ব্রিটেনের এই তরুণ আবিষ্কার করলেন র্যানসমওয়্যার মোকাবিলার চাবিকাঠি
ইফ্রাকোম্বে: ব্রিটেনের তরুণ সাইবার বিশেষজ্ঞ মার্কাস হাচিনস। তিনিই আবিষ্কার করেছেন সাইবার দুনিয়ার সাম্প্রতিক আতঙ্ক র্যানসমওয়্যারকে আটকে ফেলার চাবিকাঠি। এরমধ্যেই ওই তরুণ কার্যত সারা দুনিয়ার হিরো হয়ে গেছেন। ‘ওয়ানা ক্রাই’কে কার্যত কাঁদিয়ে ছেড়েছেন এই তরুণ। তবে নিজের এই কৃতিত্বে তেমন গর্বিত নন মার্কাস। তার দাবি, ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করা তার কাজ, তিনি সেটাই করেছেন। মার্কাস লস অ্যাঞ্জেলসের সংস্থা ক্রিপটোস লজিকে কর্মরত। সোমবার তিনি জানান, সারা দুনিয়ার হাজার খানেক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এখন এই ভাইরাস মোকাবিলায় দিন-রাত কাজ করে চলেছেন। প্রায় দেড়শো দেশের কম্পিউটার এখন এই ভাইরাসে প্রভাবিত।
বাইশ বছরের এই তরুণ দক্ষিণ ইংল্যান্ডের বাসিন্দা। তিনি ‘কিল সুইচ’ আবিষ্কার করেছেন, যা কার্যত এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার দ্রুত গতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। শুক্রবার কিল সুইচ আবিষ্কার করেন মার্কাস। তারপর তিন দিন তিনি কাটান কীভাবে এই ভাইরাসকে ওই কিল সুইচ ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাঁর চেষ্টায়। কার্যত এই ভাইরাস হামলায় সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ব্রিটেনের স্বাস্থ্য পরিষেবা। ‘ওয়ানা ক্রাই’ মূলত সেই সমস্ত কম্পিউটারগুলোকেই নিশানা করেছে, যেখানে মাইক্রোসফট উইনডোজের পুরনো ভার্সান রয়েছে। যেখানে হ্যাকাররা হামলা চালাচ্ছে, সেখানে বার্তা আসছে কম্পিউটার আপনার, তথ্য আপনার, কিন্তু আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না। মুক্তিপণ বাবদ বিটকয়েনের মাধ্যমে ৩০০ থেকে ৬০০ ডলার পর্যন্ত দাবি করা হচ্ছে। টাকা দেওয়ার জন্যে দেওয়া হচ্ছে ছ ঘণ্টা, দিতে না পারলে, তথ্য আর পাওয়া যাবে না, এমন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। আপাতত মার্কাসের আবিষ্কারে এই ভাইরাস হামলার হাত থেকে বেঁচে গেছে গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বের বহু দেশ। কিন্তু কীভাবে এই ইউরেকা ঘটিয়ে ফেললনে মার্কাস?
জানা গিয়েছে তিনি ওই ভাইরাসের ম্যালিসিয়াস কোড নিয়ে পরীক্ষা করছিলেন। এমন সময় তাঁর নজরে আসে ভাইরাসটির একটি অস্বীকৃত বা আন রেজিস্টার্ড ওয়েব অ্যাড্রেসের সঙ্গে যোগ রয়েছে। এরপরই মার্কাস সেই ডোমেনকে রেজিস্টার করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এই কাজ তিনি প্রায় প্রতিদিনই করছেন, বিভিন্ন সাইবার থ্রেটকে ট্র্যাক করার জন্যে। প্রসঙ্গত, ওই ডোমেন রেজিস্টার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মার্কাস দেখেন র্যা নসমওয়্যার ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। আর এই আবিষ্কারের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কিল সুইচ’। ব্রিটিশ তরুণ জানিয়েছেন, প্রথমে ‘পেইশেন্ট জিরো’ নামের এক ভাইরাস এসে হামলা চালায় তাঁদের সংস্থার সিস্টেমে। এখন বিশেষজ্ঞরা সেই ভাইরাসকে খতিয়ে দেখে এই হামলার পিছনে কারা রয়েছে, সেটা খোঁজার চেষ্টা করছে। মার্কাসের দাবি, ভাইরাসটি খুব খারাপভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, বিভিন্ন জিনিষের সমন্বয় তৈরি হয়েছে। আপাতত মার্কাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে মার্কিন গোয়েন্দাসংস্থা এফবিআই এবং ব্রিটেনের জাতীয় সাইবার সিকিউরিটির আধিকারিকরা।