প্রেমিক-প্রেমিকার মৃত্যু: কি আছে ‘সুইসাইড নোটে’?
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জগন্নাথপুরে আত্মীয়দের বাড়িতে যাওয়া-আসা ছিল রুমি পালের। এ থেকেই মিন্টু দেবের সাথে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বেশ কিছুদিন ধরে তাদের এই প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি রুমি পালের বিয়ে অন্যত্র দিতে ওঠেপড়ে লাগে তার পরিবার। নিজেদের সম্পর্কের কথা বলেও পরিবার থেকে সমর্থন পাচ্ছিলেন তারা। দুজনের এই আলাদা হয়ে যাওয়ার শঙ্কা এলোমেলো করে মিন্টু-রুমির মনকে। গত রবিবার তারা দুজনে সিলেট নগরীতে মিলিত হন। নগরীর সোবহানীঘাট পয়েন্টে ‘হোটেল মেহেরপুরে’ মুসলিম ও দম্পতি পরিচয়ে নিজেদের নাম ‘মিন্টু মিয়া’ ও ‘রুমি বেগম’ লিখে ২০৬নং কক্ষে ওঠেন তারা। হোটেল সূত্রে জানা গেছে, হোটেলে ওঠে গত রবিবার সন্ধ্যার পরে রুমি পাল ‘সিলেটে হোটেল মেহেরপুরে ২০৬নং কক্ষে আমরা আছি। আমরা আত্মহত্যা করছি’ লিখে তার দুলাভাইয়ের মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ পাঠান। এমন ম্যাসেজ পেয়ে ওই হোটেলে ছুটে আসেন রুমির দুলাভাই। তিনি বিষয়টি হোটেল ব্যবস্থাপককে জানান। ব্যবস্থাপক খবর দেন পুলিশে। রাত ১০টার দিকে পুলিশ হোটেলের ওই কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে রুমির লাশ বিছানায় দেখতে পায়, পাশেই সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলছিল মিন্টু দেবের নিথর দেহ।
পুলিশের ধারণা, মিন্টু দেব প্রথমে রুমি পালকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে মিন্টু প্রথমে রুমিকে হত্যা করেন। পরে নিজে আত্মহত্যা করেছেন। তবে বিষয়টি আমরা সবদিক থেকে খতিয়ে দেখছি।’ এদিকে, মিন্টু ও রুমির হোটেল কক্ষ থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, ওই সুইসাইড নোটে নিজেদের মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত লিখে গেছেন তারা। তবে পুলিশ এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘আমরা সুইসাইড নোট পেয়েছি। তবে তাতে কি আছে, তা তদন্তের স্বার্থে এখনই বলা যাচ্ছে না।’ এদিকে, মিন্টু ও রুমির মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের অপেক্ষা করছে পুলিশ। নগরীর কোতোয়ালী থানার ওসি গৌছুল হোসেন বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বুঝা যাবে, মিন্টু কি রুমিকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছেন, নাকি এখানে অন্য কিছু আছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।’