‘বিএনপি নির্বাচনে আসলে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকবে না’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপির নোংরা রাজনীতি করছে’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, নোংরা রাজনীতি বিএনপি করছে না। বিএনপি উদারপন্থী একটি রাজনৈতিক দল। এ দলে সাম্প্রদায়িকতার লেশমাত্র নেই। বরং আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে।১৯৭২ সাল থেকে তারা নোংরা রাজনীতি করছে, সেই বাকশাল থেকে শুরু করে বিশেষ ক্ষমতা আইন, সংবাদপত্রে স্বাধীনতা হরণ, জরুরি আইন জারি করে আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, বিএনপির মানবতার পক্ষে কথা বলছে। লজ্জা হয় আজকে যখন আমাদের সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে টনক নড়ছে না। তখন আমেরিকা থেকে বিবৃতি দেয়, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তুরস্ক থেকে ফার্স্ট লেডি বাংলাদেশে চলে আসেন। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে শৃঙ্খলিত একটি দল। তাই তারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এসময় তিনি বিএনপি প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। শেখ হাসিনা নানা অজুহাতে বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন করতে চায়।হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মত হবে না, হতে দেওয়া হবে না। নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকার ও সহায়ক সরকারের অধীনে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিক্যিসা শেষে দেশে ফিরে সময় মত সহায়ক সরকারের রূপরেখে দিবেন। এবং সহায়ক সরকারে দাবি আদায় করে বিএনপি নির্বাচনে যাবে।দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আগামী দিনে দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায় করতে না পারলে আমাদের (বিএনপি) অবস্থা রোহিঙ্গাদের চেয়ে করুণ পরিণত হবে। কেননা জিয়াউর রহমান দেশে যদি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ না নিয়ে আসতেন তাহলে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মতো আজ বাংলাদেশেও জাতিগত কিলিং হতে পারতো।নিজে নিজেকে সুস্থ মনে করেন কী না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রতি প্রশ্ন রাখেন তিনি।
জনগণ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আগামী দিনে জনগণ তাদের হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনবে মন্তব্য করে দলের আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে ভোটাধিকার দিতে ভয় পায়। তাদের আশঙ্কা দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জনগণ বিএনপিকেই রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করবে।আওয়ামী লীগকে পালানোর দল আখ্যা দিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, জনগণ শেখ মুজিবকে ম্যান্ডেট দিয়েছিল কিন্তু তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেননি। ঘোষণা দেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। আর তাই শেখ মুজিব একজন দায়িত্বপূর্ণ নেতা হওয়ার পর যেদিন তার মৃত্যু হয় সে দিন তাদের অন্য কোনো নেতা ঘর থেকে বের হননি। পক্ষান্তরে জিয়াউর রহমানের জানাজায় লোক লোকের সমাগম ঘটে।তিনি বলেন, বিএনপি কোনো শূন্যস্থান পূরণ করতে আসে নাই। বরং ফ্যাসিবাদ একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের পদদলিত চেতনাকে প্রতিষ্ঠাতা করতেই বিএনপির জন্ম। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত যত গুলো ভালো কাজ করা হয়েছে এর সবকিছুতেই বিএনপির অবদান। আর যত গুলো খারাপ কাজ করা হয়েছে সে গুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত আওয়ামী লীগ।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সকল দলের অংশগ্রহণের জন্য গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী ক্ষেত্র প্রতিষ্ঠায় সকল স্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করার আহ্বানও জানান বিএনপির এই নেতা।মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন. মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান প্রমুখ। আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন দলটির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।