প্রধান বিচারপতির কথার জবাব দিতে পারতাম: আইনমন্ত্রী
‘প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের জবাবে আমি অনেক কথাই বলতে পারতাম, কিন্তু আইন ও সুপ্রিম কোর্টের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস অক্ষুন্ন রাখার কারণে আমি কিছু বলিনি।’এই কথা আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত মামলায় আপিল শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেই প্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার বিকালে নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। বিচারকদের অভিশংসন ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নেয়া সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেছিল হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে এখন শুনানি চলছে আপিল বিভাগে। আর এই শুনানিতে প্রায় প্রতিদিন প্রধান বিচারপতির নানা বক্তব্য গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়ে আসছে। প্রধান বিচারপতি ২৩ মের শুনানিতে বলেছেন, ‘অধঃস্তন বিচার বিভাগ কব্জা কওে নিয়েছে সরকার। এখন সুপ্রিম কোর্টকেও নিয়ে নিতে চাচ্ছে।’ তার এই মন্তব্য নিয়ে আদালতের বাইরে রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রতিক্রিয়া হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী সম্পর্কে মাননীয় প্রধান বিচারপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন আমি ইচ্ছে করলে তার ব্যাখ্যা এবং জবাব দিতে পারি। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কোন কথা আমি বলবো না।’
আইন মন্ত্রী বলেন, দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে দুইটি জেলাতে জেলা জজ ও দায়রা জজের পদ শূন্য রয়েছে। এ নিয়ে মাননীয় প্রধান বিচারপতি সরকারের সমালোচনা করেছেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিধি মোতাবেক আমরা দুই জন জেলা জজের নাম প্রস্তাব করেছি। কিন্তু মাননীয় প্রধান বিচারপতি দুই জনকে নিয়োগ না দিয়ে নাম দুটি ফেরত পাঠিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের দেয়া দুই জনের নাম পছন্দ হয়নি বলেই হয়তো তিনি ফেরত পাঠিয়ে থাকবেন। আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা আইন মানি, আইনের শাসনে বিশ্বাস করি এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি।’ আইনমন্ত্রী মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কোন কথা আমি বলব না।’ নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হিরু, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার, আইন বিচার ও সংসদ মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা, নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ বেগম ফাতেমা নজিব, নরসিংদী জেলা প্রশাসক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার আমেনা বেগম প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তারেক লুৎফর রহমান।