দলবল নিয়ে তাণ্ডব চালিয়ে গ্রেফতার হওয়ার সপ্তাহখানেক পর নারী নির্যাতনের একটি মামলায় মিথ্যা সাক্ষী সাজানোর অপরাধে দণ্ডিত হয়েছেন ফিনল্যান্ড বিএনপির সভাপতি কামরুল হাসান জনি। বৃহস্পতিবার ফিনল্যান্ডের একটি আদালত তার বিরুদ্ধে ওই রায় দেয়।মিথ্যা সাক্ষ্য সাজানোর দায়ে ২০ দিনের আয়, অর্থ্যাৎ প্রতিদিন ৬ ইউরো ধরে মোট ১২০ ইউরো আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে জনিকে, যিনি নব্বই দশকের শুরুতে বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ফিনল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন।

রায়ে একইসঙ্গে বাদীর আইনজীবীর যাবতীয় ফি পরিশোধ করতে বলা হয়েছে জনিকে। তবে আদালতে তার দাখিল করা কাগজপত্র অনুযায়ী ‘আর্থিক দীনতা’ বিবেচনায় নিয়ে আইনজীবীর ওই অর্থ প্রাথমিকভাবে সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হবে রায়ের একটি অনুলিপি এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।জনির ওই মিথ্যা সাক্ষী সাজানোর ঘটনাটি কয়েক বছর আগের। ইতালী প্রবাসী এক নারীকে বিয়ে করে নিয়ে ঘর-সংসার করার পর ফিনিশ আইন অনুযায়ী স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করায় তিনি কামরুল হাসান জনির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।পরে ২০১৫ সালের ২৩ এপ্রিল ধর্ষণের ওই মামলায় জনিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই মামলা হওয়ার পর এক ব্যক্তিকে (ফিনিশ আইনে বিধিনিষেধ থাকায় নাম প্রকাশ করা গেল না) সাক্ষী সাজিয়ে ওই নারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য প্ররোচনা দেন জনি। পরে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগের সদস্যদের জেরার মুখে জনির ‘সাজানো সাক্ষী’ তাদের যাবতীয় সঠিক তথ্য দেন।

এরপর মিথ্যা সাক্ষী সাজানোর নতুন আরেকটি অভিযোগ গঠন করা হয় বিএনপি সভাপতি জনির বিরুদ্ধে, সেই মামলায় দণ্ডিত হলেন তিনি।ওই সাক্ষ্য দেওয়ার জের ধরেই গত ৭ অক্টোবর হেলসিংকির কনতুলা মসজিদ এলাকায় তাণ্ডব চালান ফিনল্যান্ড বিএনপি সভাপতি কামরুল হাসান জনি ও তার অনুসারীরা। সেদিন হামলায় চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করার পর জনিসহ পাঁচজন গ্রেফতার হয়েছিলেন। দুই দিন পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হলেও হামলার তদন্ত চলছে।এ বিষয়ে হেলসিংকি পুলিশের তদন্ত পরিচালক ইওহানি ভুওরিসালো বলেছেন, তারা গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন, একইসঙ্গে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর কথাও শুনেছেন; তদন্ত এগোচ্ছে।তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- ঘটনার তদন্তে তারা কী পেয়েছেন। জবাবে ইওহানি ভুওরিসালো বলেন, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।তিনি আরও বলেন, তারা ওই দিন গ্রেফতারকৃতদের বক্তব্য পরীক্ষা করে দেখছেন। প্রয়োজনে তাদের আবার ডাকা হবে, নতুন যে কারো বক্তব্যও তারা শুনতে পারেন।হামলার পর হেলসিংকি পুলিশের সুপারিনটেন্ডেন্ট ইয়োরমা মাক্কোনেন তাৎক্ষণিকভাবে বলেছিলেন, বেলা ২টার দিকে তারা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছেন তখন সেখানে অন্তত ৬০ জনকে পেয়েছেন। তবে তাদের সবাই ওই সংঘর্ষে অংশ নেয়নি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn