ভাষা আন্দোলনে অর্থমন্ত্রীর পরিবার
মো. এনামুল কবীর:: রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত পরিবারের অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনিসহ তাঁর বাবা-মা সরাসরি ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সেই কঠোর রক্ষণশীল সময়েও অর্থমন্ত্রী মুহিতের মা মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সদা তৎপর ছিলেন। তৎপর ছিলেন তার পিতাও। অর্থমন্ত্রীর মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ঐ সময়ে মুসলীম লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ছিলেন সিলেট জেলা মহিলা মুসলীম লীগের সহ সভানেত্রী। পাকিস্তানের সূচনালগ্নে, ১৯৪৮ সালের ১১ জানুয়ারি যোগাযোগ ও যানবাহন মন্ত্রী আব্দুর রব নিসতার সিলেট সফরে এসেছিলেন। তখন মহিলা মুসলীম লীগ সিলেট জেলা শাখার সভানেত্রী বেগম জোবেদা খানম (রহীম) চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল মহিলা মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেছিলেন। তারা নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জোরালো দাবি জানিয়েছিলেন। ঐ মহিলাদের নেতৃত্বে জোবেদা খানমের সাথে শাহার বানুও ছিলেন। এরপর তারা মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিনের কাছে একই দাবিতে একটি স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন। বাংলার পক্ষে তাদের এ তৎপরতা সারা পাকিস্তানে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
অর্থমন্ত্রীর পিতা আবু আহমদ আব্দুল হাফিজও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ৪৮ এর ৮ মার্চ গোবিন্দচরণ পার্কে উর্দ্দুওয়ালাদের হামলায় তমুদ্দীন মজলীস কর্মী, তরুণ ছাত্র নেতা মকসুদ আহমদ মারাত্মক আহত হলে এর প্রতিবাদে সিলেটের ১৮ জন বিশিষ্ট নাগারিক যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে প্রধান ভূমিকায় ছিলেন, সেকালের প্রবীন এ রাজনীতিবিদ ও অ্যাডভোকেট। এছাড়া ভাষা আন্দোলনের চুড়ান্ত পর্যায়ে, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় হামলার প্রতিবাদে ৫ মার্চ গোবিন্দচরণ পার্কে সর্বশেষ যে সমাবেশ হয়েছিল, সেই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেছিলেন আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ। সভায় অন্যতম প্রধানবক্তা ছিলেন আজকের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। আরও আগে সেই ৪৭/৪৮ সালে সিলেটের আন্দোলন সংগ্রামের সাথেও তিনি জড়িত ছিলেন। চুড়ান্ত পর্যায়ে ঢাকা ও সিলেটের আন্দোলন কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয় ছিলেন বলে বিভিন্ন বইপত্রে উল্লেখ পাওয়া যায়।