বাংলাদেশ থেকে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলেন জার্মান তরুণী
পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন সুইন্ডে উইদারহোল্ড। ভ্রমণপ্রিয় এই শিক্ষার্থী গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন ফটোগ্রাফি শিখতে। প্রখর রোদ আর গরম উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে তুলেছিলেন চমৎকার সব ছবি। কিন্তু রাখতে পারলেন না। বাংলাদেশসহ আরও কিছু দেশ ভ্রমণের ছবি রাখা দু’টি হার্ডডিস্ক ও ল্যাপটপ ছিনতাই হয়ে গেছে গত বৃহস্পতিবার। দীর্ঘদিনের অমূল্য সব স্মৃতির স্মারক হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে শুক্রবার ঢাকা ত্যাগ করেছেন এই জার্মান তরুণী। সুইন্ডের বন্ধু শশাঙ্ক সাহা জানান, গত জানুয়ারিতে ধানমন্ডির পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটে ফটোগ্রাফি কোর্স করতে ঢাকায় আসেন সুইন্ডে। তিনি চট্টগ্রামে জাহাজভাঙা শিল্প, সুন্দরবন, কুয়াকাটাসহ অনেক জায়গায় প্রচুর ছবি তুলেছিলেন। সেই ছবিগুলো বিভিন্ন বন্ধুর কম্পিউটারে জমা ছিল। বুধবার রাতে শংকর বাসস্ট্যান্ডের কাছে এক বন্ধুর বাড়িতে অন্য বন্ধুসহ রাতে থেকে তিনি সব ছবি তাঁর হার্ডডিস্কে স্থানান্তর করেন। ভোরবেলা এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালের অস্থায়ী আবাসে ফিরতে তিনি একটি রিকশা ভাড়া করেন। রিকশাটি জিগাতলা পার হয়ে সীমান্ত স্কয়ারের ফটকে আসামাত্র একটি সাদা গাড়ি থেকে তাঁর ব্যাগটি টান দিয়ে নিয়ে যায়। ওই ব্যাগে তাঁর ল্যাপটপ, ক্যামেরা, ক্রেডিট কার্ড এবং তাঁর দুটি হার্ডডিস্কসহ অন্যান্য জিনিস ছিল। গাড়ির নম্বরপ্লেট বাংলায় থাকায় সুইন্ডে সেটি বুঝতে পারেননি। রিকশাচালকও সেটি খেয়াল করেননি। শশাঙ্ক বলেন, সুইন্ডে তাঁর বন্ধুদের জানিয়েছেন, তাঁর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাঁর দুটি হার্ডডিস্ক। দীর্ঘ সময় কষ্ট করে তোলা ছবি এতে রয়েছে। এ দুটি হার্ডডিস্কের জন্য বৃহস্পতিবার সারা দিনই কেঁদেছেন এই নারী। তাঁকে কিছু খাওয়ানোও যায়নি। শুক্রবার ভোরবেলা তাঁকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়ে আসেন বন্ধুরা। ঘটনার পর সুইন্ডে তাঁর ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘একটি ঘটনা পুরো বাংলাদেশ ভ্রমণে অভিজ্ঞতাটি কালো মেঘে ঢেকে দিল। না, এটা (বাংলাদেশ) ভ্রমণের জন্য নিরাপদ নয়। একা ভ্রমণ না করাই ভালো।…আমি কেবল একটি কথাই বলতে পারি, দেখে-শুনে চলো, নিজের ক্ষেত্রে সাবধানে থেকো।…আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি বাংলাদেশ ছাড়ছি।’ এদিকে, এ ঘটনায় জড়িতদের এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পারভেজ ইসলাম জানান, তদন্ত চলছে। আমরা চেষ্টা করছি।