বাঁশের ভেলায় করে শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়া
জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া::
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত লাউয়া নদী। এ নদীতে সারা বছরই পানি থাকায় ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুল,কলেজের শিক্ষার্থী,ব্যবসায়ী সহ প্রায় ১২হাজার মানুষ চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এই নদী পাড় হতে নৌকার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় নদী পারাপারের জন্য বাঁশের ভেলাই তাদের একমাত্র যোগাযোগের বাহন। আর যারা সাঁতার জানে না তাদের জন্যে সবচেয়ে আতঙ্কের নাম ভেলা ডুবি। প্রতিদিনই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এই ভেলার মাধ্যমেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করে বিদ্যালয়ের পাঠ গ্রহনের জন্য। ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড়া পাড়ের সময় এই নড়বরে বাঁশের ভেলা ডুবো ডুবো অবস্থায় থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের অভিবাবকগন ¯ু‹লে পাঠিয়ে সারাক্ষনেরই থাকে আতœংকের মধ্যে। এই নদীটিতে একটি ব্রীজ না থাকায় ফলে দিন দিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ইউনিয়নবাসীদের। তবে নদীটির উপর একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ঠরা জানিয়েছেন।
বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন,যাতায়াতের জন্য অনেক শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। অনেক সময় ভেলা ডুবে বই খাতা ভিজিয়ে সাঁতার কাটতে হয় শিক্ষার্থীদের। যোগাযোগের জন্য অন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয়রা যাতায়াতের জন্য একটি বাঁশের ভেলার ব্যবস্থা করেছে। আর এই বাঁশের ভেলা দিয়েই ইউনিয়নবাসী নদী পারাপার হয়ে উপজেলা সদরে ও জেলা সদরে আসেন। মাননীয় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে ব্রীজের অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ইউনিয়নবাসীর। তাই এই নদীতে ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানান তারা।
আরো জানা যায়,লাউয়া নদীর পাড়েই বীরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। শুধু মাত্র ব্রীজ নির্মাণের অভাবে শিক্ষার্থীসহ সবাই জীবনবাঁজি রেখে যাতায়াত করে হয় প্রতিদিন। এছাড়াও শিক্ষার্থী ছাড়া প্রাপ্ত বয়স্ক তিন-চার জন লোক ভেলায় উঠলেই ডুবো ডুবো হয়ে পড়ে বাঁশের ভেলা। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি উঠলেই ঘটছে দুর্ঘটনা। তখন সাঁত রিয়ে পাড় হতে হয় ১২০ফুটের এই নদী। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে লাউয়া নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবীর প্রেক্ষিতেই সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
পূর্ব বীরগাঁও স্টুডেন্ট ফোরামের সভাপতি মোঃ জাহিনুল হক বলেন,একটি ব্রীজের জন্যে ইউনিয়নের প্রায় ১২হাজার মানুষ যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। একটি মাত্র নড়বরে বাঁশের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। নদীর উপরে একটি ব্রীজ নির্মাণের জন্য র্দীর্ঘদিন ধরে দাবি তুলে আসছি। তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজ মিয়া বলেন,নদীর কারনে প্রায় দিন অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। অনেক দিন নদীর পারাপার হতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বই খাতা ভিজে নদীর পানিতে সাঁতার কাটতে হয়। যারা সাঁতার জানে না তাদের জন্যে সবচেয়ে আতঙ্কের নাম ভেলা ডুবি। দায়িত্বশীলদের উদাসীনতা ও জনপ্রতিনিধির তৎপরতার অভাবে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও নদীর উপরে ব্রীজ নির্মান হচ্ছে না। ইউপি চেয়ারম্যান নূর কালাম জানান,লাউয়া নদীতে ব্রীজ নির্মাণের জন্য অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বরাবরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আসা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ হবে’। ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তাবনার কথা নিশ্চিত করে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান জানান,স্থানীয় চেয়ারম্যান প্রস্তবনা পাঠিয়েছে। আর এই প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতেই ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে বর্তমান সরকার থাকাকালীন অবস্থায় লাউয়া নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ করা হবে।