বিমান দুর্ঘটনা:খুটিনাটি খবর
চারদিকে তখন আগুন, চিৎকার, ভয়াবহ অবস্থা
চারদিকে মানুষের চিৎকার। আগুন গ্রাস করছে সবাইকে। মানুষ পুড়ছে। চিৎকার করছে। আগুনের শিখার কাছে পরাস্ত হয়ে পড়ে যাচ্ছেন অনেকে। সে এক ভয়াবহ অবস্থা।সোমবার নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত বিমানে থাকা বাংলাদেশী শাহরীন আহমেদ (২৯) ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এ সব কথা বলছিলেন। তিনি আগুনে পুড়ে আহত হয়েছেন। এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে। সেখান থেকে তিনি নেপালের পত্রিকা দ্য হিমালয়ান টাইমসকে এসব কথা বলেছেন। ওই দুর্ঘটনা থেকে তিনি কোনোমতে জীবন বাঁচাতে পেরেছেন। ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন যখন তিনি, তখন তার চোখ থেকে অঝোরে ঝরছিল অশ্রু। তিনি বার বার কেঁপে কেঁপে উঠছিলেন। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। কাঠমান্ডু ও পোখরা ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তিনি। বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে আমি ভ্রমণ করছিলাম। বিমানটি অবতরণের পূর্বমুহূর্তে হঠাত বামদিকে মোড় নেয়। এ সময় যাত্রীরা সবাই চিৎকার শুরু করেন। আমরা পিছনে
তাকিয়ে দেখি বিমানে আগুন। আমার এক বন্ধু আমাকে সামনে দৌড়াতে বললো। আমরা দৌড় শুরু করতেই আমার ওই বন্ধুকে গ্রাস করলো আগুন। সে পড়ে গেল। এ সময় মানুষ পুড়ছিল। সবাই চিৎকার করছিল। আগুনের তাপে পড়ে যাচ্ছিল সবাই। জ্বলন্ত বিমান থেকে তিনজন মানুষ লাফিয়ে বেরিয়ে গেলেন। সে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। সৌভাগ্য যে, কেউ একজন আমাকে নিরাপদে বের করে নিলেন। বলতে বলতে আবারো কেঁদে ফেলেন শাহরীন। ডা. নাজির খান বলেছেন, তার ডান পায়ে বেশ খানিকটা অংশে ক্ষত হয়েছে। পুড়ে যাওয়া স্থানে ফোলা কমে গেলেই আমরা তার অপারেশন করবো। তার শরীরের পিছন দিকের শতকরা ১৮ ভাগ পুড়ে গেছে। ওই বিমানটিতেই আরেকজন বাংলাদেশী মেহদি হাসান প্রথমবারের মতো বিমানে সফর করছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী, এক কাজিন ও ওই কাজিনের এক মেয়ে। মেহেদি হাসান বলেছেন, আমার সিটটি ছিল বিমানের পিছন দিকে। আগুন দেখেই আমি আমার পরিবারের লোকজনের অবস্থা জানার চেষ্টা করলাম। জানালা ভাঙ্গার চেষ্টা করলাম। আমরা অপেক্ষায় রইলাম যে, কেউ আমাদেরকে উদ্ধার করতে আসে কিনা। আমি ও আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু আমার কাজিন ও তার মেয়ে নিখোঁজভ কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ এন্ড টিচিং হাসপাতালে জীবিত যে ১২ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম শাহরীন ও মেহেদি হাসান। ওই হাসপাতালে নেয়া আরো চারজনকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে গ্রান্ডে ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল, নিউরো হাসপাতাল ও নেপাল মিডিসিটি হাসপাতালে।
ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
নেপালের কাঠমাণ্ডুতে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ছয় সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। বিমান দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় এ তদন্ত কমিশন গঠন করেছে নেপাল সরকার। তদন্ত কমিশনের ছয় সদস্য হলেন, যজ্ঞ প্রসাদ গৌতম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. রাজীব দেব, ক্যাপ্টেন কে কে শর্মা, সুনীল প্রধান এবং উদ্ধব প্রসাদ সুবেদী, বুদ্ধি সাগর লামিছানে। সাবেক সচিব যজ্ঞ প্রসাদ গৌতম এই কমিশনের নেতৃত্ব দিবেন। আজ মঙ্গলবার থেকে এই কমিশন তদন্ত কাজ শুরু হবে। নেপালের জনসংখ্যা ও পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী লালবাবু পণ্ডিত জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে তদন্ত কমিশনকে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সিগন্যাল না পেয়ে আকাশেই ঘুরপাক আধা ঘণ্টা
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে সিগন্যাল না পাওয়ায় প্রায় আধঘণ্টা আকাশেই ঘুরছিল ইউএস বাংলা বিএস২১১ বিমানটি। রানওয়ে ০২-এ অবতরণের চেষ্টা করছিলেন বিমানের ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান। তবে বারবারই কন্ট্রোল রুম থেকে বিমানটিকে অবতরণের জন্য নিষেধ করা হচ্ছিল। বারবার বলা হচ্ছিল, ‘হোল্ড।’ পাইলট আবিদ সুলতান বলছিলেন, ‘আমি ডান দিকে যাচ্ছি।’ ঘুরতে থাকা সময়ের ২৫ মিনিটের শেষ দিকে এটিসি থেকে বলা হচ্ছিল, ‘রানওয়ে ক্লোজড।’ একপর্যায়ে কোনো উপায় না পেয়েই বিমানটি অবতরণ করাতে বাধ্য হন পাইলট। সিভিল এভিয়েশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, নেপালের এটিসি সিস্টেম পৃথিবীর সবেচেয়ে দুর্বল। কেবল এ কারণে গত সাত বছরে ১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। গতকালও বিমানটি সিগন্যাল না পেয়ে প্রায় আধঘণ্টা আকাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল। জানা গেছে, গতকাল ইউএস বাংলা বিএস২১১ বিমানের ক্যাপ্টেনের দায়িত্বে ছিলেন আবিদ সুলতান ও ফার্স্ট অফিসার পৃথুলা রশীদ। কেবিন ক্রু হিসেবে ছিলেন মো. শাফী কাউজা হোসেন ও শারমীন আক্তার। তবে একটি সূত্র বলছে, বিমানটিতে রাইডিং ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন না। ৬৭ জন যাত্রী নিয়ে বেলা ১২টা ৫১ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানটি ছেড়ে যায়। যাত্রীদের মধ্যে নেপালি ৩৩ জন, বাংলাদেশি ৩২ জন, মালদ্বীপের একজন ও চীনা নাগরিক ছিলেন একজন। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী ৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ইউএস বাংলার মোট আটটি বিমান আছে। এর মধ্যে চারটি ড্যাশ এইট এবং চারটি বোয়িং। একটি ড্যাশ এইট নষ্ট থাকার কারণে কিছুদিন ধরে হ্যাঙ্গারে পড়ে রয়েছে। দেশের বিভিন্ন গন্তব্য ছাড়াও কলকাতা, কাঠমান্ডু, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, দোহা ও মাসকট রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে ইউএস বাংলা। এ ছাড়া এপ্রিলে চীনের গুয়াংঝু শহরে ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারা।
পাইলটকে ভুল নির্দেশ দেয়ার তথ্য উদঘাটন
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত বিমানের পাইলটকে অবতরণের ভুল নির্দেশনা দেয়া হয় বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম থেকে। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার আগ মুহূর্তে বিমানের পাইলটের সঙ্গে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ কথোপকথনে এমনই আভাস মিলেছে।নেপালের ইংরেজি দৈনিক নেপালি টাইমস কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে পাইলটের সর্বশেষ কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড হাতে পেয়েছে। নেপালি এ দৈনিক বলছে, কন্ট্রোল রুম থেকে ভুল বার্তা দেয়ার কারণেই ককপিটে দ্বিধায় পড়েন পাইলট।অডিও রেকর্ডের শুরুতে শোনা যায়, কন্ট্রোল রুম থেকে বিমানের পাইলটকে বিমানবন্দরের ডানদিকের দুই নাম্বার রানওয়েতে অবতরণের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। পরে পাইলট বলেন, ঠিক আছে স্যার। নির্দেশনা অনুযায়ী পাইলট বিমানটি বিমানবন্দরের ডানদিকে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান কন্ট্রোল রুমে।কিন্তু ডানদিকে রানওয়ে ফ্রি না থাকায় তিনি আবারো কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় তাকে ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়। এবারে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি বর্তমান অবস্থানে থাকতে পারবেন?এ সময় পাইলট দুই নাম্বার রানওয়ে ফ্রি করার জন্য কন্ট্রোল রুমের কাছে অনুরোধ জানান। কিন্তু তাকে আবারো ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর পাইলট বলেন, স্যার আমি আবারো অনুরোধ করছি রানওয়ে ফ্রি করুন। এর পরপরই বিমানটি বিকট শব্দ করতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই বিমানটি ত্রিভুবণ বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে আঁছড়ে পড়ে।এদিকে, বিধ্বস্ত বিমানটির নেপালি এক যাত্রী বলেছেন, ঢাকা থেকে স্বাভাবিকভাবেই বিমানটি উড্ডয়ন করে। কিন্তু কাঠমান্ডুতে অবতরণের সময় এটি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে।‘হঠাৎ বিমানটি ঝাঁকুনি দিতে শুরু করে এবং এরপরই উচ্চ শব্দ হয়। আমি জানালার পাশেই বসে ছিলাম। জানালার কাঁচ ভেঙে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হই।’ সোমবার নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে ৭১ আরোহীবাহী নিয়ে বাংলাদেশি বেসরকারি এ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে সর্বশেষ ৫০ জনের প্রাণহানির তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে আরো ২১ যাত্রী।
হানিমুন করা হল না আঁখি-হাসানের
নেপালে হানিমুন করতে গিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রুপসদী গ্রামের পেশকার মিয়ার মেয়ে আঁখিমনি ও তার স্বামী আমেরিকা প্রবাসী মেহেদী হাসান বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। নেপাল সরকারের দেয়া মৃতদের তালিকার ৩৭ ও ৩৮ নাম্বার সিরিয়ালে রয়েছে এই হতভাগ্যদের নাম।জানা যায়, চলতি মার্চ মাসের ৩ তারিখে তাদের বিয়ে হয়েছিল। আঁখিমনির স্বামী মেহেদীর বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বাতাকান্দি গ্রামে। নবদম্পত্তি বিয়ের পর উঠেছিল ঢাকার ধানমন্ডির একটি নতুন ফ্লাটে। আঁখিমনিদের গ্রামের বাড়ি উপজেলার রুপসদীর দক্ষিণপাড়ার সরকার বাড়ি।
পেশকার মিয়ার পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাদের মেয়ে আঁখিমনি মাষ্টার্স পাশ করে পরিবারের সম্মতিতে ৩ মার্চ বেশ ধূমধাম করে বিয়ে হয়। মেয়ের ইচ্ছে অনুযায়ী হিমালয়কন্যার দেশ নেপালে যাওয়ার জন্য গত সপ্তাহে টিকিট বুকিং দেয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বিমানে। পরিবারের লোকজন তাদের গতকাল সকাল ১১টায় এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিয়ে আসে। যাবার সময় কী এক অজানা আশঙ্কায় আঁখিমনি বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিলেন। সেই অজানা আশঙ্কায়ই যেন সত্যি হল! এমন দুর্ঘটনায় আঁখিমনির বাবা-মা এখন মেয়ের শোকে পাগলপ্রায়। মেয়ের টানে আজ সকাল নেপালের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছেন আঁখিমনির বাবা। নবদম্পত্তির রুহের শান্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন আঁখিমনির পরিবার।
বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা হলো না শ্রেয়ার
নাম শ্রেয়া ঝাঁ। বয়স ২৪। সহপাঠী ও সিনিয়রদের ভাষায়, বাংলাদেশের কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করতে নেপাল থেকে আসা মেয়েটি হাসিখুশী, প্রাণবন্ত, মেধাবী, সাংস্কৃতিকমনা ও ভীষণ রকম সুন্দর মনের অধিকারী। এমবিবিএস শেষ বর্ষের ছাত্রী ছিল সে। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস পড়াশোনা শেষ করে দেশের মানুষের সেবা করার ইচ্ছেটা তার পূরণ হলো না আর। কুমুদিনী মেডিকেল কলেজের প্রফেসর সূত্রে শ্রেয়া ঝাঁ’র নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।গতকাল ঢাকা থেকে নেপালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা ইউএস- বাংলা এয়ারলাইন্সের দুর্ঘটনায় নিভে গেল এই প্রদীপ। নেপাল স্থানীয় সময় দুপুর ২ টার দিকে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণকালে পাশের একটি মাঠে ইউএস-বাংলার বোমবার্ডিয়ার ড্যাশ ৮ কিউ ৪০০ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী গতকালকের এই দুর্ঘটনায় ৬৭ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রুসহ মোট ৭১ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি জানা গেছে। এদিকে শ্রেয়া ঝাঁ’র এই অকাল মৃত্যুতে মির্জাপুর কুমুদিনী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের মাঝে শোক বিরাজ করছে। প্রাতিষ্ঠানিক ছুটি না থাকলেও শ্রেয়া তার বাবা-মায়ের সাথে দেখা করার ব্যকুলতায় ছুটি নিয়েছিল নিজ মাতৃভুমি নেপাল যাওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু কে জানতো এটাই শ্রেয়ার শেষ ছুটি, কে জানতো আর কখনোই বাবা-মায়ের সাথে দেখা হবেনা তার!
চিকিৎসক হলেও সেবা দেয়া হলো না পিয়াসের
একমাত্র ছেলে পিয়াস রায়কে হারিয়ে নগরীর নতুন বাজার এলাকার গফুর সড়কের মধুকাঠি ভবনের বাসিন্দা সুখেন্দ্র বিকাশ রায় ও পূর্ণিমা রায় বাকরুদ্ধ। ভাইকে হারিয়ে বোন শোকে স্তব্দ। নেপালের কাঠমা-ুতে ইউএস বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় পিয়াস রায়সহ অর্ধশতাধিক যাত্রী নিহত হয়েছে। গোপলগঞ্জের সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস চুড়ান্ত পর্বের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন পিয়াস। পরীক্ষা শেষে নেপালে ভ্রমণে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন তিনি। পিয়াসের বাবা সুখেন্দ্র নলছিটির চন্দ্রকান্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মা পূর্ণিমা বরিশাল সরকারি পলিটেকনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পিয়াসের ছিল বিশ^ ঘুরে দেখার নেশা। এর আগেও বিভিন্ন দেশ ঘুরেছে সে। এমবিবিএস’র ফাইনাল পরীক্ষা দেয়ার পর তাই নেপাল ভ্রমণে যায় সে। গত রোববার রাতে নগরী থেকে লঞ্চযোগে ঢাকা যায়। নৌ-বন্দরে এগিয়ে দিতে গিয়ে শেষবারের মতো দেখা হয় বাবা-মায়ের সঙ্গে। গতকাল সোমবার ইউএস বাংলার ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে নেপালের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। বিকালে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে নেপালের বিমান দুর্ঘটনার কথা। বেসরকারি একটি টেলিভিশনে পিয়াসের ছবি দেখানো হয়েছে বলে পরিবারের এক সদস্য দাবি করে। পিয়াস দুই ভাইবোনের মধ্যে বড়। নেপালের রাজধানী কাঠমা-ুতে ইউএস বাংলার প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত পিয়াস রায়ের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের মধুকাঠি গ্রামে।
নিহতদের মধ্যে ২ জন চাঁপাইনবাবগঞ্জের
নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশীদের মধ্যে ২ জনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের বেগুনবাড়ী গ্রামে। তারা হলেন ওই গ্রামের মৃত আব্দুর রহিম মাষ্টারের ছেলে নজরুল ইসলাম (৬৫) ও তার স্ত্রী আকতারা বেগম (৬০)। নিহত নজরুল অবসরপ্রাপ্ত রাজশাহী শিল্প ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী রাজশাহী মহিলা কলেজের অবসরপ্রাপ্ত ক্রীড়া শিক্ষক ছিলেন। তাদের ২টি কন্যা সন্তান রয়েছে। বর্তমানে তারা রাজশাহী মহানগরীর উপশহর এলাকায় বসবাস করছিলেন। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ইউএস বাংলা বিমানযোগে গতকাল তারা নেপাল যাচ্ছিলেন বলেন স্বজনরা নিশ্চিত করেছেন।তাদের লাশ সনাক্তের জন্যে নজরুলের শ্যালক ডা. ময়েন নেপাল গেছেন।
পাইলট আবিদ ও ৩ কো-পাইলট মারা গেছেন
নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে গতকাল বিধ্বস্ত হয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান। এর পাইলট আবিদ সুলতান ও তিনজন কেবিন ক্রুও মারা গেছেন। ওই তিনজন ক্রু হলেন কো-পাইল পৃথুলা রশিদ, খাজা হোসেন মোহাম্মদ শফি ও শামিম আখতার। নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার রাজকুমার ছেত্রী এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি ডেইলি স্টারকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। এর আগে পাইলট আবিদ হাসানের পরিবার তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে।পরে ইউএস-বাংলার জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম তার মৃত্যুর খবর সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। সোমবারের ওই বিমান দুর্ঘটনায় বাংলাদেশী সহ কমপক্ষে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। রাজকুমার ছেত্রী বলেছেন, গতকাল ইউএস-বাংলার ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর পরই সব ক্র মারা গেছেন। তবে তারা ঘটনাস্থলেই নাকি হাসপাতালে মারা গেছেন তা নিশ্চিত করতে পারেন নি তিনি। তিনি আরো জানিয়েছেন, এখন যেসব বাংলাদেশী জীবিত আছেন তার মধ্যে তিন থেকে চার জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
১০ নেপালিকে বাঁচাতে জীবন দিলেন প্রিথুলা
নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বিমানটির বাংলাদেশি কো-পাইলট প্রিথুলা রশিদ। নিজের জীবনের বিনিময়ে বিমানটির ১০ নেপালি যাত্রীকে বাঁচিয়েছেন তিনি। ইউএস-বাংলার প্রথম নারী পাইলট প্রিথুলা নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ২টা ১৮ মিনিটে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার সময় ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ মডেলের উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। এতে বিমানটিতে থাকা ৭১ আরোহীর মধ্যে অন্তত ৫০ জন মারা যান। এর মধ্যে পাইলট আবিদ সুলতান, কো-পাইলট প্রিথুলা রশিদ ও ক্রু খাজা হোসেন রয়েছেন। অন্যদিকে বেঁচে আছেন ক্রু কে এইচ এম শাফিসহ ২২ জন। দুর্ঘটনার পর সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে ‘সিকিম ম্যাসেঞ্জার’ নামে একটি পেজে প্রিথুলার মহানুভবতার কথা তুলে ধরে বলা হয়, ‘আজ নেপালি নাগরিকদের বাঁচাতে গিয়ে বাংলাদেশি কন্যা তার নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে কাঠমান্ডুতে আজ এই বাংলাদেশি তরুণী পাইলট মারা গেছেন। তার নাম মিস প্রিথুলা রশিদ। তিনি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের (ফ্লাইট বিএস২১১) কো-পাইলট ছিলেন। যেটি আজ নেপালের কাঠামান্ডুতে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়েছে। যাই হোক, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ১০ নেপালি নাগরিককে রক্ষার চেষ্টা করে গেছেন। যাদের সবাই জীবিত আছেন।’
প্রিথুলার ফেসবুক পাতা থেকে জানা যায়, তিনি ২০১৬ সালের জুলাই মাস থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যুক্ত। নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার পর তিনি আরিরাং এভিয়েশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বিমান চালনার ওপর ডিগ্রি নেন। ফেসবুকের শেষ স্ট্যাটাসে প্রিথুলা লিখেছিলেন- খোদা হাফেজ। ইথিওপিয়া বিমানবন্দরে গত ১৮ জানুয়ারি দেয়া ওই স্ট্যাটাসের পর তিনি আর কোনো স্ট্যাটাস লেখেননি। ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবার বুলে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে বাংলাদেশে আসার সময় তিনি এ স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। এর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি আর কোনো স্ট্যাটাস দেননি। এর পর তিনি শুধু (গত ৩ ফেব্রুয়ারি) তার প্রিয় বিড়ালকে কোলে নিয়ে একটি ছবি পোস্ট করেন।
বিমানের ‘ব্ল্যাক বক্স’ আসলে কী?
নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হয়ে ৪৯জন মারা গেছে। নেপালি কর্তৃপক্ষ বলছে, ফ্লাইট ২১১কে রানওয়ের দক্ষিণ দিক থেকে অবতরণ করতে বলা হলেও পাইলট উত্তর দিক থেকে অবতরণ করে।তবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স নেপালি কর্তৃপক্ষের দাবী অস্বীকার করে বলেছে, কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে পাইলটকে ভুল নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।বিমানের ‘ব্ল্যাক বক্স’ উদ্ধার করা হয়েছে- এটি এমন একটি যন্ত্র যাতে ককপিটের যাবতীয় কথাবার্তা এবং বিমানের কারিগরি তথ্য রেকর্ড করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘ব্ল্যাক বক্সে’র তথ্য যাচাই করেই দুর্ঘটনার কারণটি জানা যাবে।
ব্ল্যাক বক্স কী?
প্রথমেই বলা ভালো, ব্ল্যাক বক্স নামে ডাকা হলেও এর আসল নাম হলো ফ্লাইট রেকর্ডার। যেটি বিমান চলাচলের সর্বশেষ সব তথ্য রেকর্ড করে রাখে। এভিয়েশন বা বিমান নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা কিন্তু এটিকে ব্ল্যাক বক্স নামে ডাকেন না, তারা বলেন ফ্লাইট রেকর্ডার। নামে ব্ল্যাক বক্স কিন্তু আসলে কালো কোন বস্তু নয়।বরং এর রং অনেকটা কমলা ধরণের। এটি অত্যন্ত শক্ত ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি একটি বাক্স, যা পানি, আগুন, চাপ বা যেকোনো তাপমাত্রায় টিকে থাকে।এটি দুইটি অংশের সমন্বয়ে আসলে একটি ভয়েস রেকর্ডার। বিমান চলাচলের সময় সব ধরণের তথ্য এটি সংরক্ষণ করে রাখে। এর মধ্যে দুই ধরণের তথ্য সংরক্ষিত থাকে। একটি হলো ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার বা এফডিআর, যেটি বিমানের ওড়া, ওঠানামা, বিমানের মধ্যের তাপমাত্রা, পরিবেশ, চাপ বা তাপের পরিবর্তন, সময়, শব্দ ইত্যাদি নানা বিষয় নিজের সিস্টেমের মধ্যে রেকর্ড করে রাখে। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) নামের আরেকটি অংশে ককপিটের ভেতর পাইলদের নিজেদের মধ্যের কথাবার্তা, পাইলটদের সঙ্গে বিমানের অন্য ক্রুদের কথা, ককপিট এর সঙ্গে এয়ার কন্ট্রোল ট্রাফিক বা বিভিন্ন বিমান বন্দরের সঙ্গে রেডিও যোগাযোগের কথা রেকর্ড হতে থাকে। ফলে কোন বিমান দুর্ঘটনায় পড়লে এই ব্ল্যাক বক্সটি খুঁজে বের করাই হয়ে পড়ে উদ্ধারকারীদের প্রধান লক্ষ্য। কারণ এটি পাওয়া গেলে সহজেই ওই দুর্ঘটনার কারণ বের করা সম্ভব হয়।বাক্সটির বক্স উজ্জ্বল কমলা হওয়ায় সেটি খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। সমুদ্রের তলদেশেও ৩০দিন পর্যন্ত ব্লাক বক্স অক্ষত থাকতে পারে।
ব্ল্যাক বক্সের আবিষ্কার
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এ ধরণের যন্ত্র তৈরির উদ্যোগ প্রথম নেয়া হয়। তবে সত্যিকারের ব্ল্যাক বক্সের কাজ শুরু হয় ১৯৫০এর দশকের গোড়ার দিকে। অস্ট্রেলীয় সরকারের এয়ারোনটিকাল রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে কেমিস্ট ডেভিড ওয়ারেন এটি আবিষ্কার করেন। ১৯৬২ সালের ২৩শে মার্চ প্রথম অস্ট্রেলিয়ার একটি বিমানে পরীক্ষামূলক ভাবে এটির ব্যবহার করা হয়।
দুর্ঘটনার পরেও কিভাবে টিকে থাকে ব্ল্যাক বক্স?
এটি অত্যন্ত শক্ত ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি করা হয়। কয়েকটি লেয়ার দিয়ে এটি এমনভাবে তৈরি করা হয় যে, প্রচণ্ড উত্তাপ, ভাঙচুর, পানি বা প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও সেটি টিকে থাকতে পারে।স্টেইনলেস স্টিল বা টাইটানিয়ামের খোলস দিয়ে বক্সের আবরণ তৈরি করা হয়। টিকে থাকার অনেকগুলো পরীক্ষায় পাস করার পরেই ব্ল্যাক বক্সগুলোকে বিমানে সংযোজন করা হয়।
ব্ল্যাক বক্স কিভাবে তথ্য পায়?
আধুনিক ব্ল্যাকবক্সগুলোয় ২৫ ঘণ্টা পর্যন্ত বিমানের ফ্লাইট ডাটা ধারণ করে রাখতে পারে। এর ভেতর অনেকগুলো মেমরি চিপ পাশাপাশি সাজানো থাকে। এখানে তথ্য সরবরাহ করার জন্য বিমানের বিভিন্ন জায়গায় অনেক সেন্সর লাগানো থাকে। এসব সেন্সর অনবরত বিমানের গতি, তাপমাত্রা, সময়, ভেতর বাইরের চাপ, উচ্চতা ইত্যাদি বিমানের সামনের দিকে থাকা ফ্লাইট ডাটা অ্যাকুইজিশন ইউনিট নামের একটি অংশে পাঠাতে থাকে। সেখান থেকে সেসব তথ্য চলে যায় ব্ল্যাক বক্সের রেকর্ডারে। পাইলট, কো পাইলট, ক্রুদের বসার কাছাকাছি জায়গায় অনেকগুলো মাইক্রোফোন বসানো থাকে। তাদের সব কথাবার্তা, নড়াচড়া বা সুইচ চাপা ইত্যাদি সব এসব মাইক্রোফোনে রেকর্ড হতে থাকে। সেগুলো এ্যাসোসিয়েটেড কন্ট্রোল ইউনিট নামের একটি ডিভাইসে পাঠায়। এরপর সেসব তথ্য ব্ল্যাক বক্সে গিয়ে জমা হয়।
কিন্তু ব্ল্যাক বক্সে কত তথ্য থাকে?
আসলে বিমান চলাচলের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্ল্যাক বক্স তথ্য সংরক্ষণ করে রাখে। মূলত শেষের দিকে তথ্য এটিতে জমা থাকে। একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর আগের তথ্য মুছে যেতে থাকে আর নতুন তথ্য জমা হয়। ফলে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সর্বশেষ তথ্য এটিতে পাওয়া যায়।
কিভাবে তথ্য উদ্ধার করা হয়?
ব্ল্যাক বক্সটি পাওয়ার পরেই বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী, বিমান সংস্থা, এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি দল তৈরি করা হয়। সেই সঙ্গে প্রযুক্তিবিদদের সমন্বয়ে তারা ব্ল্যাক বক্স থেকে তথ্য উদ্ধারের কাজটি শুরু করেন। বক্সের অবস্থার উপর নির্ভর করে কত তাড়াতাড়ি তথ্য পাওয়া যাবে। সেটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনেক সময় মাসের পর মাসও তথ্য উদ্ধারে সময় লেগে যায়। কারণ বিশেষজ্ঞদের খেয়াল রাখতে হয়, যাতে তথ্য উদ্ধার করতে গিয়ে কিছু মুছে না যায় বা মেমরি চিপগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
ব্ল্যাক বক্সের শক্তি
একেকটি ব্ল্যাক বক্সের পাওয়ার বা শক্তির যোগান দেয় দুইটি জেনারেটরের যেকোনো একটি। এসব সোর্স থেকে এই বক্সটি অব্যাহতভাবে শক্তির সরবরাহ পেয়ে থাকে।
ব্ল্যাক বক্সের নাম ব্ল্যাক বক্স কেন?
এটির সঠিক উত্তর আসলে কারো জানা নেই। অনেকে মনে করেন, আগে এটির রং কালো রঙের ছিল, তাই হয়তো তখন থেকে এর নাম ব্ল্যাক বক্স। আবার অনেকে বলেন, দুর্ঘটনার, মৃত্যু ইত্যাদির কারণে এটিকে ব্ল্যাক বক্স ডাকা হয়। অনেকের ধারণা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নতুন আবিষ্কৃত যেকোনো ধাতব প্রযুক্তিকে কালো রঙ দিয়ে ঢেকে রাখা হতো। এ কারণেও এটির নাম ব্ল্যাক বক্স হতে পারে।সূত্র: বিবিসি