কাজী ইহসান বিন দিদার-

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে এদেশের যুব আন্দোলনের পথিকৃৎ শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি ১৯৭২ সালের ১১ই নভেম্বর প্রতিষ্ঠা করেন আওয়ামী যুবলীগ। ৭৫’র ১৫ আগস্ট ইতিহাসের জঘন্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ থেকে শুরু করে অগণতান্ত্রীক শ্বৈরাচার সরকারের পতন, সবকিছুতেই অনন্য অবদান আছে যুবলীগের। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবন দেন যুবলীগ নেতা বগুড়ার খসরু, চট্টগ্রামের মৌলভী সৈয়দ। তাছাড়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত নূর হোসেনও ছিলেন যুবলীগ কর্মী। ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু আলাপ করেন সংগঠনের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে। জানিয়েছেন নানা ধরনের তথ্য এবং সম্ভাব্য সিদ্ধান্তের কথাও।

যুবলীগের আগামী কমিটিতে কি ধরনের নেতা-কর্মী ঠাই পাবেন এবং কোন বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন : ‘এখন অনেকেই আছেন যারা পয়সা ছিটিয়ে সুনাম কেনেন। কিন্তু আসল কাজের বেলায় নাই। তাই তাদের নিজেদের পাল্টাতে হবে। না হলে পরিবর্তন আসবে। সৎ এবং ত্যাগীরাই এক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন। কারণ রাজনীতি হচ্ছে কঠিন ত্যাগ তিতিক্ষার ব্যাপার। যুবলীগের প্রতিটি নেতা কর্মীকে হতে হবে মানবিক, মেধা ও মনন মনস্ক, যুক্তিবাদী। জনগণের ক্ষমতায়ন, যুবলীগকে এই আদর্শকে লালন ও ধারণ করতে হবে। জনগণের অধিকার, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাসহ জনগণকে সমস্ত ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আনতে কাজ করতে হবে।’

যুবলীগকে কেমন দেখতে চান এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন : ‘যুবলীগ তারুণ্যের দীপ্ত জয়গানের সংগঠন। মানুষের যে চারটি স্তর অতিক্রম করে তার মধ্যে যৌবনকালই হল শ্রেষ্ঠ কাল। যৌবনকালই হচ্ছে নিজেকে গড়ে তোলার শ্রেষ্ঠ সময়। যুবলীগকে আমি অগ্রসরমান, পথিকৃৎ এবং যুব সমাজের আলোকবর্তিকা হিসেবে দেখতে চাই। কোন দুর্নীতিগ্রস্থ, বিশ্বাসঘাতকের মিলনমেলা হিসেবে নয়।’   যুবলীগ চেয়ারম্যান আরো বলেন : ‘বিরোধী দলে থাকলে রাজপথে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন করা যায় আর সরকারি দলে থাকলে?  কোন আন্দোলনকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যেমন সংগঠন অপরিহার্য ঠিক তেমনি আন্দোলন। তা না হলে সংগঠন বিনোদনমূলক ক্লাবে পরিণত হয়। কাজেই সংগঠন-আন্দোলন, আন্দোলন-সংগঠন অর্থাৎ কর্মসূচী। এটাই হচ্ছে অগ্রসর হওয়ার একমাত্র পথ। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হলে কর্মসূচী লাগবে। আর আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের যে কোন ধরনের কর্মসূচী বাস্তবায়নে যুবলীগ নেতৃত্ব দেবে সামনে থেকে। এজন্য প্রস্তুতিও চলছে। যে কোন ধরনের অপশক্তিকে কঠোরভাবে দমন করা হবে। সেই লক্ষেই আমি সব সময় পেশাদারী এবং উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করার পক্ষপাতি। কেননা সামনে নির্বাচন। আর স্বাধীনতাবিরোধীরা এখন থেকেই নাশকতা করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।’

ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু বলেন : ‘বাংলাদেশের স্বাধিকার,স্বাধীনতা আন্দোলন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ সকল লড়াই-সংগ্রামে যুবলীগ নেতাকর্মীদের অকুণ্ঠ ত্যাগ, তিতিক্ষা ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। যুবলীগের এই ইতিহাস, ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে তথা আওয়ামী লীগের ঝাণ্ডাকে সামনের দিকে বয়ে নিয়ে যেতে নেতা-কর্মীদেরকে সম্মিলিত ভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে। কোনভাবেই বিশ্বাসঘাতকতা, দূর্নীতি, দলের প্রতি অনিহা দেখানো যাবে না। নিজেদের সংগঠনের ভবিষ্যত নিজেদেরই উজ্জ্বল করতে হবে।’  এই দুই নেতার মতে, যুবলীগের প্রয়োজন সৎ, আস্থাশীল এবং ত্যাগীজনদের। আর এক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করবে তৃণমূল।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn