বাংলাদেশের প্রথম যোগাযোগ উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু-১’ স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত ২টা ১৪ মিনিটে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে মার্কিন কোম্পানি স্পেসএক্স-এর সর্বাধুনিক রকেট ফ্যালকন-৯ স্যাটেলাইটটি নিয়ে কক্ষপথের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বিবিসি বাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘স্যাটেলাইটটি সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে এবং গ্রাউন্ডে সিগন্যালও পাঠিয়েছে।’ খবর বিবিসির।

ফ্লোরিডার স্বচ্ছ আকাশে প্রায় সাত মিনিট স্যাটেলাইটটি দেখা যায়। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সহ বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রত্যক্ষ করেন। ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপণ প্রত্যক্ষকারী আইসিটি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু-১’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সময়োপযোগী উদ্যোগও যার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিশন রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বহু বাংলাদেশিও এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সরাসরি সম্প্রচার ও ওয়েবকাস্ট প্রত্যক্ষ করেন। এর আগে শুক্রবার ভোররাতে এটি উৎক্ষেপণের সমস্ত আয়াজন চূড়ান্ত হলেও শেষ মুহুর্তে উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়। স্পেসএক্স তখনই জানায়, শনিবার এটি উৎক্ষেপণের জন্য একাধিক টিমের কাজ অব্যাহত রয়েছে। এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃত্রিম উপগ্রহের অধিকারী বিশ্বের ৫৭তম দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। উপগ্রহটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আবহাওয়া পূর্বাভাস এবং পর্যবেক্ষণে দেশের সক্ষমতা বাড়াবে। উপগ্রহটি থেকে সার্ক দেশগুলোর পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং কাজাকিস্তানের একটি অংশ এর সুযোগ নিতে পারবে। এই স্যাটেলাইট প্রথমে ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর উৎক্ষেপণের কথা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ইরমার কারণে এর উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হয়। বিটিআরসি ২০১৫ সালের নভেম্বরে দেশের প্রথম এ স্যাটেলাইট নির্মাণের জন্য ফ্রান্সের থালেস এলিনিয়া স্পেস ফ্যাসিলিটিস কোম্পানির সঙ্গে ২৪৮ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে। কোম্পানিটি কয়েক মাস আগে স্যাটেলাইটটির তৈরির কাজ সম্পন্নের পর এটি ফ্রান্সের ক্যানেস ওয়্যারহাউজে রাখা হয়। পরে ২৯ মার্চ এ স্যাটেলাইট ফ্লোরিডায় স্থানান্তর করা হয়। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য বাংলাদেশ ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ার স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারস্পুটনিক’ এর কাছ থেকে ২ কোটি ৮০ লাখ ডলারে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায় (স্লট) কক্ষপথ স্লট ক্রয় করে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn