দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক জেলা দায়রা জজ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপ্পু। তিনিই হতে যাচ্ছেন দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল প্রার্থী হিসেবে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নাম দাখিল করে। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপ্পুর আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপ্পুর মনোনয়ন জমাদানের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে দুইটি মনোনয়নপত্র আজ সকাল ১১টায় জমা হয়েছে। দুটি মনোনয়নই একই ব্যক্তির এবং একজনের নামে সর্বোচ্চ তিনটি মনোনয়নপত্র জমা হতে পারে।আগামীকাল সোমবার মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে বলে জানান তিনি।
মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপ্পুর মনোনয়নের প্রস্তাবক হচ্ছেন ওবায়দুল কাদের এমপি ও সমর্থনকারী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ এমপি। এরআগে সকালে ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের নেতারা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যান। তারপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা রওনা হন নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে। ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে এই দলে ছিলেন চিফ হুইপ লিটন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ফারুক খান, বিপ্লব বড়ুয়া, সেলিম মাহমুদ।পাবনার সন্তান মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর জন্ম ১৯৪৯ সালে। ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন।বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর উপর হামলা হয়। যাতে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে কমিশন গঠন করেন, যার চেয়ারম্যান ছিলেন মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপ্পু। ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের মৃত্যুতে খালি থাকা প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান পদে তাকে মনোনীত করা হয়।
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন আজ রোববার। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র ‘নির্বাচনী কর্তা’র (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) কার্যালয়ে দাখিল করতে হবে। সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত ব্যক্তিই হবেন আগামী ৫ বছরের জন্য বঙ্গভবনের নতুন বাসিন্দা। আগামী ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তবে সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে শপথ না নেওয়া পর্যন্ত বর্তমান রাষ্ট্রপতি নিজ পদে বহাল থাকবেন।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১১১ বার