যুদ্ধজয়ের গল্পঃ একটি স্বপ্নের সফল রূপায়নঃ সুজাত মনসুর
সুজাত মনসুর-
স্বপ্নটি দীর্ঘদিন অন্তরে লালিত ছিলো। বঙ্গবন্ধু তনয়াদের আন্দোলন-সংগ্রাম-সফলতার কাহিনী নিয়ে নতুন প্রজন্মকে সংশ্লিষ্ট করে একটা কিছু করা যায় কি না। তবে অবশ্যই গতানুগতিকার বাইরে গিয়ে, চর্বিত-চর্বনের মত একই কথা বারবার পুরনো স্টাইলে (বক্তৃতা) না বলে ভিন্ন আঙ্গিকে বলা। যা সহজেই মানুষের মনের গভীরে আঘাত করে। আমি মনেকরি সঙ্গীত হলো সবচেয়ে উত্তম মাধ্যম, যা অত্যন্ত সহজেই মানুষের মনের গভীরে আঘাত করতে পারে। আরেকটি বিষয় মাথায় ছিলো, নতুন প্রজন্মকে যদি আমাদের কাজে-কর্মে সংশ্লিষ্ট না করা যায় এবং তাদের নিকট যদি দেশমাতৃকাকে ইতিবাচক(পজিটিভ) ভাবে তুলে না ধরা যায় তাহলে, আমরা যখন থাকবো না তখন আমাদের সন্তানরা (প্রবাসী) আর শেকড়ের সাথে, আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে তাদের অন্তরের টান অনুভব করবেনা, এমনকি এখনো করে না। কিভাবে নতুন প্রজন্মকে, বিশেষ বিলেত প্রবাসী নতুন প্রজন্মকেও আমাদের স্বপ্নের ভাগিদার করা যায়, তাদের মতো করে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সাহিত্য, উন্নয়ন-অগ্রগতি জানতে পারে সে চিন্তাটাও ছিল। সেই স্বপ্নেরই সফল রূপায়ন হলো, গত ২৪শে সেপ্টেম্বর লন্ডনে যুদ্ধজয়ের গল্প শীর্ষক একটি সফল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। যেখানে মুলতঃ গানে গানে আর শিশু-কিশোর রচনা, বক্তৃতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু তনয়াদের আন্দোলন-সংগ্রাম-সফলতা, বাংলাদেশের চলমান অগ্রগতি ও সম্ভাবনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু। একথায় বলা যায় সমগ্র বাংলাদেশকে। যুদ্ধজয়ের গল্পের গর্বিত ভাগিদার হতে ছুটে এসেছিলেন লন্ডনসহ বিলেতের বিভিন্ন শহর থেকে ছেলেমেয়েদের নিয়ে অভিভাবকরা। এসেছিলেন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিক। অনুষ্ঠানটি ছিলো সত্যিকার অর্থেই ব্যতিক্রমী। ছিলো চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা। শিশু-কিশোরদের বক্তৃতা আর এক ঝাঁক গানের পাখির পরিবেশনায় সম্পুর্ণ নতুন গানের পরিবেশনা। যে গানগুলো লিখেছেন বিলেতের গীতিকাররা। সুরও করেছেন শিল্পী-গীতিকার মিলে সম্মিলিতভাবে। যাকে একটি সফল টিম ওয়ার্ক বলে আখ্যায়িত করা যেতে পারে। ছিলো এক ঝাঁক প্রতিশ্রুতিশীল মুজিব সৈনিকদের অক্লান্ত পরিশ্রম।
অনুষ্ঠানে যুদ্ধজয়ের গল্প নামে একটি সংকলনও প্রকাশিত হয়। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া প্রতিটি শিশু-কিশোরকে মেডেল ও বিশেষ পুরষ্কার প্রদান করা হয়। চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় যারা বিজয়ী হয়েছে তারা হলো, সুস্মিতা ধর, অন্তুজিত চক্রবর্তী, ইব্রাহিম তালুকদার, মেহা রুজিনা খান, অভিজিত চক্রবর্তী, মাহিন, মাহি আলম, সাহার সরদার ও হেনা আল বাসিত। রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলো মোহনা হোসেন মিলি, মাহি মোহাম্মদ, নাবিদ নেহাল ইসলাম, সুপ্রত মনসুর, ফাইজা খান, অভিজিত চক্রবর্তী, নাফিসা ইসলাম, মাহি আলম, শফি মোহাম্মদ ও উদিতা মন্ডল গত তিনটি মাস ধরে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গুরুত্ব অবদান রেখেছেন এবং গানে গানে মানুষের মনে এক নতুন ধরনের অনুভুতির সঞ্চালন করতে পেরেছেন তারা হলেন, নবগঠিত সোনারতরী শিল্পী গোষ্ঠির আহ্বায়ক শর্মিলা দাশ, যুগ্ম আহ্বায়ক রুমি হক, সদস্য সচিব অবিনাশ রায়, সদস্য সিলভি ইকবাল, সীমা চৌধুরী, কৃষ্ণা সাহা, ফুয়াদ মনি, উর্মি ধর, মোহাম্মদ উজ্জল। গান লিখেছেন মুজিবুল হক মনি, সৈয়দ দুলাল, আহমেদ হোসেন বাবলু, একেএম আব্দুল্লাহ, এম মোসাইদ খান, জুয়েল রাজ, আফিয়া বেগম শিরি ও সৈয়দ হিলাল সাইফ। পুরো অনুষ্ঠানটি যিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত দক্ষতার শেষে সমন্বয় করেছেন তিনি হলেন, বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরাম, গ্রেটার লন্ডন কমিটির সভাপতি বাতিরুল হক সরদার। সার্বিক উপস্থাপনায় আমাদের সাথে ছিলেন হেনা বেগম ও নাজরাতুন নাঈম ইসলাম। রচনা প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করেন আনসার আহমেদ উল্লাহ। যন্ত্রে ছিলেন জুন, সাগর ও রিয়াজ। শিশু-কিশোরদের মধ্যে যারা বক্তব্য রাখেন, তারা হলেন, মাহি আলম, নাবিদ নেহাল ইসলাম, মোহনা হোসেন মিলি, অভিজিত চক্রবর্তী ও শফি মোহাম্মদ। এই পর্বের সুচনা বক্তব্য রাখেন তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি সেজুতি মনসুর। এদের সবার বক্তব্য বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে। অতিথিদের মধ্যে যারা বক্তব্য রাখেন তাদের মধ্যে সাবেক এমপি সৈয়দা জেবুন্নেসা হক, জননেতা সুলতান মাহমুদ শরীফ, সিতাব চৌধুরী, সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, খালেদা মুশতাক কোরেশি, আব্দুল আহাদ চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরাম, ইউকের সভাপতি মোহাম্মদ মনির হোসেইন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও গ্রেটার সাসেক্স যুবলীগের সভাপতি ফয়সাল আম্বিয়া টিটু হলেন আমাদের মুল স্পন্সর। এটিএন বাংলা ইউকে ছিল মিডিয়া পার্টনার। যুদ্ধজয়ের গল্পে শরিক হতে ছুটে এসেছিলেন বার্মিংহাম থেকে কাবুল ভাই, লুৎফুর রহমান শিরণ চৌধুরী, শরীফ, শেবুল চৌধুরী, ফিরোজ রব্বানী, রাশিয়া খাতুন, জুবের আলম, মোহাম্মদ আলী, আশেক আলী। ওল্ডহাম থেকে আফিয়া বেগম শিরি, ব্রাইটন থেকে কয়েস আহমেদ, মোহাম্মদ আতিক। এনফিল্ড থেকে নাজমুল হোসেন চৌধুরী, সুহেল আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী খোকন, মিজানুর রহমান প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য মহিলা আওয়ামী লীগের হুসনা মতিন, আঞ্জুমান আরা অঞ্জু, নাজমা হোসেন, সাবেক মেয়র মোহাম্মদ শহীদ আলী, কবি ময়নুর রহমান বাবুল ও মোহাম্মদ ইকবাল, যুক্তরাজ্য যুবলীগের ফখরুল ইসলাম মধু ও সেলিম আহমেদ খান, শ্রমিক লীগ নেতা সামসুল ইসলাম চৌধুরী।
বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরাম, ইউকের সবাই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন বিশেষ করে মতিয়ার চৌধুরী, হেমায়েত উদ্দিন খান হিমু, তওহীদ ফিতরাত হোসেন, একেএম আব্দুল্লাহ, শাহ মোস্তাফিজুর রহমান বেলাল, জামাল খান, মীরা বড়ুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানে শিল্পী-গীতিকার-সুরকার-যন্ত্রশিল্পীদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। অত্যন্ত প্রতিশ্রুতি ও নির্ভরশীল দম্পতি সম্মাননায় ভুষিত হন বাতিরুল হক সরদার এবং রুমি হক। যারা অর্থ দিয়ে ও বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।