বেঁচে থাাকার করুন আর্তনাদ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুলের
রাজন চন্দ–
হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যু যন্ত্রণায় প্রতিনিয়ত কাতরাচ্ছেন সিরাজুল হক শাহ (৩৫)। পাষাণ ব্যাধি তাকে মৃত্যুর অতল গহব্বরের দিকে দুহাত বাড়িয়ে ডাকলেও অসহায় দরিদ্র সিরাজুলের রয়েছে বেঁচে থাকার করুন আর্তনাদ। সংসারে এক অসহায় বাবা হিসেবে সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করা সিরাজুলের তবুও রয়েছে বেঁচে থাকার আহাজারী। আর এই আহাজারী কারো পাষাণ হৃদয়ে তিল পরিমাণ ছেঁদ না ধরলেও প্রতিনিয়ত দিশেহারা করে তুলছে স্ত্রী, তিন কন্যাসহ পরিবারের লোকজনের।বর্তমানে তিনি ঢাকা আজগর আলী হাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সদরের ভাটি তাহিরপুর গ্রামের মৃত আলী আহমদের ছেলে তিনি। ১৯৯৬ সালে তাহিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগ যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়ে সিরাজ উপজেলা শ্রমিক লীগের আহবায়ক পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে উপজেলা মৎস্যজীবী লীগ সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বেড়ে ওঠা রাজনীতির মাঠের এই টকবগে যুবক ছাত্রলীগ-যুবলীগ থেকে শুরু করে তৃণমূল রাজনীতিতে তার অনন্য ভুমিকা থাকায় সকলের কাছেই এক নিবেদিত রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত তিনি। তবে সৎ, আদর্শবান একনিষ্ট এই তরুন রাজনীতিকের জীবনপ্রদীপ নিভু নিভুকালে বেঁচে থাকার করুন আর্তনাদ শোনার যেন সময় নেই কারো।তথ্য নিয়ে জানা যায়, ২০০৩ সালের প্রথম দিকে হঠাৎ করে পশ্রাবের সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন তিনি। অবস্থা বেগতিক হলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন দীর্ঘদিন। তাতেও সুস্থ না হওয়ায় পরবর্তীতে ২০০৬ সালে সিলেটের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে পুরুষাঙ্গে অপারেশন করা হয়।
দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে আবারও সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করলে ২০১৩ সালে অপর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে একই অঙ্গে অপারেশন করা হয়। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিলেট নগলীর পপুলার মেডিকেল সার্ভিস এর কিডনি, মূত্রথলি, ইউরোলজি সার্জন ডা. জুলকিফল হক বলেছেন বর্তমানে তার দুই কিডনি বিকল হওয়ার পথে। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন না করলে কিডনি দুটি চিরতরে বিকল হয়ে যাবে। আবার অপারেশন করলে হয়তো বেঁচে যাবেন তিনি। এই জটিল অপারেশনে খরচ হবে তিন লাখ টাকা। জীবন-সংসারের চাকা ঘুরাতে একমাত্র উপর্জনক্ষম এই ব্যক্তির যা ছিল সবই খুইয়েছেন একটু প্রশান্তিতে থাকার জন্য। কিন্তু বিধি বাম! গত কয়েক মাস ধরে পা না চলায় পরিবার নিয়ে বড় কষ্টে দিনাতিপাত করছেন এই অসহায় মানুষটি। আর চিকিৎসা তো আকাশ কুসুম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার দুপুরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথোপকথনের সময় হাউ মাউ করে কেঁদে ফেলেন অসহায় সিরাজুলের বড় ভাই শামসুল হুদা। তিনি বলেন,তার চিকিৎসা করতে ৩ লক্ষ টাকার প্রয়োজন কিন্তু চিকিৎসার এই ব্যায়ভার বহন করার মত তাদের সমর্থ নেই। অসুস্থ সিরাজ বলেন- “যে দেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মতো মমতাময়ী ‘মা’ আছেন সে দেশে বিনা চিকিৎসায় সন্তানের মৃত্যু হতে পারে না”। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বাঁচান, আমি বাঁচতে চাই। সিরাজকে সহায়তা পাঠানোর ঠিকানা- (সিরাজ-০১৭৫১০৫৫৭৬৬)। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ও ভাটি তাহিরপুর গ্রামের ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির বলেন, সিরাজ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। চিকিৎসা কাজে সহায়-সম্বল খুইয়ে বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। সিরাজকে বাঁচাতে সরকারসহ দেশ-বিদেশের হৃদয়বান ব্যক্তিরা এগিয়ে আসবেন এমন প্রত্যাশা তাদের।