ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার থেকে মিয়ানমার সফর শুরু করার ঠিক ২৪ ঘন্টা আগে ভারতের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে কঠোর মনোভাবে অবিচল থাকার কথা জানিয়েছে ভারত। রাখাইন প্রদেশের হাজার হাজার রোহিঙ্গা অত্যাচারের শিকার হয়ে যখন প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে, তখন ভারতের পক্ষ থেকে মানবিক হওয়ার জন্য মানবাধিকার সংগঠনগুলির আবেদন উপেক্ষা করে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা মুসলিমরা বেআইনি অনুপ্রবেশকারী। ওদের ভারত থেকে বের করেই দেয়া হবে। ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী  কিরেন রিজিজু মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সরকারের কঠোর মনোভাবে জানিয়ে বলেছেন, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলিকে বলে দিতে চাই, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের আওতায় নথিভুক্ত হোক বা না-ই হোক, রোহিঙ্গারা ভারতের চোখে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, আর আইনে যেহেতু ওরা বৈধ অভিবাসনকারী নয়, ওদের ভারত থেকে বের করে দেওয়া হবে। কিছুদিন আগেই জানানো হয়েছিল ভারতে বসবাসকারী ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এর পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারত সরকারের পদক্ষেপ অমানবিক আখ্যা দিয়ে সরব হয়েছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি। ভারত সরকারকে রোহিঙ্গাদের বের করে দেওয়া থেকে বিরত রাখার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দিয়েছেন দুজন রোহিঙ্গাও। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বল ঠেলে দিয়েছে সরকারের কোটে। বলেছে, এ বিষয়ে সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যাবতীয় নিন্দা, সমালোচনা উপেক্ষা করে  পাল্টা রিজিজু বলেন, ভারতই গোটা দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, গ্রহণ করেছে। অতএব শরণার্থীদের প্রতি কী করা উচিত, তা নিয়ে কেউ যেন ভারতকে উপদেশ না দেয় । কেন্দ্রীয় সরকার রোহিঙ্গাদের বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু করতে সব রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী। অত্যাচার থেকে বাঁচতে  মিয়ানমার ছেড়ে ভারতে এসেছে অসংখ্য রোহিঙ্গা। সরকারি মতে, প্রায় ১৪ হাজার জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের নথিভুক্ত, তবে বেআইনি ভাবে এ দেশে বসবাস করছে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা। এদিকে অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশানালের পক্ষ থেকে মোদীকে এক আবেদনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির আবেদন জানানো হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn