মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দিতে ফেসবুক ব্যবহৃত হয়েছিল বলে স্বীকার করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। মার্কিন অনলাইন সংবাদমাধ্যমে ভক্স’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তার প্রতিষ্ঠানে বিস্তর কথাবার্তা হয়েছে এবং অস্বীকার করার উপায় নেই যে ফেসবুক দিয়ে ‘বাস্তব ক্ষতিসাধন’ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘এক শনিবার আমি একটা ফোন কল পেলাম, তারপর দেখতে পেলাম ফেসবুক মেসেঞ্জার দিয়ে বার্তা চালাচালি হচ্ছে, দুই পক্ষের মধ্যেই হচ্ছে। কিছু বার্তায় মুসলিমরা একে অন্যকে সাবধান করছে বৌদ্ধরা ক্ষেপে উঠেছে সুতরাং আত্মরক্ষার্থে সঙ্গে অস্ত্র রাখো, অমুক জায়গায় যাও। অন্য পক্ষের লোকজনও একই কথাবার্তা চালাচালি করছে। আমরা বিষয়টি ধরতে পেরেছিলাম, বন্ধ করতে পেরেছিলাম। এখন এ ধরণের বিষয়ে আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি।’
এর আগে, গত মাসে মিয়ানমারের সহিংসতার ওপর জাতিসংঘের তদন্তকারী ইয়াংহি লি বলেন, ‘ফেসবুক দেশটিতে হিংস্র জানোয়ারের রূপ নিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘কট্টর বৌদ্ধ নেতাদের ফেসবুক পাতা রয়েছে এবং তার মাধ্যমে তারা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছেন।’ ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান তাদের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলছে, মিয়ানমারে গতবছর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা শুরুর ঠিক আগে ফেসবুকে ‘হেট স্পিচ’ বা ঘৃণামূলক বিবৃতি পোস্ট করা শুরু করেছিলো।
শীর্ষস্থানীয় অনলাইন বিশ্লেষক রেমন্ড সেরাটোকে উদ্ধৃত করে গার্ডিয়ান লিখছে, গতবছর অগাস্টে যখন নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালাতে শুরু করে সেসময় ফেসবুকে রোহিঙ্গা বিরোধী একটি গ্রুপের সদস্যদের পোস্টিং ২০০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। ফেসবুকের ঐ গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৫৫,০০০। এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ সালে মিয়ানমারের ৫ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশ মানুষের কাছে ইন্টারনেট ছিল। কিন্তু মাত্র দু’বছরের ব্যবধানে ২০১৬ সালে মিয়ানমারে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৪০ লাখ। বিবিসি।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
২৬০ বার