বার্তা ডেক্সঃঃপ্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এ বছর মর্যাদাপূর্ণ ‘গ্ল্লোবাল হিরো অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেছেন সামাজিক উদ্যোক্তা তাজিন শাদিদ। ২০১১ সালে এই পুরস্কারটি প্রবর্তন করে সিয়াটলভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘গ্ল্লোবাল ওয়াশিংটন’ এরপর থেকে প্রতিবছর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ওয়াশিংটন রাজ্যে বিশ্ব উন্নয়ন সম্প্রদায়ের মধ্যে থাকা ব্যক্তিদের এই আজীবন সম্মাননা দেয়া হয়। এ বছর তাজিন শাদিদ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন।

এর আগে ৯ জন এই পুরস্কার পেয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন- বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি বিল গেটস সিনিয়র; মাইক্রোসফ্‌ট-এর সাবেক সিনিয়র পরিচালক আখতার বাদশা, ঘানার অ্যাশেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্যাট্রিক আউয়াহ এবং দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা বিল নিউকোম। বাংলাদেশভিত্তিক সামাজিক উদ্যোগ ‘স্পৃহা বাংলাদেশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে সামাজিক উন্নয়ন খাতে অসামান্য অবদান এবং অঙ্গীকারের জন্য তাজিনকে এ বছর ‘গ্ল্লোবাল হিরো’ পুরস্কার প্রদান করা হয়। উদ্ভাবনের সংস্কৃতি দ্বারা অনুপ্রাণিত তাজিন সবার জন্য সীমাহীন সুযোগ লালনকারী বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।
হিউম্যান সেন্টারড ডিজাইন প্র্যাকটিশনার হিসেবে প্রায় ২০ বছর ধরে কর্মরত তাজিন শাদিদ মাইক্রোসফ্‌ট সদর দপ্তরে সিনিয়র ডিজাইন স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসেবে ১০ বছর কাজ করেছেন। সেখানে তিনি ব্যবহারকারীদের উপযোগী পণ্য উদ্ভাবন ও পরিষেবা বিকাশে কাজ করেন।

সেই সময়ে তিনি আমেরিকাভিত্তিক একটি অলাভজনক সংস্থা ‘স্পৃহা ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। এটি মানুষদের দারিদ্র্যের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে সহায়তা করে। পরবর্তী সময়ে তাজিন সামাজিক উদ্যোগ স্পৃহা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৫ সালে তিনি মাইক্রোসফ্‌ট থেকে বিদায় নিয়ে নিজ দেশে চলে আসেন  এবং স্পৃহা বাংলাদেশের কাজে সার্বক্ষণিক নিযুক্ত হন। তাজিন শাদিদ, বর্তমানে ‘স্পৃহা বাংলাদেশ’ পরিচালনা করছেন। যা বাংলাদেশের নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাদান এবং কর্মসংস্থানের দক্ষতা অর্জনের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। স্পৃহা স্বনির্ভর সামাজিক উদ্যোগও তৈরি করছে, যা উন্নততর মানবিক প্রয়োজন মেটাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। ‘স্পৃহা’ এ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রায় ২০টি জেলায় চার লাখেরও বেশি লোককে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন এবং বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করেছে।
তাজিন কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ‘আমার ল্যাব’, ‘নিওফার্মার্স’, ‘স্পাইডার ডিজিটাল’, ‘চলো সবাই’ ও ‘দ্রুত সেবা’সহ আরো বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিভিত্তিক স্টার্টআপসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তাজিন শাদিদ বলেন, আমাদের লক্ষ্য ব্যক্তি ও সমপ্রদায়ের ক্ষমতায়নের জন্য উদ্ভাবনী পরিষেবাগুলো অব্যাহত রাখা এবং তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সহায়তা করা। তিনি আরো বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে আমরা ১০ লাখ লোকের জীবনে মৌলিক পরিবর্তন আনতে চাই।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn