লোকমানের ৪১ কোটি টাকা অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাংকে
ক্যাসিনো ব্যবসা করে বিসিবির পরিচালক ও মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ৪১ কোটি টাকা আয় করেছেন বলে র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। এ টাকা অস্ট্রেলিয়ার দু’টি ব্যাংকে গচ্ছিত রেখেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে বসানো ক্যাসিনো থেকে প্রতিদিন ৭০ হাজার টাকা নিতেন ক্লাবটির ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। এ ক্যাসিনোটি পরিচালনা করতেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কাউন্সিলর এ কে এম মোমিনুল হক ওরফে সাঈদ কমিশনার।
বৃহস্পতিবার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং অবৈধভাবে ৬ বোতল বিদেশি মদ রাখার অভিযোগে বুধবার রাতে মনিপুরী পাড়ার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে। এরপর রাতভর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, মোহামেডান ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন লোকমান। তার এ টাকা অস্ট্রেলিয়ায় কমনওয়েলথ ও এএনজেড ব্যাংকে রাখা আছে। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার ওই দুই ব্যাংকে তার ৪১ কোটি টাকা রয়েছে। ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় পড়ার সুবাদে তিনি মাঝে মাঝে সেখানে যান। ক্যাসিনোবিরোধী চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে ক্লাব ও বারগুলোতে অভিযান চালাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে লোকমানের বাসায় অভিযান চালানো হয়।
জানা গেছে, লোকমান একসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য হওয়ায় তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ পদটিও দখল করে রেখেছেন। সরকারের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় তিনি নানা অপকর্ম করে বেড়াতেন বলে অভিযোগ আছে। র্যাব সদস্যদের ধারণা, ক্যাসিনো থেকে আয় করা অর্থ লোকমান নিয়মিত বিদেশে পাচার করতেন। লোকমানের পাশাপাশি মোহামেডান ক্লাব পরিচালনা কমিটির আর কেউ জড়িত কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।