রোহিঙ্গাদের নিয়ে সৌদি আরব কী করছে, জানেন?
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় নিয়েছে আমাদের সরকার। তাদের খাদ্য দেয় আমার সরকার। তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে আমাদের সরকার। তাদের জন্য কাটা পড়ছে পাহাড়ের পর পাহাড়, উজাড় হচ্ছে জঙ্গল, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের পরিবেশ। যেখানে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষকে নিয়মিত ভরণপোষণ এর জন্য আমাদের সরকারের নাভিশ্বাস উঠে যায়, যেখানে এখনো আমরা সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত সহযোগিতাই করতে পানি নাই সেখানে আমরাই এই আমাদের সরকারই রোহিঙ্গাদের জন্য যা কিছু করা যায় তা করার চেষ্টা করছে। মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার কাছে ধর্না দিচ্ছে তবুও রোহিঙ্গা ইস্যুতে চোখের পানি ফেলে তুরস্কের ফাস্টলেডি হিরো হয়ে যান, হিরো হয়ে যান এরদোগান। অথচ এই এরদোগান নিজের দেশেই লাখ লাখ কুর্দিদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে। সিরিয়ার কুর্দিদের উপর বিমান হামলা করে হত্যা করছে হাজারে হাজারে। এই তুরস্ক ১৫ লাখ আর্মেনিয়দের হত্যা করেছে। কখনো ভেবেছেন কত ভয়াবহ এই তুরস্ক? মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চেয়েও কোটি গুণ নির্যাতন ও নিপীড়ন করে মানুষ হত্যা করেছে এই তুরস্কের সেনারা।
অন্যদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বেশীরভাগই মুসলিম অথচ মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব দানকারী দেশ সৌদি কি করছে আপনি জানেন? ইয়েমেনে সৌদি বিমানের প্রতিনিয়ত গোলাবর্ষণে হাজারে হাজারে মানুষ মারা যাচ্ছে। এদের কাছে ধর্ম আসলে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের জন্য। নিজের স্বার্থের জন্য ধর্মকে কাজে লাগায়। প্রয়োজন পড়লে কাবাও ধ্বংস করতে এক মুহূর্তও ভাববে না এই সৌদি। অথচ ধর্মের নামে পুরো পৃথিবীতে জঙ্গিদের সহায়তা করছে এই সৌদিরা। ইসলামের নামে মানুষ হত্যাকে ইসলাম সংস্কৃতির অংশ বানিয়েছে তারা।
আর বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায় যারা রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেবল ধর্মীয় লেবাস লাগাতে ব্যস্ত! রোহিঙ্গা ইস্যু একটি জাতিগত সমস্যা। মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকারের লড়াইকে আমি স্বাগত জানাই। কিন্তু যারা আরাকানে বাস করা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের এই লড়াইকে ধর্মীয় ইস্যুতে পরিণত করে কেবল ধর্ম রক্ষার কিংবা মুসলিম রক্ষার লড়াই হিসেবে চালাতে চাচ্ছেন তারাই একদিন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চেয়েও ভয়াবহ হয়ে উঠবে এ কথা আমি হলফ করে বলতে পারি।মানুষ মানুষের জন্য। ধর্ম সেখানে কোন বিষয়ই হতে পারে না। একজন নিপীড়িত নাস্তিক, ইহুদি, হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রিস্টান কিংবা অন্য যে কোন ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন তাদের একই দৃষ্টিতে দেখার চোখটা না থাকলে আপনি আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বস্তু ছাড়া আর কিছুই না। চোখ থেকে ধর্মের পট্টিটা খুলে দেখুন আমরা মানুষেরা সবই এক। যেদিন সকল মানুষ ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে নিজের প্রাণের মত ভালোবাসতে পারবে, সাম্যের সমাজ গড়তে পারবে সেদিন এই পৃথিবীতে সত্যিকারের শান্তি নেমে আসবে।
- সাকিল আহমদ অরণ্য: অনলাইন এক্টিভিস্ট।