প্রধান বিচারপতির পর তার স্ত্রী সুষমা সিনহাও দেশ ছাড়লেন
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার স্ত্রী সুষমা সিনহাও দেশ ছাড়লেন। তিনি মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব মো. আনিসুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার স্ত্রী সুষমা সিনহা আজ রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে গেছেন।’এর আগে শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১১ টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়া যান প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। ওই দিন সুষমা সিনহা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গেলেও অস্ট্রেলিয়া যাননি। প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগের পর তিনি প্রধান বিচারপতির হেয়ার রোডের সরকারি বাসভবনে ফিরে আসেন সুষমা সিনহা।
উল্লেখ্য, গত ১ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে একটি চিঠি দেন প্রধান বিচারপতি। ওই চিঠিতে ১৩ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া থাকতে চান বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে প্রধান বিচারপতির বিদেশ যাওয়া সংক্রান্ত সরকারি আদেশ (জিও) জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের স্বাক্ষর করা ওই আদেশে বলা হয়, প্রধান বিচারপতির আবেদনে এর আগে ৩ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিনের ছুটি মঞ্জুর করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু প্রধান বিচারপতি আরও বেশি দিন বিদেশে থাকবেন। তাই রাষ্ট্রপতি নতুন আদেশ দিয়েছেন।
২৫ দিনের অবকাশ শেষে ৩ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট খোলার দিনই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ১ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসের ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহল ও আইনজীবীদের মধ্যে আলোচনার ঝড় ওঠে। এর আগে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায় এবং বিচারিক আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি সংক্রান্ত গেজেট নিয়ে সরকারের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির মতপার্থক্য দেখা দেয়। এর জের ধরেই প্রধান বিচারপতিকে জোর করে ছুটিতে পাঠানোর অভিযোগ তোলেন বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদসহ আইনজীবী সমিতির একাংশ। তবে সরকার ও আওয়ামী লীগ এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।এর মধ্যেই প্রধান বিচারপতি সস্ত্রীক অস্ট্রেলিয়ায় যেতে পাঁচ বছরের ভিসার জন্য দূতাবাসে আবেদন করেন। তাদের তিন বছরের ভিসা দেয় অস্ট্রেলিয়া দূতাবাস। ভিসা পাওয়ার পর মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে তার বিদেশ ভ্রমণের বিষয়টি চিঠি দিয়ে অবহিত করেন। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই পরে বৃহস্পতিবার জিও জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারিতে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এস কে সিনহার অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি।