মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, পরীমণি সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপু ও তাদের মাদক সরবরাহকারী কবীরের বিরুদ্ধেও অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।সিআইডি বলছে, এই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মাদক মামলায় যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তার সবই প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাকেসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মামলা হওয়ার দুই মাসের মাথায় আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।গত ৪ আগস্ট বনানীর বাসায় অভিযান চালিয়ে পরীমণিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সেখান থেকে তার কথিত মামা আশরাফুল ইসলাম ওরফে দীপুকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বাসা থেকে বিদেশি মদের খালি বোতল, বোতলভর্তি মদ, ইয়াবা, আইস ও এলএসডি জব্দ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক মামলা করে র্যাব। একই দিন র্যাব পরীমণির ঘনিষ্ঠজন ও প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার ও মাদক জব্দ করে। তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়।
এর আগে ১ আগস্ট মোহাম্মদপুর থেকে মডেল মরিয়ম আক্তার মৌ এবং বারিধারা থেকে ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে পুলিশ। এসব মামলার তদন্তের দায়িত্ব পড়ে সিআইডির ওপর।মাদক মামলায় পরীমণিকে তিন দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। রিমান্ড শুনানির জন্য পরীমণিকে আদালতে হাজির করার সময় আদালত চত্বরে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি নির্দোষ। আমার বাসায় মদ ছিল না। মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।’ ২৬ দিন পর গত ১ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত এই চিত্রনায়িকা।
বনানী থানায় পরীমণির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী ছিলেন র্যাব-১-এর কর্মকর্তা মজিবর রহমান।এজাহারে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে, বনানীর একটি বাসায় পরীমণি সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুর মাধ্যমে বিদেশি মদ সংগ্রহ করে বাসায় সংরক্ষণে রেখেছেন। তার শয়নকক্ষের একটি কাঠের ফ্রেমের ভেতর থেকে ১৯ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। প্রতি বোতল মদের দাম ৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া চার গ্রাম আইস ও একটি এলএসডি ব্লট উদ্ধার করা হয়। একই মামলায় কবির নামে আরেকজনকেও আসামি করা হয়।
এদিকে পরীমণিকে গ্রেপ্তারের পরদিন উত্তরায় র্যাব সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, ওই অভিনেত্রীর বাসায় মিনি বার রয়েছে। মদের লাইসেন্স থাকলেও মেয়াদ পেরিয়েছে অনেক আগেই। পরীমণি ও নজরুল রাজসহ এই চক্র ডিজে পার্টির আয়োজনের মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করতেন। পরীমণির বাসায় নিয়মিত পার্টি হতো। প্রথমে মামলাটির তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১২২ বার