না ফেরার দেশে চলে গেছেন ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস।  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এই খবর নিশ্চিত করেছেন। শনিবার সকাল ছয়টার দিকে ব্রাজিলের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে মিজারুল কায়েস ব্রাজিলের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রসচিবের দায়িত্ব পালন করেন মিজারুল কায়েস।  এছাড়া তিনি যুক্তরাজ্য, মালদ্বীপের হাইকমিশনার ও রাশিয়াতে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন।

সোমবার দেশে পৌঁছাতে পারে মিজারুলের মরদেহ

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও সদ্যপ্রয়াত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মিজারুল কায়েসের মরদেহ সোমবার নাগাদ দেশে পৌঁছাতে পারে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের এই রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ৬টায় ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মিজারুল কায়েসের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতেই পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। মিজারুল কায়েসের দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে রয়েছেন ব্রাজিলেই। আর ছোট মেয়ে লন্ডনে রয়েছেন। সেখানে লেখাপড়া করেন তিনি। ব্রাজিলে বাংলাদেশ কমিউনিটিতে কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার মরদেহ হিমাগারে রাখা হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় এসেছিলেন মিজারুল কায়েস। ৭ ফেব্রুয়ারি ব্রাজিলের সাও পাওলোর উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি। সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর ১৩ ফেব্রুয়ারি শ্বাসকষ্টজনিত কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন মিজারুল কায়েস। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন মিজারুল কায়েস। তিনি যুক্তরাজ্যে ও মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এবং রাশিয়ায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পেশাদার কূটনীতিক মিজারুল কায়েস জেনেভা, টোকিও এবং সিঙ্গাপুরেও বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে কাজ করেছিলেন। এ ছাড়া তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সার্ক, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, অর্থনৈতিক বিষয়াবলি, আনক্লস ও বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্বও পালন করেন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা মিজারুল কায়েস স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেই তার মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মিজারুলের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক

 ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার আলাদা আলাদা বার্তায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ শোক প্রকাশ করেন। শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, মিজারুল কায়েসের মৃত্যুতে দেশ একজন পেশাদার কূটনীতিককে হারালো। মিজারুলের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতিও গভীর সমবেদনা জানান তিনি। এছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক শোক জানিয়েছেন। ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় ভোর ৬ টা) মিজারুল কায়েস শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৯৮২ ব্যাচের বিসিএস কর্মকর্তা মিজারুল কায়েস ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রসচিবের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৪ সালে ব্রাজিলে যাওয়ার আগে দুই বছর যুক্তরাজ্যে হাই কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তখন তার কার্যক্রম বেশ বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn