মান্নন-ডন এক হবার প্রক্রিয়া চলছে
জগন্নাথপুরঃ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম,এ মান্নান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদ তনয় আজিজুস সামাদ ডন দলের বৃহত্তর স্বার্থে অতীতের সকল ভেদাভেদ ভুলে এক ফ্লাটফর্মে আসছেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। জেলা আওয়ামীলীগে ঐক্যর সুবাতাস বইতে শুরু হতে না হতেই তার ঢেউ এসে গেছে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগে। যে কোন সময় জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ডন ও মান্নান সমর্থিত বিবাদমান দু’পক্ষ ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার আওয়ামী লীগের সবকটি আসন ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের কোন্দল নিরসন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি (স্থানীয় সংসদ সদস্য অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী) প্রবীণ রাজনীতিবিদ সিদ্দিক আহমদ এর সাথে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ তনয় আজিজুস সামাদ ডন। তাদের দীর্ঘ এ বৈঠককে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। কেউ কেউ মনে করছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের বিভেদ ঘুচিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এ বৈঠক।
আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী এম এ মান্নানের নৌকা প্রতীকের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সামাদ আজাদ তনয় আজিজুস সামাদ ডন ফুটবল প্রতীকে নির্বাচন করে পরাজিত হলেও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি আবারও মাঠে সরব হয়ে উঠেছেন। ইতিমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন। তার অনুসারীদের আশা এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন। অপরদিকে আজিজুস সামাদ ডন অনুসারী কয়েকজন নেতা জানান, ডনকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জের যে কোন আসনে দলীয় প্রতীক দেয়া হবে এমন আশ্বাস কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দিয়েছেন। তাই তিনি জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ছাড়াও সুনামগঞ্জ-১, ২ ও ৪ আসনে তৎপর রয়েছেন।
আজিজুস সামাদ ডনের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র জানান, তারা আশাবাদী, আজিজুস সামাদ ডন সুনামগঞ্জ -৩ আসনেই নৌকা পাবেন। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি জেলাজুড়ে মাঠে রয়েছেন। জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগে ঐক্য পক্রিয়া শুরু হয়েছে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শুনেছি চাচা-সিদ্দিক আহমদ ও ভাতিজা আজিজুস সামাদ ডনের মধ্যে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। আমরা আশাবাদী এ বৈঠক আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলকে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে ভূমিকা রাখবে।’ জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আকমল হোসেন বলেন, ‘আজিজুস সামাদ ডন আমার সাথেও যোগাযোগ করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার কথা বলেছেন।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামীলীগ বড় রাজনৈতিক দল। এখানে মান অভিমান চাওয়া না পাওয়ার হিসেবে নিকেশ থাকতে পারে কিন্তু ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই। জননেত্রেী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দিয়ে যাকে মাঠে পাঠাবেন আমরা তার পক্ষেই কাজ করব।’
এ বিষয়ে আজিজুস সামাদ ডনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। আর স্থানীয় সংসদ সদস্য অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান রাষ্ট্রীয়কাজে দেশের বাহিরে থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আজিজুস সামাদ ডন নির্বাচন করে মানুষের সহানুভূতি পেয়েছিলেন। এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। নৌকার বাইরে গিয়ে আওয়ামীলীগ ঘরানার কারও নির্বাচন করার সুযোগ নেই। এ উপলব্ধি থেকে সবার উচিৎ নৌকার পক্ষে কাজ করার। আমি আশাবাদি এবার দলীয় প্রতীক যেই পাননা কেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে তার বিজয় নিশ্চিত করবেন। অপরদিকে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক ইতিমধ্যে নিজের অবস্থান পরিস্কার করে বলেছেন, ‘নৌকা পেলে নির্বাচন করবেন। না পেলে যে নৌকা পাবেন তাঁর পক্ষে কাজ করবেন।