জীবন-যাপনের মানের দিক দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট শহরের তালিকায় ফের স্থান করে নিয়েছে ঢাকা। বিশ্বের ২৩০ শহরের মধ্যে বসবাসের দিক দিয়ে ঢাকার অবস্থান ২১৪ নম্বরে। গত বছরের তুলনায় আরও ১০ ধাপ পিছিয়েছে শহরটি। বসবাসযোগ্য শহরের এ তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা। আর সবার নিচে রয়েছে ইরাকের রাজধানী বাগদাদ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক পরামর্শ সেবাদানকারী সংস্থা মার্সারের করা ‘এইটিনথ কোয়ালিটি অব লাইফ র‌্যাংকিং’ শীর্ষক তালিকায় এ তথ্য উঠে এসেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, জীবন-যাপনের মানের বিভিন্ন দিক বিবেচনায় প্রতিবছর বিশ্বের সেরা শহরের একটি তালিকা তৈরি করে মার্সার। চলতি বছরে এ তালিকার শীর্ষস্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা। নিউইয়র্ক, প্যারিস এবং লন্ডনের মতো শহরগুলো শীর্ষ ৩৫-এর মধ্যে নেই বলে জানানো হয়েছে। প্রতিবছরের মতো ২৩০টি শহরের ওপর চালানো এ জরিপে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা রয়েছে তালিকার একেবারে তলানির দিকে- ২১৪ নম্বরে।

গত বছরের তুলনায় ১০ ধাপ পিছিয়েছে ঢাকা। গত বছর শহরটির অবস্থান ছিল ২০৪ নম্বরে। আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার অনেক শহরের অবস্থান ঢাকার অনেক উপরে। শ্রীলংকার কলম্বো শহরটি তালিকায় ১৩২ নম্বরে স্থান করে নিয়েছে। ভিয়েনার সুগঠিত নগর কাঠামো, নিরাপদ রাস্তাঘাট আর ভালো গণস্বাস্থ্যসেবা শহরটিকে বসবাসের জন্য বিশ্বের সেরা শহরে পরিণত করে তুলেছে বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়। এ শহরের বাড়িঘরগুলো এখনও ঐতিহ্যের ছোঁয়া নিয়ে মাথা উঁচু করে আছে। শহরের বাসিন্দাদের একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশের নিশ্চয়তা দিচ্ছে নগর-উদ্যান। রয়েছে সাইকেল আরোহীদের জন্য বিশেষ রাস্তাঘাট। সম্প্রতি এ শহরের গণপরিবহনের ভাড়াও কমানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ভিয়েনায় বড় ধরনের অপরাধ নেই। শহরের বাসিন্দার সংখ্যা ১৭ লাখ। তা সত্ত্বেও বিশ্বের অন্যান্য শহরের তুলনায় এ শহর আশ্চর্য রকমের শান্ত।

বসবাসযোগ্যতায় শীর্ষ ১০ শহরে জার্মানির একাধিক শহরের নাম উঠে এসেছে। মিউনিখ, ডুসেলডর্ফ ও ফ্রাঙ্কফুর্টের অবস্থান যথাক্রমে চতুর্থ, ষষ্ঠ ও সপ্তম। ভিয়েনার পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহর। এ ছাড়া দেশটির জেনেভা ও বাসেল শহরের অবস্থান যথাক্রমে অষ্টম ও দশম। ডেনমার্কের কোপেনহেগেনের অবস্থান নবম। শীর্ষ দশে ইউরোপের বাইরে তিনটি শহর রয়েছে। এগুলো হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড (তৃতীয়), কানাডার ভ্যানকুভার (পঞ্চম) ও অস্ট্রেলিয়ার সিডনি (যৌথভাবে দশম)। নিকৃষ্টের দিক দিয়ে ১০ শহর হচ্ছে যথাক্রমে- বাগদাদ (ইরাক), বেনগুই (আফ্রিকা), সানা (ইয়েমেন), পোর্ট অব প্রিন্স (হাইতি), খার্তুম (সুদান), জামেনা (চাদ), দামেস্ক (সিরিয়া), ব্রাজেভিল (কঙ্গো), কিনশাসা (কঙ্গো) ও কোনাকরি (গিনি)। ইউরোপের এত শহর সবসময়ই যে বসবাসের জন্য খুব ভালোর তালিকায় থাকবে এমনটা অবশ্য মনে করছে না মার্সার। কেননা আর্থিক মন্দার কারণে দ্রুত বদলাতে পারে পরিস্থিতি, এমনটাই মনে করছে সংস্থাটি।

মার্সারের বসবাস উপযোগী শহরের তালিকা প্রস্তুতির পাশাপাশি, নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিবেচনায়ও একটি তালিকা তৈরি করেছে। এ তালিকায় সবার ওপরে অবস্থান বেলজিয়ামের। পাশে ইউরোপের একটি ছোট্ট দেশ লুক্সেমবার্গের। সামাজিক ও আর্থিক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসনসহ পরিবেশ বিবেচনা করে বসবাসযোগ্য শহরের তালিকা তৈরি করেছে মার্সার। এ ছাড়া এসব শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মীদের কী পরিমাণ মজুরি দেয়া হয় সে বিষয়গুলোও এতে বিবেচনা করা হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn