প্রেমিককে দিয়ে স্বামীকে খুনের পর মামলা করেন স্ত্রী
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য (সার্জেন্ট) মো. শামীম (৪০) হত্যা মামলায় স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরকীয়া এবং পাওনাদারদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিহতের স্ত্রী এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন বলে জানায় পুলিশ । গ্রেফতারকৃতরা হলেন- টাঙ্গাইলের গোপালপুরের বাসকাইল গোইজার পাড়ার হোসেন আলীর ছেলে সুজন (২৮), একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুর রহিম (৩০) এবং নিহতের স্ত্রী রাজিয়া বেগম (৩৫)। এদের মধ্যে সুজন এবং আব্দুর রহিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সুজন ও আব্দুর রহিম আদালতে জানান, নিহতের স্ত্রী রাজিয়া বেগম এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন। পরে রাজিয়ার নির্দেশে তারা দুজন সরাসরি শামীমকে হত্যা করেন। তবে ডিবি পুলিশের ধারণা এই হত্যাকাণ্ডে আরো একজন অংশগ্রহণ করে থাকতে পারে। জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ রোববার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এ ব্যাপারে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি অশোক কুমার সিংহ জানান, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে গভীরভাবে তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়। তিনি জানান, ২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট শামীম নিজ বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে নিখোঁজ হন। পরে ২৪ আগস্ট গোপালপুরের দক্ষিণে বৈরান নদী থেকে হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিহতের স্ত্রী রাজিয়া বেগম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি থানা পুলিশ তদন্ত করে। একপর্যায়ে মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তে ডিবি পুলিশ গত শুক্রবার ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, নিহত শামীমের স্ত্রী রাজিয়ার পরামর্শে পরকীয়ার পথ প্রশস্থ এবং পাওনাদারদের হাত থেকে বাঁচার জন্য এই হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল স্বামীকে কৌশলে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে গোপালপুরের সন্ধুর ব্রিজের কাছে জুয়া খেলার স্থানে আনে এবং পরিত্যক্ত একটি ঘরের মধ্যে হাত-পা বেঁধে এবং গলা ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। গ্রেফতারকৃত সুজনের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক ও পাওনাদারদের হাত থেকে রক্ষার জন্য এই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। তিনি বলেন, পরে গ্রেফতারকৃতরা শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মামলার বাদি ও নিহতের স্ত্রী রাজিয়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি পুলিশের অফিসে আনা হয় এবং তাকে আজ রোববার দুপুরে গ্রেফতার দেখানো হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আজ রোববার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।