লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রূপা হক বলেন, যে স্টাফকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল ইতোমধ্যে সেখান থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এখানে একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন আছে… মুসলিম এমপিদের এমন ঘটনার মুখোমুখি হওয়া কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এরইমধ্যে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে এমন মুসলিমবিদ্বেষী চিঠি ছড়িয়ে পড়েছে। একই ধরনের চিঠি দিয়ে প্রচারণা চলছে অনলাইনেও। এ নিয়ে যুক্তরাজ্যজুড়ে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রেরিত চিঠিকে ‘বিদ্বেষের প্রতিনিধি’ বলে আখ্যা দিয়েছে পুলিশ। এরইমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তাদের সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট। মুসলিমবিদ্বেষ পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত একটি সংস্থার দাবি, এর সঙ্গে স্থানীয় একটি চিঠি-পার্সেল আদান-প্রদান সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের সংযোগ রয়েছে।

৩ এপ্রিলকে ‘পানিশ অ্যা মুসলিম ডে’ ঘোষণা করে বিদ্বেষপ্রসূত চিঠিটি ছাড়া হয়েছে। ইংল্যান্ডের লন্ডন, ইয়র্কশায়ার ও মিডল্যান্ড এলাকার বাসিন্দারা এ ধরনের চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। অনলাইনে একই ধরনের একটি চিঠি ছড়ানো হয়েছে এ-ফোর সাইজ কাগজের ছবিতে। ছড়িয়ে পড়া চিঠিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর মৌখিক আক্রমণ, নারীর হিজাব খুলে ফেলা, শারীরিক আঘাত, মসজিদে হামলা ও অস্ত্র হিসেবে এসিড ব্যবহারের মাধ্যমে সহিংসতা ঘটানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। পয়েন্ট দিয়ে এসব কর্মকাণ্ডের পর্যায়ক্রমিক তালিকা তৈরি করে চিঠিতে বলা হয়েছে, সহিংসতায় অংশ নিলে পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া চিঠিতে পূর্ববর্তী বেশ কিছু মুসলিমবিরোধী বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ডের বিবরণ হাজির করা হয়েছে। কেন এসব কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তার ব্যাখ্যাও জুড়ে দেওয়া হয়েছে এতে। দেশব্যাপী মুসলিমবিরোধী চিঠি ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাজ্যের কাউন্টার টেরোরিজম কর্মকর্তারা। প্রেরিত চিঠিকে ‘বিদ্বেষের প্রতিনিধি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তারা। পশ্চিম ইয়র্কশায়ার পুলিশ বলছে, তাদের অনুরোধে যুক্তরাজ্যের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট এই তদন্ত সমন্বয় করছে। পুলিশ বলছে, তাদের কাছে এ ধরনের বেশ কয়েকটি চিঠি রয়েছে। এগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে উৎস জানার চেষ্টা চলছে। কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশ এই চিঠিকে সম্ভাব্য ঘৃণাবাদী কর্মকাণ্ড বলে বিবেচনা করছে।

পশ্চিম ইয়র্কশায়ার পুলিশের অ্যাসিসট্যান্ট চিফ কনস্টেবল এঞ্জেলা উইলিয়াম বলেছেন, ‘পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের বাস করা সম্প্রদায়ের মানুষদের আমি আশ্বস্ত করতে চাই, চিঠি পাঠানোর এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয়েছে। আমরা বুঝতে পারছি¤ তারা সম্ভবত উদ্বেগ তৈরি করে মানুষদের বিপর্যস্ত করে তুলতে চায়, বিশেষ করে যারা সমাজের স্পর্শকাতর অংশের সদস্য।’ তিনি বলেন, নাগরিক নিরাপত্তাকে আমরা অগ্রাধিকারে রেখেছি আর আমাদের সম্প্রদায়গুলোকে সজাগ হওয়ার আহ্বান জানাবো, তবে ভীত হতে নয়। যুক্তরাজ্যে মুসলিমবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত একটি সংস্থা মেজারিং অ্যান্টি মুসলিম অ্যাটাক-এমএএমএ। সংস্থাটির দাবি, চিঠির খাম থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছেন চিঠিগুলোর অন্তত একটি ইংল্যান্ডের দক্ষিণ ইয়র্কশায়ারের শেফিল্ড শহরের একটি চিঠি ও পার্সেল বিনিময়ের প্রতিষ্ঠান থেকে ছড়ানো হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn