশ শিক্ষার্থী এ শিক্ষার সঙ্গে বর্তমানে জড়িত রয়েছে। সরকার ২০২০ সালে ২০ শতাংশ ও ৩০ সালে ৩০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে। প্রতিযোগী এ বিশ্বে অগ্রগতি করতে চাইলে কারিগরি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।আজ শনিবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সাইক ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট এন্ড টেকনোলজি (এসএমআইটি) আয়োজিত ‘জব প্লেসমেন্ট সেলিব্রেশন-২০১৭’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
কারিগরি শিক্ষায় সাইকের ভুমিকার প্রশংসা করে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, সরকারের যে কাজ করার কথা ছিল, সাইক সে কাজ করছে। আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। কেউ দয়া করে আমাদের চাকরি দেয় না। আমরা কারও দয়ায় চাকরি নেব না। আমাদের দক্ষতার বিচারে আমরা চাকরি পাব। এজন্য কারিগরি শিক্ষার ভুমিকা অনেক বেশি। তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার দরকার নাই তা বলবো না। তবে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে কেউ বেকার থাকে না।
মন্ত্রী আরও বলেন, দক্ষ জনশক্তি পৃথিবীর যেকোনো রাষ্ট্রের জাতীয় উন্নয়নের একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের ফলে বিশ্বব্যাপী উন্নয়নকৌশল ও পদ্ধতির দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে উন্নত, বেকারমুক্ত, শিক্ষিত ও কমসংস্থান সুনিশ্চিত করতে হলে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরীর কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে কারিগরি শিক্ষার। আর কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা যে বেকার থাকে না তার বাস্তব উদাহরণ সাইকের আজকের এই প্রোগ্রাম।
এসএমআইটির চেয়ারম্যান আবু হাসনাত মো. ইয়াহিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেলী ইয়াছমিন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, কারিগরি র্শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস, বিশ্বব্যাংকের স্কিল এন্ড ট্রেনিং ইনহেন্সমেন্ট প্রজেক্টের (ঝঞঊচ) প্রকল্পের পরিচালক এ বি এম আজাদ, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন্স অফিসার মো. মোখলেছুর রহমান, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াস বাংলাদেশের সভাপতি ইঞ্জি. এ কে এম এ হামিদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ১০জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে সাইকের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনকৃত ‘স্মার্ট ব্লাইন্ড স্টিক’ প্রদান, জব প্লেসমেন্ট বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, বিশালাকের কেক কেটে শিক্ষার্থীদের চাকরি প্রদানের সফলতা উদ্যাপন ও সাইকের শিক্ষার্থীদের চাকরিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নিমিত্ত্বে নতুন করে আরও ২২টি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে এমওইউ বা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষতির হয়। এরআগেও চাকরিদাতা প্রায় শতাধিক প্রতিষ্ঠানের এমওইউ চুক্তি হয়েছে। পরে অনুষ্ঠনের দ্বিতীয় পর্বে সাইকের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
উল্লেখ্য, সাইক গ্রুপ পরিচালিত অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের অন্যতম সাইক ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট এন্ড টেকনোলজি (এসআইএমটি)। সুনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট পলিটেকনিক হিসাবে ২০০২ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে আজ অবধি দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাশাপাশি সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের ‘স্কিল এন্ড ট্রেনিং ইনহেন্সমেন্ট প্রজেক্ট (ঝঞঊচ) প্রকল্পের সহায়তায় গত ৫ বছর ধরে সফলতার সঙ্গে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পাদন করছে। শিক্ষার্থীদের চাকরি নিশ্চিত করতে এ পর্যন্ত সাইক চাকরিদাতা প্রায় শতাধিক ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আজকের অনুষ্ঠানে নতুন আরও ২০টি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।